Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রি-পেইড গ্রাহকরা বিপাকে

বিদ্যুতের স্মার্ট মিটারে ইমার্জেন্সি সেবা : এজেন্টরা ডিপিডিসির নির্দেশ মানছে না

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫১ পিএম

রাজধানীর সবুজবাগ থানার আহম্মদবাগ এলাকায় (বৌদ্ধমন্দিরের কাছে) কিছু বাসায় প্রিপেইড মিটার লাগানো হয়েছে। ভাড়া বাসায় থাকেন মুক্তিযোদ্ধা এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী। শুক্রবার হঠাৎ রাতে বাসার বিদ্যুৎ চলে যায়। তাকিয়ে দেখেন পাশের বাসায় বিদ্যুৎ রয়েছে কিন্তু তার বাসায় নেই। বুঝতে পারেন প্রিপেইড মিটারের রিচার্জ শেষ হয়ে গেছে। পড়ে যান বিড়ম্বনায়। সবকিছু বন্ধ, কোথায় প্রিপেইড মিটার রিচার্জ করবেন। দীর্ঘ ভোগান্তির পর বিকেলে তিনি দূর এলাকায় মিটার রিচার্জ করতে সক্ষম হন। করোনায় সবকিছু বন্ধে মাওলা চৌধুরীর মতো রাজধানীর হাজার হাজার প্রিপেইড মিটার গ্রাহক ভোগান্তিতে পড়ছেন। করোনা দুর্যোগকালে ডিপিডিসির প্রিপেইড মিটার রিচার্জে এজেন্টদের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তা মানা হচ্ছে না। এতে করে ভোগান্তি বেড়েছে রাজধানীর গ্রাহকদের। করোনার ঝুঁকি উপেক্ষা করেই তাদেরকে বাসাবাড়ির বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল রাখতে দৌড়াতে হচ্ছে মিটার রিচার্জ করতে। সবখানে রিচার্জ করাও যাচ্ছে না।

সরকার করোনা প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার পাশাপাশি ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। এজন্য সরকার বিদ্যুৎ বিল এবং গ্যাস বিলে বিলম্ব মাশুল মওকুফ করে দিয়েছে। প্রিপেইড মিটারে যারা গ্যাস ব্যবহার করছেন, তাদেরও জরুরি আপদকালীন সময়ের জন্য ২০০ টাকা ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স বাড়িয়ে দুই হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ গ্রাহক দুই হাজার টাকা পর্যন্ত ব্যবহারের পর তার লাইন বন্ধ করে দেওয়া হবে। এতে একজন সাধারণ গ্রাহককে অন্তত তিন মাস আর বিল নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। কিন্তু বাধ সেধেছে বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার। স্মার্ট প্রিপেইড মিটারের ইমার্জেন্সি আওয়ার ১৫ দিন পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে ঢাকা ইলেক্ট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি ডেসকো। তবে ডিপিডিসির সাধারণ প্রিপেইড মিটারের ইমার্জেন্সি আওয়ার তিন দিনের বেশি বৃদ্ধি করা যায় না। ফলে গ্রাহককে বাইরে যেতেই হচ্ছে বিল পরিশোধ করতে।
গত ২৬ মার্চ থেকে চলছে ছুটি। এ সময় সাধারণ মানুষ যাতে বিল নিয়ে ব্যাংকে জড়ো না হয়, সে জন্য বিলম্ব মাশুল মওকুফ করে দিয়েছে বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি বিভাগ। সরকারের জারি করা আদেশে বলা হয়েছে, জুন পর্যন্ত বিদ্যুৎ আর গ্যাসের বিল বিলম্ব মাশুল ছাড়াই দেওয়া যাবে। কারণ, হিসেবে বলা হয়েছে— বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের বিল দিতে গিয়ে ব্যাংকগুলোতে অনেক লোক জড়ো হয়। আর এতে করোনা আক্রান্তের ঝুঁকি বাড়ে।
সরকারের নির্দেশনার সঙ্গে ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিও (ডিপিডিসি) একটি আদেশ জারি করে। ওই আদেশে বলা হয়, গ্রাহক ফোন করলে বাড়ি গিয়ে তাদের এজেন্টরা প্রিপেইড বিদ্যুৎ মিটার কার্ড রিচার্জ করে দিয়ে আসবেন। এজন্য ডিপিডিসি এজেন্টদের একটি তালিকা ফোন নাম্বারসহ তাদের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করেছে।
এ অবস্থায় গত সপ্তাহের শেষে মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডের বাসিন্দা জামাল উদ্দিনের প্রিপেইড মিটারের কার্ডের টাকা ফুরিয়ে আসায়, তিনি ডিপিডিসির এজেন্টদের ফোন দেন। ডিপিডিসির ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া তালিকা ধরে ফোন দেন এজেন্টদের। কিন্তু জবাবে এজেন্টরা জানান তারা বাসায় গিয়ে রিচার্জ করেন না। এরপর জামাল সাহেব বাসা থেকে বাধ্য হয়ে বের হন। তার বাসার কাছাকাছি শেরশাহ সুরি রোড, সলিমুল্লাহ রোড, রাজিয়া সুলতানা রোডের তিনটি এজেন্টের দোকানে যান। এরমধ্যে রাজিয়া সুলতানা ও সলিমুল্লাহ রোডের এজেন্টের দোকান দুপুর দুইটার আগেই বন্ধ হয়ে যায়। তিনি শেরশাহ সুরি রোডে এজেন্টের দোকানে গিয়ে জানতে পারেন যে, তাদের নেটওয়ার্ক নেই। এরপর তিনি বাসায় চলে আসেন এবং পরদিন আবারও শেরশাহ সুরি রোডে গিয়ে কার্ড রিচার্জ করান।
এর আগে এজেন্টরা বাসায় আসতে রাজি না হওয়ায় জামাল সাহেব ডিপিডিসির কল সেন্টার ১৬১১৬ নম্বরে কল দেন। সেখান থেকে বলা ‘বাসায় গিয়ে রিচার্জ না করতে চাইলে কিছু করার নাই। আপনি দোকানে গিয়ে রিচার্জ করিয়ে নেন।’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডিপিডিসির এমন আদেশ জারি করার আগে এজেন্টরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে রিচার্জ করতে সক্ষম কিনা, তা বিবেচনা করা উচিত ছিল। একটি দোকানে একজনই এই কাজটি করে থাকেন। শুধু ডিপিডিসির রিচার্জই নয়, একইসঙ্গে ওই এজেন্টকে তার ব্যবসার অন্যান্য দিকও সামাল দিতে হয়। সেই এজেন্টকে যদি গ্রাহকের বাড়ি গিয়ে রিচার্জের কাজ করতে হয়, তাহলে তার দোকানে থাকবে কে? এমন প্রশ্ন তুলেছেন এজেন্টরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক এজেন্ট বলেছেন তারা আদৌ এ কাজটি করতে পারবেন কিনা, তা বিবেচনা না করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে এক্ষেত্রে এখন তাদের করার কিছু নেই।
জানতে চাইলে ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, আমরা এজেন্টদের বলে দিয়েছি, প্রয়োজনে তারা বাসায় যাবেন। এক্ষেত্রে কেউ যদি যেতে না চান, তাহলে গ্রাহকরা আমাদের কল সেন্টারে যোগাযোগ করতে পারেন। আমরা দরকার হলে কল সেন্টার থেকে খবর পেয়ে লোক পাঠাবো।



 

Show all comments
  • Anisul Haque ২০ এপ্রিল, ২০২০, ১:৫১ এএম says : 0
    What is help line number ?
    Total Reply(0) Reply
  • Sohal Mahamud ২০ এপ্রিল, ২০২০, ১:৫২ এএম says : 0
    যত ঝামেলা আছে তার মধ্যে একটি প্রিপেইড কার্ড সিস্টেম,দুনিয়া কত কিছু বাকি পরে আছে সেগুলো খেয়াল নেই খালি জনগণের কিভাবে ভুগানতি করতে সেদিই পরে থাকি
    Total Reply(0) Reply
  • Sohal Mahamud ২০ এপ্রিল, ২০২০, ১:৫২ এএম says : 0
    যত ঝামেলা আছে তার মধ্যে একটি প্রিপেইড কার্ড সিস্টেম,দুনিয়া কত কিছু বাকি পরে আছে সেগুলো খেয়াল নেই খালি জনগণের কিভাবে ভুগানতি করতে সেদিই পরে থাকি
    Total Reply(0) Reply
  • RJ Sajal ২০ এপ্রিল, ২০২০, ১:৫২ এএম says : 0
    এই হলো ডিজিটালের অবস্থা মানে হলো পাবলিক মাইরা, ডিজিটাল বানাইতে হইবো
    Total Reply(0) Reply
  • Md Tohidul Islam ২০ এপ্রিল, ২০২০, ১:৫২ এএম says : 0
    অতিরিক্ত ডিজিটালের ফল !,,,,, আর যত ভোগান্তি জনগনের!
    Total Reply(0) Reply
  • Md Saifullah ২০ এপ্রিল, ২০২০, ১:৫২ এএম says : 0
    এইসব মিটারে দ্রুত টাকা শেষ হয়ে যায়
    Total Reply(0) Reply
  • Md Saifullah ২০ এপ্রিল, ২০২০, ১:৫২ এএম says : 0
    এইসব মিটারে দ্রুত টাকা শেষ হয়ে যায়
    Total Reply(0) Reply
  • Hasan ২০ এপ্রিল, ২০২০, ৬:৩২ এএম says : 0
    এই মিটারে টাকা কাটে বেশি ফালতু
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ২০ এপ্রিল, ২০২০, ১২:১৮ পিএম says : 0
    O'Allah every step they are torturing us. Take revenge against them.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রি-পেইড


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ