বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পঞ্চগড় জেলা সদরের ধাক্কামারা ইউনিয়নের আমতলা রাজারপাট ডাঙ্গা আশ্রায়নের প্রকল্পের পাশে করতোয়া নদীর ধারে চা বাগান সংলগ্ন এলাকা থেকে গত ১০ এপ্রিল উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাতনামা যুবকের লাশের পরিচয় মিলেছে। তাঁর নাম মো. মিলন (২৪)। তিনি দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার চকপ্রাণকৃষ্ণ এলাকার নাইমুল হাসানের ছেলে। পুলিশ জানিয়েছে, মাদক ব্যবসার দ্বন্দ্বে তাঁকে মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে পালিয়েছিলেন তাঁরই এক সঙ্গী।
পুলিশ জানায়, ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া যুবক সুমন (২০) ও আবু হাসানকে (১৮) গত শনিবার সন্ধ্যায় পঞ্চগড়ের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মিনহাজুর রহমানের আদালতে হাজির করলে সুমন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরে তাদের জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। তাদের বাড়ি দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার ভাদুরিয়া এলাকায়। পঞ্চগড় জেলা পুলিশের গোয়েন্দা তৎপরতার কারণে মাত্র ৮ দিনের মাথায় ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে।
পঞ্চগড় সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জামাল হোসেন বলেন, হত্যাকান্ডের দিন দুপুরের পর স্থানীয় লোকজন নালার মধ্যে যুবকের রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ লাশটি ময়নাতদন্তে পাঠায় এবং ওই দিন রাতেই বাদী হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। ঘটনাস্থল থেকে একটি কাপড়ের ব্যাগে বাদামি রঙের এক জোড়া কেডস এবং লাশের পাশ থেকে একটি লোহার রড উদ্ধার করে পুলিশ।
পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, সুমন আদালতে হত্যাকা- ঘটানোর বর্ণনা দিয়েছে। নিহত মিলন ও গ্রেপ্তার হওয়া সুমনের মধ্যে মাদক ব্যবসার টাকা পয়সা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। ১০ এপ্রিল সুমনসহ কয়েকজন মিলনকে ফেনসিডিল কেনার জন্য পঞ্চগড়ে নিয়ে আসেন। এ সময় মিলনের কাছে ৮০ হাজার টাকা ছিল। পঞ্চগড়ে এসে সুমন কৌশলে মিলনকে সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের আমতলা এলাকায় রাজারপাটডাঙ্গা আশ্রয়নের করতোয়া নদী সংলগ্ন একটি চা বাগানের পাশের নালায় নিয়ে যান। দুপুরে সেখানে কাটা কাটাকাটির একপর্যায়ে ওই নির্জন এলাকায় সুমন তার ব্যাগে থাকা লোহার রড দিয়ে মিলনের মাথায় একাধিক আঘাত করলে মিলন অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর সুমন মিলনের কাছে থাকা ৮০ হাজার টাকা এবং হাতের ঘড়ি ও মুঠোফোন নিয়ে পালিয়ে যান।
উল্লেখ্য, লাশ উদ্ধারের পর কোনো ওয়ারিশ না থাকায় লাশের ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করে পুলিশ এবং বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে এক দিন পর পঞ্চগড় কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়। হত্যাকান্ডের চার দিন পর নিহত ওই যুবকের নাম মিলন এবং তার বাড়ি দিনাজপুরের কাহারোলে বলে দাবি করে তার স্বজনেরা সদর থানা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে তার স্বজনেরা এসে ওই যুবকের ছবি ও কাপড় দেখে লাশটি মিলনের বলে শনাক্ত করেন। এরপর পুলিশ স্বজনদের কাছ থেকে মিলনের মুঠোফোন নম্বর নিয়ে কললিস্ট দেখে নিশ্চিত হয়ে তাঁর ব্যবসায়িক সঙ্গী সুমন (২০) ও আবু হাসানকে (১৮) শুক্রবার দিনাজপুরের বীরগঞ্জ এলাকায় বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। শনিবার সন্ধায় তাঁদের আদালতে হাজির করলে মিলনকে রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করার কথা স্বীকার করেন সুমন। মাদক ব্যবসার দ্বন্দ্বে তাঁকে মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে পালিয়েছিলেন তারই এক সঙ্গী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।