মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আহা করোনা! কতটা নির্মমতা ছড়িয়ে দিলে মানব সমাজে! রক্তের বন্ধনও যে ঢিলে হয়ে গেছে। কোথাও সন্তানের নির্মমতার শিকার হচ্ছেন মা-বাবা আবার কোথাও নির্মমতার শিকার সন্তানই। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার শ্যামপুকুর থানা এলাকা এমনই এক নির্মমতার সাক্ষী হলো।
শহর জুড়ে লকডাউন। রাস্তায় লোক প্রায় নেই বললেই চলে। এরই মধ্যে শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় ভারতের কলকাতার শ্যামপুকুর থানায় এক বৃদ্ধ। পুলিশ জানায়, নিজেকে বংশীধর মল্লিক পরিচয় দিয়ে ওই বৃদ্ধ জানান, ‘ছেলেকে খুন করে এসেছেন! আত্মসমর্পণ করতে চান।’ কথা শুনে তার বাড়িতে গিয়ে উদ্ধার করা হয় ছেলে শীর্ষেন্দুর (৪৫) লাশ। খবর আনন্দবাজারের।
পুলিশ জানিয়েছে, ১-ই, শোভাবাজার লেনের বাসিন্দা ৭৮ বছরের ওই বৃদ্ধ জানান, প্রতিদিন বিকেলে ছেলে শীর্ষেন্দুকে নিয়ে বাইরে বেড়াতে বের হন তিনি। ছেলে শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং মৃগী রোগী। শনিবার তিনি বেরোনোর সময়ে ছেলেকে মাস্ক পরতে বলেন। কিন্তু ছেলে কিছুতেই তা পরতে রাজি হননি। বারবার বলার পরও রাজি না হওয়ায় তিনি ছেলের গলায় কাপড় পেঁচিয়ে খুন করেছেন।
বংশীধর মল্লিকের কথা শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ দেখে, ঘরের মাটিতে পড়ে আছে শীর্ষেন্দুর লাশ। আর বিছানায় শুয়ে আছেন এক বৃদ্ধা। তিনি শীর্ষেন্দুর মা। সেরিব্রাল অ্যাটাকের পর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে ১৮ বছর ধরে বিছানায় শয্যাশায়ী তিনি। মায়ের সামনেই ছেলেকে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
কিন্তু বংশীধরবাবু এভাবে হঠাৎ খুন করবেন কেন? পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বংশীধর মল্লিক জানিয়েছেন, গত ১৮ বছর ধরে অসুস্থ স্ত্রী এবং ছেলেকে নিয়ে থাকতে থাকতে তিনি বিরক্ত হয়ে পড়েছিলেন। আর সেই তিক্ততা থেকেই এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। তবে তদন্তকারীরা তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছেন।
তদন্তকারী এক কর্মকর্তা জানান, বেসরকারি সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী বংশীধর মল্লিকের কোনও মানসিক অবসাদের ইতিহাস পাওয়া যায়নি। তবে মনে করা হচ্ছে, অসুস্থ স্ত্রী, ছেলেকে নিয়ে দীর্ঘদিন থাকার অভিজ্ঞতার সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। ছেলে মাস্ক না পরে বাইরে বেরোলে যদি সংক্রমণ হয়, সেই চিন্তাও তাকে গ্রাস করেছিল বলে পুলিশের ধারণা।
এ বিষয়ে মনোরোগ চিকিৎসক জয়রঞ্জন রাম বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থদের সঙ্গে থাকতে থাকতে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় পড়েন বয়স্করা। ভাবেন, তার অবর্তমানে অসুস্থ ছেলেকে কে দেখবে? আর সম্প্রতি লকডাউনের জেরে বাড়িতে থাকতে থাকতেও হয়তো বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন ওই বৃদ্ধ। সব মিলিয়ে হয়তো এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।