গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
রাজধানীর ইমপালস হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন গাইনি বিভাগের একজন নারী চিকিৎসক। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দায়িত্ব না নেওয়ার অভিযোগ করেছেন ওই নারী চিকিৎসক। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রথমে ওই চিকিৎসকের আক্রান্তের বিষয়টি অস্বীকার করলেও নতুন করে আরও ৪ জন চিকিৎসক ও দুইজন স্টাফের করোনা পরীক্ষা টেস্টে পজিটিভ আশায় বিষয়টি ভুল-বোঝাবুঝি বলে দাবি করছেন।
বর্তমানে সরকারি একটি হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ওই চিকিৎসক তেজগাঁওয়ের ইমপালস হাসপাতালের গাইনি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার। তার স্বামী একজন সরকারি কর্মকর্তা।
হাসপাতাল থেকে ফোনে ওই চিকিৎসক মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) বলেন, আমাদের গাইনি বিভাগে একজন রোগীর কোভিড-১৯ এর লক্ষণ দেখতে পাওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছিলাম, রোগীও চাচ্ছিল এই হাসপাতাল থেকে চলে যেতে। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ছুটি দেয়নি। এই অবস্থায় আমরা কাজ করেছি।
গত ৮ এপ্রিল সর্বশেষ ডিউটি করার পর ১০ তারিখে তার হাসপাতালে আসার কথা থাকলেও এরমধ্যে তিনি করোনার উপসর্গ জ্বর, কাশিতে ভুগতে শুরু করেন। তিনি বলেন, এর মধ্যে আমাদের বিভাগের ১২ জন ডাক্তার, পাঁচজন নার্সসহ অনেকে নিজ উদ্যোগে কোভিড-১৯ টেস্ট করিয়েছি, সেখানেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের কোনো সহযোগিতা করেনি। ১২ তারিখে আমার পরীক্ষার প্রতিবেদনে কোভিড-১৯ পজিটিভ আসে।
এদিকে মঙ্গলবার চিকিৎসাসেবা দেওয়া আরো ৪ জন চিকিৎসক ও ২ জন স্টাফের পরীক্ষার প্রতিবেদনে কোভিড-১৯ পজিটিভ এসেছে।
করোনায় আক্রান্ত ওই নারী চিকিৎসক বলেন, নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর শুনে ইমপালস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ফেইসবুকে মিথ্যা তথ্য প্রচার করে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমি হাসপাতাল থেকে আক্রান্ত হয়েছি, কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার কোনো খবরতো নেয়নি। এমনকি প্রশাসন থেকে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বলা হয়েছে, আমার স্বামীর কাছ থেকে আক্রান্ত হয়েছি। প্রকৃতপক্ষে আমি আক্রান্ত হওয়ার পর আমারস্বামীরও টেস্ট করানো হয়েছে, উনি আক্রান্ত নন। একই সঙ্গে আমার কোনো দায়িত্ব তারা নিতে রাজি নয় বলেই আমার সঙ্গে তারা এই ধরনের আচরণ করেছে।
তার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইমপালস হাসপাতালের চিফ অপারেটিং অফিসার ডা. খাদিজা জুমা বলেন, প্রথমে ভেবেছিলাম যেহেতু আমাদের কোনো করোনা আক্রান্ত রোগী আসেনি তাহলে চিকিৎসক কিভাবে আক্রান্ত হবে। তবে পরবর্তীতে আরো চিকিৎসক ও স্টাফ আক্রান্ত হওয়ায়় বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে। আগের বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি ছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি। এখন যখন অন্যান্য চিকিৎসকদের করোনা টেস্ট পজিটিভ হয়েছে তখন বিষয়টি নিশ্চিত কোন রোগীর মাধ্যমে ছড়িয়েছে। খাদিজা জুমা বলেন, তিনিসহ আরও প্রায় ৫০ জনকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে হাসপাতালের প্রশাসন থেকে গাইনি বিভাগের ওই নারী চিকিৎসকের সম্পর্কে ‘মিথ্যা তথ্য’ ছড়ানোর অভিযোগ এনে হাসপাতালের পক্ষ থেকে স্টেটাস দেওয়া হয়। এতে বলা হয় হাসপাতালে একজনও করোনাভাইরাসের রোগী আসেনি। তাই কীভাবে তিনি হাসপাতাল থেকে আক্রান্ত হয়েছেন।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এই বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে করোনাভাইরাস আক্রান্ত ওই চিকিৎসক বলেন, আমরা রোগীদের সেবা নিয়ে ব্যস্ত থাকি। অনেক রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। কে করোনায় আক্রান্ত তা শুরুতে বলা যায়না। কোনো কিছু হলে ডাক্তারদের দোষ দেয় সবাই। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসকদের সঙ্গে কী ধরনের আচরণ করে সেটা কেউ বলে না। আজকে আমি নিজে আক্রান্ত হয়ে তা অনেকটা বুঝতে পারছি।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ইমপালস হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রফেসর ডা. জহির আল আমিনকে কয়েকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এর আগে ঢাকার আরেক বেসরকারি হাসপাতাল আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের আইসিইউতে একজন নভেল করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী মারা যান। ওই হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসকদের সুরক্ষা উপকরণ দেওয়ার দাবি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে তিনজন চিকিৎসককে বরখাস্ত করা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজে থেকে চিকিৎসা না দিয়ে ভোর রাতে রোগীকে বের করে দেয়া হয়। পরে বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।