বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দেশব্যাপী করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার নৃশংস ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। লকডাউন ভেঙে এমন বর্বর ঘটনা ঘটানোয় গভীর উদ্বেগ ও বিস্ময় প্রকাশ করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দেশের সচেতন নাগরিক সমাজ।
গত রেবাবার উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের থানাকান্দি গ্রামে এই নৃশংসতম ঘটনা ঘটে। বিবাদমান দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চলাকালে একজনের পা কেটে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে তা নিয়ে প্রতিপক্ষের লোকেরা ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানে মিছিল ও উল্লাস করে। দুই পক্ষের সংঘর্ষে প্রায় ৫০ জন আহত হয়।
উম্মত্ত জনতার কাটা পা নিয়ে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানে মিছিল ও উল্লাস করার ভিডিও ফেইসবুকে ভাইরাল হতেই তা ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রতিবাদের জন্ম দেয়। নেট দুনিয়ায় হট টপিক্সে পরিণত হয় ঘটনাটি।
ফেইসবুকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দা পরিমল বনিক লিখেছেন, ‘‘এই লজ্জা রাখি কোথায়, আমরা বি বাড়ীয়া মানুষদের আজ এই ধরনের কুলাঙগারদের জন্য সারা দেশের মানুষের কাছে অনেক অনেক ছোট হয়ে যাচ্ছি, আমি মনে করি প্রতিটা দলের রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে এই ধরনের ঘটনা আমাদের জেলায় ঘটবে না, আমাদের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি দয়া করে করে আপনারা আমাদের সংস্কৃতির পূনভূমি এই জেলা কে এভাবে কলংকিত হতে দিবেন না, মনে রাখা উচিত যে এই জেলা এতই সমৃদ্ধ শালী যে বলে শেষ করা যাবে না, কিন্তু আজ এই ধরনের মারামারি কাটাকাটি জন্য এই জেলার সম্মান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, এসব ঘটনায় কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।’’
আমরান উল হক লিখেছেন, ‘‘এরা কতো পিছিয়ে আছে এরা নিজেরাও জানেনা। এখনও এমন সংঘর্ষ হয় ভাবতেই অবাক লাগে। যেখানে পুরো পৃথিবী ইয়া নফসি করতেছে। দ্বিক্কার জানাই ঐ গ্রামের শিক্ষিত পিটপাট ভদ্র সমাজকে। ওরা শিক্ষিত না জংলি জানোয়ার।’’
আলম খান লিখেছেন, ‘‘মানুষগুলো কেমন হিংস্র জানোয়ার হয়ে গেছে। এর পেছনে মূল কারণ এদের সমাজ, পরিবার। ভাবা যায় কতটা অমানুষ হলে এমন কাজ করতে পারে। এদের কারণেই আল্লাহ আমাদের বিভিন্ন প্রকার শাস্তি দিচ্ছেন।’’
মাহবুবুল আলম লিখেছেন, ‘‘কতো নৃশংস, কতটা ভয়ানক ওরা, তাই ভাবছি, আবার শ্লোগানও দিলো! সবাই ভাবলো হয়তো, এসব কোন ব্যাপারই না!মানুষ খোদার পৃথিবীতে বেঁচে থাকার অধিকার হারিয়েছে হয়তো!’’
ইমারত মোহাম্মাদ লিখেছেন, ‘‘সত্যি কথা বলতে কি ওই এলাকার মানুষের জন্য বিদেশেও আমাদের নাম খারাপ। ওই এলাকার মানুষের জন্য সারা দেশের প্রবাসী মানুষ গুলো অন্য দেশের মানুষের কাছে ঘৃণার পাত্র এখন। ওদের কারনেই আমরা প্রবাসীরা প্রবাসে ভাল নাই। কি বলবেন ওদের?’’
মোদরিশ আলি লিখেছেন, ‘‘কিছু মূর্খ মানুষরূপী জানোয়ার বাংলাদেশে বসবাস করে এদের কঠিন শাস্তি চাই প্রতিনিয়ত মানুষকে এভাবে হত্যা করে কষ্ট দিয়ে থাকে তারা কখনো মানুষ না জানোয়ার হিংস্র জঙ্গলের নিকৃষ্ট জানোয়ারের চেয়েও নিকৃষ্ট। একটা সভ্য সমাজে বসবাস করে মানুষের সাথে বসবাস করে নিকৃষ্ট জানোয়ারের চেয়েও জঘন্য কাজ করে এই অমানুষগুলো। এদের কঠিন থেকে কঠিন শাস্তি চাই যারা এসব কাজ করে এসব কাজের সাথে জড়িত সবার শাস্তি চাই।’’
এস এম মামুনুর রশিদ লিখেছেন, ‘‘এদেরকে চিরুনি অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তি দিন, ইদানীং বি বাড়ীয়ার কিছু লোকজন লাগামহীন হয়ে যাচ্ছে। এদের ছেড়ে দেওয়া মোটেও ঠিক হবে না।’’
উল্লেখ্য, নবীনগর থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের সঙ্গে থানাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা কাউসার মোল্লার বিরোধ দীর্ঘদিনের। এর জেরে রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। থেমে থেমে চলা এ সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষ চলাকালে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মোবারক মিয়া (৪৫) নামে এক ব্যক্তির পা কেটে নিয়ে ‘জয়বাংলা’ শ্লোগানে আনন্দ মিছিল করে প্রতিপক্ষের লোকজন। ওই মিছিল থেকে পায়ের বদলে মাথা কেটে নেয়ার শ্লোগানও দেওয়া হয়। এছাড়া সংঘর্ষ চলাকালে বেশ কয়েকটি ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।