Inqilab Logo

সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সচ্চরিত্রে শান্তি ও মুক্তি

প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মাওলানা দৌলত আলী খান

পৃথিবীর মানবগোষ্ঠী একটি কারণেই মর্যাদার উচ্চ শিখরে আরোহণ করে, তা হচ্ছে আখলাকে হাসানা বা সচ্চরিত্র। এর কারণেই মানুষ সর্বত্র স্মরণীয় ও বরণীয় হয়। কালগর্ভে কখনো বিলীন হয় না তাদের ইতিহাস। ইসলামের ধারক ও বাহক মহানবী হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কিরাম তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তাই তো মানবজীবনে এর গুরুত্ব ও উপকারিতা অপরিসীম। সাধারণত ইসলামের পরিভাষায়, মানুষের পারস্পরিক অধিকার ও কর্তব্য সংশ্লিষ্ট আচার-আচরণ ও কার্যাবলীকে সুষ্ঠু, সুন্দর ও যথার্থভাবে সমতার ভিত্তিতে প্রতিপালন ও সম্পাদন করাকে আখলাকে হাসানাহ বলা হয়।
আখলাকে হাসানার বদৌলতে ব্যক্তি নিজে সমাজে সমাদর লাভ করে এবং তার সৎ স্বভাবের দ্বারা মানবসমাজ নানাভাবে উপকৃত হয়। ফলে সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়। ইসলাম যেহেতু জাতির সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য আবির্ভূত হয়েছে তাই ইসলাম ব্যক্তিকে সৎ স্বভাবের অধিকারী করে সমাজ জীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা সুপ্রতিষ্ঠিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করে। ইসলাম সচ্চরিত্রের যে ব্যাপক শিক্ষা দান করেছে, তা বিশ্বের যে কোন জাতি ও সমাজের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ। কোরআন মাজিদে আল্লাহতায়ালা এ মর্মে এরশাদ করেন, নিশ্চয়ই তিনি ছিলেন অনুপম চরিত্রের অধিকারী। (সূরা নূন-৪)
আর রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষকে আখলাকে হাসানা-সচ্চরিত্রের বাস্তব প্রশিক্ষণ দানের জন্য এ পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে হযরত আনাস (রা.) বলেন, হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবচেয়ে উত্তম চরিত্র মাধুরীর লোক ছিলেন। (বুখারি, মুসলিম)
হযরত নাওয়াস বিন সামআন (রা.) বলেন, আমি নবী করীম সল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালো কাজ এবং মন্দ কাজ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এরশাদ করেন, সচ্চরিত্রের নাম নেকী-ভালো আর যে কাজটি তোমার নিকট অপছন্দ এবং অন্য কোন লোকে জানা তোমার কাম্যও নয় তা পাপ। (মুসলিম)
আখলাকে হাসানার গুরুত্ব সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের নিমিত্তে বিনয় প্রদর্শন করবে আল্লাহতায়ালা তাকে মর্যাদার উচ্চাসনে সমাসীন করবেন।
অন্যত্রে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কিয়ামত দিবসে তোমাদের মধ্যে আমার নিকট সবচেয়ে বেশি প্রিয় এবং নিকটতম ওই ব্যক্তি হবে যার চরিত্র ভালো এবং ওই ব্যক্তি আমার নিকট বেশি ক্রোধ এবং দূরের হবে যে অনর্থক প্রলাপ বকে, মানুষের সঙ্গে ঠাট্টা ও অহংকার করে। (তিরমিযি)
আরো বলেন, পরিপূর্ণ মুমিন ওই ব্যক্তি যার স্বভাব-চরিত্র সুন্দর। তোমাদের মাঝে সেই উত্তম, যে তার পরিবারের সাথে ভালো আচরণ করে। (তিরমিযি)
হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী করীম সল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, মুমিন সদাচরণের বিনিময়ে রোজাদার ও তাহাজ্জুদ গুজারের ছাওয়াব পাবে। (আবু দাউদ)
ইসলামের দৃষ্টিতে আখলাকে হাসানা বলতে তাকওয়া, যিকর, শোকর, সবর, ইনসাফ, ইহসান, সহানুভূতি, পরোপকার ইত্যাদি বিষয় সমূহকে বুঝায়। মানবতার ইতিহাসে স্মরণীয় ও বরণীয় হওয়ার লক্ষ্যে সর্বপোরি দুনিয়ার শান্তি ও আখেরাতের মুক্তি লাভের উদ্দেশ্যে আখলাকে হাসানা তথা সৎচরিত্র ও সুন্দর স্বভাব অর্জন করা একান্ত প্রয়োজন।



 

Show all comments
  • Rasel khan ২০ নভেম্বর, ২০২০, ৭:৫২ পিএম says : 0
    আখলাকে হাসানা বা সৎচরিএ
    Total Reply(0) Reply
  • Rasel khan ২০ নভেম্বর, ২০২০, ৭:৫৩ পিএম says : 0
    আখলাকে হাসানা বা সৎচরিএ
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সচ্চরিত্রে শান্তি ও মুক্তি
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ