Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিশ্বে মৃত লাখ ছাড়াল

১০০ চিকিৎসকের মৃত্যু ডব্লিউএইচও’কে অগ্রাহ্য করেই লকডাউন তুলছে ইতালি শনাক্ত : ১৬,৬৬,৮৯১ মৃত : ১,০০,৪৫০ সুস্থ : ৩,৬৯,৯৫৬

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫১ পিএম

বিশ্বের সব পরাশক্তির সব প্রচেষ্টাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে করোনাভাইরাস তার থাবা বিস্তার করেই চলেছে। এ ভাইরাসের মারণ ছোবলে গতকাল আরো ৫ সহস্রাধিক প্রাণহানির ফলে মৃতের সংখ্যা গতকাল লাখ ছাড়িয়ে গেল। শুক্রবার রাত সোয়া ১১টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৪৫০ জন এবং আরো প্রায় ৭০ হাজার নতুন শনাক্তের ফলে মোট শনাক্ত দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ৮৯১ জনে। আর সুস্থ হয়ে পরিবারে ফিরে গেছেন ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৯৬৪ জন। মৃত্যুর দিক দিয়ে শীর্ষস্থানে থাকলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) সতর্কতা উপেক্ষা করে আগামী সপ্তাহে দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দিচ্ছে ইতালি। দেশটিতে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত ১৯ হাজারের মধ্যে অন্তত ১০০ চিকিৎসকও রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে গতকালও মৃতের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দেশটিতে প্রাণ হারিয়েছে ১ হাজার ৩০৪ জন। এর ফলে মৃত্যুর (১৭,৯৯৫ জন) তালিকায় দ্বিতীয় এবং আক্রান্তের (৪,৭৮,৩৬৬) দিক দিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে। গতকাল আরো মৃত্যু হয়েছে- যুক্তরাজ্যে ৯৮০, ইতালিতে ৫৭০, স্পেনে ৫২৩, বেলজিয়ামে ৪৯৬, ইরানে ১২২, হল্যান্ডে ১১৫, তুরস্কে ৯৮, সুইডেনে ৭৭, সুইজারল্যান্ডে ৫৩ পর্তুগাল ও ইন্দোনেশিয়ায় ২৬ জন করে, ইকুয়েডরে ২৫, অস্ট্রিয়ায় ২৪ এবং কানাডায় ২২ জনের।
করোনা মহামারিতে ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ দেশ হচ্ছে ইতালি। এক মাসেরও বেশি সময় লকডাউনে থাকার পরে ব্যবসা শুরু করার এবং লোকেদের কাজে ফিরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করছে দেশটির সরকার। দেশটির কর্মকর্তারা আশাবাদী যে এই মারাত্মক রোগের বিস্তার কমছে, নেতৃস্থানীয় বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন যে, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই মানুষ কাজে ফিরতে পারবেন। আগামী ১৩ এপ্রিলের মধ্যে দোকান এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া হতে পারে, এবং ৪ মে থেকে সবাইকে বাইরে যাবার এবং কাজে ফেরার অনুমতি দেয়া হতে পারে।
ইতালির শীর্ষ স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান সিলভিও ব্রæসাফেরো বলেছেন, ‘সংক্রমণের সংখ্যা শীর্ষে উঠার পর এখন নামতে শুরু করেছে।’ তিনি বলেন, ‘এখন আমরা সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করেছি। এই রোগের বিস্তার কমিয়ে রেখে সবকিছু আস্তে আস্তে স্বাভাবিক করা দরকার।’
মিলান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজিস্ট ফ্যাব্রিজিও প্রেগিøয়াসকো বলেন, ‘সংক্রামকটি কীভাবে বিকশিত হয় তার উপর নির্ভর করে মে মাসের প্রথম দিকে মানুষকে বেরিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার যেতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘তবে আমাদের সামাজিক-দ‚রত্বের বিধিগুলি বজায় রাখতে হবে এবং দলগত ভাবে চলা থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়া সবসময় মাস্ক পরে থাকতে হবে।’
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বুধবার লকডাউন তোলার বিরুদ্ধে সতর্কতা জানিয়েছে। ইউরোপে কোভিড-১৯ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত হু’র প্রতিনিধি ডাঃ হান্স ক্লুগে বলেছেন, ‘সংক্রমণের শেষ দিকে চলে এসেছি, এমনটা মনে করা বিপজ্জনক’ তিনি বলেছিলেন, ‘এখন আমাদের লকডাউন তোলার সময় নয়।’
এদিকে, কোভিড-১৯ রোগীদের সারিয়ে তুলতে গিয়ে ইতালিতে ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১০০ চিকিৎসক। বৃহস্পতিবার দেশটির একটি স্বাস্থ্য অ্যাসোসিয়েশন এই তথ্য জানিয়েছে। স্বাস্থ্য অ্যাসোসিয়েশনের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসকদের মৃত্যুর সংখ্যা অন্তত ১০০ জন।
ইতালির সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে আরও অন্তত ৩০ জন নার্স ও নার্স সহকারীর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। এফএনওএমসিইও অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফিলিপ্পো আনেল্লি বলেন, ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা কোনও চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীকে সুরক্ষা ছাড়া পাঠাতে পারি না। এটি অসম লড়াই। রোমের আইএসএস পাবলিক হেলথ ইনস্টিটিউটের আশঙ্কা, ইতালিতে আক্রান্তদের মধ্যে ১০ শতাংশ স্বাস্থ্যখাতে কর্মরত।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ইতালিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৪৩ হাজার ৬২৬ জন। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৮ হাজার ২৭৯ জনের। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৮ হাজার ৪৭০ জন। সূত্র : দ্য সান, ডেইলি মেইল।

 



 

Show all comments
  • Wahidujjaman Nabab ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৩৬ এএম says : 0
    আমাদের আরও সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ কি?
    Total Reply(0) Reply
  • Eesy Ak ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৩৭ এএম says : 0
    বাংলাদেশে শনাক্ত হোক প্রোপারলি তারপর শনাক্তের সংখ্যা কত। মনে তো হয় তখন সংখ্যা বাদে শতকরাতে গুনতে হবে। তবে লকডাউনের নিয়ম কঠোর করতে হবে। ৫০ এর কম বয়সী এবং নিতান্ত গরীব ছাড়া সকলের জন্য কঠোর। আর ৫০+ বয়স্ক এবং গরীবদের যথেষ্ট প্রশ্নউওরের প্রেক্ষিতে বাইরে বেরোবার আদেশ দেয়া উচিত। রাজশাহীতে একদম নিয়ম মানছেনা, ৫-৪০/৪৫ বয়সের নারীপুরুষ এমন বিচরন করছে যেন বাসাতে যারা আছে ওরা কাপুরুষ। রাজশাহীতে কঠোর আইন প্রনয়ন চাই
    Total Reply(0) Reply
  • Md Khalilur Rahman Chowdhury ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৩৮ এএম says : 0
    We have no trust in your statistics.Ask govt to circulate statistics in table form along with advise and arrangements.No need to show any body's face and time losing lecture
    Total Reply(0) Reply
  • DrMehedi Hassan ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৩৮ এএম says : 0
    চীনের চিকিৎসকরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এই তথ্যটি ১০০% নির্ভুল সবার জন্য খুব কার্যকর। চীন সল্প সময়ে সংক্রমণের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করেছে। মুখোশ পরে এবং হাত ধোয়া ছাড়াও তারা দিনে ৩ বার লবণের পানি দিয়ে গার্গল করে এর পরে ৫ মিনিট ধরে ধীরে ধীরে গরম পানি পান করুন/করেছেন, কারণ প্রাথমিকভাবে ভাইরাসটি কেবল গলায় আক্রমণ করে, তারপরে শুধু ফুসফুসে আক্রমণ করে, লবণ জলে আঘাতের ফলে ভাইরাস মারা যাবে বা নেমে যাবে এবং পেটে বিচ্ছিন্ন হবে। কোভিড-১৯ থেকে বাঁচার জন্য জনগণের ব্যবহার থেকে রোধ করার এটি একটি উপায়। বাজারে ওষুধ নেই কেনার দরকার নাই। ভাইরাস ফুসফুসে পৌঁছানোর আগে ভাইরাসটি ৪ দিনের জন্য গলায় থাকে, এই সময়ে সংক্রামিত কাশি শুরু হয়। যতটা সম্ভব গরম পানি পান করতে পারলে নুনের জল ভাইরাস নির্মূল করতে সক্ষম। তাছাড়া এখনকার পরামর্শ কারও জন্য ক্ষতির না, এটা অন্যান্য ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়া রোগেও ব্যবহার করা হয়। এই বার্তাটি তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে দিন। কারণ আপনি কারও জীবন বাঁচাবেন বলে।
    Total Reply(0) Reply
  • আলা উদ্দিন শুভ ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৩৯ এএম says : 0
    এরকম মহামারী জীবাণুকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে পুরো দেশের সব নাগরিকদের পরীক্ষা করতে হবে এবং আক্রান্তদেরকে চিহ্নিত করে, নির্জনে রাখতে হবে। খুঁজে বের করতে হবে ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি আর কাদের সাথে মিশেছে। ঠিক এই পদ্ধতিই অবলম্বন করেছিল দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং এবং তারা খুব আশাব্যঞ্জক ফলাফল পেয়েছে। কিন্তু এই কাজটা যুক্তরাষ্ট্র করতে পারেনি, বাংলাদেশও পারেনি।
    Total Reply(0) Reply
  • Sohag Mathubber ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৩৯ এএম says : 0
    পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগ জনক । আমাদের সচেতন হতে হবে । ঘরে থাকা ছাড়া বিকল্প কোন ব্যাবস্থা নাই । আসুন আমরা নিজেরা আগে সচেতন হয়ে যাই । এই ভাবে নিজের পরিবারের সদস্যদের এবং প্রতিবেশী ও নিকট আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে কথা বলে তাদের সচেতন করে তুলি । এই ভাবে দেখা যাবে কেউ অযথা বাহিরে বের হবে না ।
    Total Reply(0) Reply
  • Bangla Handicrafts ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৩৯ এএম says : 0
    বাংলাদেশে এমনিতেই প্রচুর মানুষ ঠান্ডায়, জ্বরে বা এই ধরণের কিছু রোগে মারা যায়, তাই এই ব্যাপারে সরকার ও মিডিয়ার প্রচার দরকার কারণ বর্তমানে অনেক মানুষ এই ধরণের রোগের কারণে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে এমনকি মৃত্যুর পরেও কবর বা অন্য ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী শেষকৃত্য করা যাচ্ছে না, যেটা এককথায় অমানবিক।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammad Abul Mamun ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৪০ এএম says : 0
    করোনা ভাইরাস সমাজের ভাল লোকদের জন্য রহমত স্বরুপ। কারন, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে একজন ভাল লোক সমাজিকভাবে এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার সুযোগ পাচ্ছে। মৃত্যু একদিন সবাইকে পাকড়াও করবেই। তবে, করোনার ভয়ে সব মানুষ এখন অশ্লীলতা থেকে মুক্ত হয়ে প্রতিমুহুর্তে আল্লাহকে ডাকছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Rakibul Islam ১১ এপ্রিল, ২০২০, ১:৪০ এএম says : 0
    বাংলাদেশে কিছু দিনের জন্য কারপিউ জারি করা হোক,,তাতে আক্রানতো সংখা কমে আসবে....
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ