মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বিশ্বের সব পরাশক্তির সব প্রচেষ্টাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে করোনাভাইরাস তার থাবা বিস্তার করেই চলেছে। এ ভাইরাসের মারণ ছোবলে গতকাল আরো ৫ সহস্রাধিক প্রাণহানির ফলে মৃতের সংখ্যা গতকাল লাখ ছাড়িয়ে গেল। শুক্রবার রাত সোয়া ১১টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৪৫০ জন এবং আরো প্রায় ৭০ হাজার নতুন শনাক্তের ফলে মোট শনাক্ত দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ৮৯১ জনে। আর সুস্থ হয়ে পরিবারে ফিরে গেছেন ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৯৬৪ জন। মৃত্যুর দিক দিয়ে শীর্ষস্থানে থাকলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) সতর্কতা উপেক্ষা করে আগামী সপ্তাহে দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দিচ্ছে ইতালি। দেশটিতে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত ১৯ হাজারের মধ্যে অন্তত ১০০ চিকিৎসকও রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে গতকালও মৃতের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দেশটিতে প্রাণ হারিয়েছে ১ হাজার ৩০৪ জন। এর ফলে মৃত্যুর (১৭,৯৯৫ জন) তালিকায় দ্বিতীয় এবং আক্রান্তের (৪,৭৮,৩৬৬) দিক দিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে। গতকাল আরো মৃত্যু হয়েছে- যুক্তরাজ্যে ৯৮০, ইতালিতে ৫৭০, স্পেনে ৫২৩, বেলজিয়ামে ৪৯৬, ইরানে ১২২, হল্যান্ডে ১১৫, তুরস্কে ৯৮, সুইডেনে ৭৭, সুইজারল্যান্ডে ৫৩ পর্তুগাল ও ইন্দোনেশিয়ায় ২৬ জন করে, ইকুয়েডরে ২৫, অস্ট্রিয়ায় ২৪ এবং কানাডায় ২২ জনের।
করোনা মহামারিতে ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ দেশ হচ্ছে ইতালি। এক মাসেরও বেশি সময় লকডাউনে থাকার পরে ব্যবসা শুরু করার এবং লোকেদের কাজে ফিরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করছে দেশটির সরকার। দেশটির কর্মকর্তারা আশাবাদী যে এই মারাত্মক রোগের বিস্তার কমছে, নেতৃস্থানীয় বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন যে, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই মানুষ কাজে ফিরতে পারবেন। আগামী ১৩ এপ্রিলের মধ্যে দোকান এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়া হতে পারে, এবং ৪ মে থেকে সবাইকে বাইরে যাবার এবং কাজে ফেরার অনুমতি দেয়া হতে পারে।
ইতালির শীর্ষ স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান সিলভিও ব্রæসাফেরো বলেছেন, ‘সংক্রমণের সংখ্যা শীর্ষে উঠার পর এখন নামতে শুরু করেছে।’ তিনি বলেন, ‘এখন আমরা সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করেছি। এই রোগের বিস্তার কমিয়ে রেখে সবকিছু আস্তে আস্তে স্বাভাবিক করা দরকার।’
মিলান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজিস্ট ফ্যাব্রিজিও প্রেগিøয়াসকো বলেন, ‘সংক্রামকটি কীভাবে বিকশিত হয় তার উপর নির্ভর করে মে মাসের প্রথম দিকে মানুষকে বেরিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার যেতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘তবে আমাদের সামাজিক-দ‚রত্বের বিধিগুলি বজায় রাখতে হবে এবং দলগত ভাবে চলা থেকে বিরত থাকতে হবে। এছাড়া সবসময় মাস্ক পরে থাকতে হবে।’
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বুধবার লকডাউন তোলার বিরুদ্ধে সতর্কতা জানিয়েছে। ইউরোপে কোভিড-১৯ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত হু’র প্রতিনিধি ডাঃ হান্স ক্লুগে বলেছেন, ‘সংক্রমণের শেষ দিকে চলে এসেছি, এমনটা মনে করা বিপজ্জনক’ তিনি বলেছিলেন, ‘এখন আমাদের লকডাউন তোলার সময় নয়।’
এদিকে, কোভিড-১৯ রোগীদের সারিয়ে তুলতে গিয়ে ইতালিতে ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১০০ চিকিৎসক। বৃহস্পতিবার দেশটির একটি স্বাস্থ্য অ্যাসোসিয়েশন এই তথ্য জানিয়েছে। স্বাস্থ্য অ্যাসোসিয়েশনের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসকদের মৃত্যুর সংখ্যা অন্তত ১০০ জন।
ইতালির সংবাদমাধ্যমের খবর অনুসারে, ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে আরও অন্তত ৩০ জন নার্স ও নার্স সহকারীর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। এফএনওএমসিইও অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফিলিপ্পো আনেল্লি বলেন, ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা কোনও চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীকে সুরক্ষা ছাড়া পাঠাতে পারি না। এটি অসম লড়াই। রোমের আইএসএস পাবলিক হেলথ ইনস্টিটিউটের আশঙ্কা, ইতালিতে আক্রান্তদের মধ্যে ১০ শতাংশ স্বাস্থ্যখাতে কর্মরত।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ইতালিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৪৩ হাজার ৬২৬ জন। এদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১৮ হাজার ২৭৯ জনের। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২৮ হাজার ৪৭০ জন। সূত্র : দ্য সান, ডেইলি মেইল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।