Inqilab Logo

বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

কৃত্রিম খাদ্য সংকটে পড়তে যাচ্ছে ভারত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০২০, ৫:৪৮ পিএম

করোনা সংক্রমণ থামাতে বিশ্বের অনেক দেশের মতোই ভারতেও চলছে লকডাউন। কিন্তু অপরিকল্পিত লকডাউনের ফলে হুমকির মুখে পড়েছে দেশটির যোগান শৃঙ্খলা। বাজার খোলা থাকলেও খাদ্য পরিবহণ ব্যবস্থাও থেমে আছে। এ কারণে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, হয়ত লকডাউনের প্রকোপে খাদ্য সংকটের মুখে পড়তে যাচ্ছে ভারত।

ভারতে এখন এক রাজ্যের পণ্য অন্য রাজ্যে পাঠানো বন্ধ রয়েছে। তবে এখনো রাজ্যগুলোতে খাদ্যপণ্যের যথেষ্ট মজুত রয়েছে। খাদ্যশস্যের লভ্যতা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। আসছে রবি শস্যও। সমস্যা হলো এই খাদ্য সবার কাছে পৌঁছানো নিয়ে। যোগান শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়ায় মানুষ কৃত্রিম খাদ্য সংকটে পড়তে যাচ্ছে। লকডাউনের কারণে জমিতে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। কৃষি শ্রমিকরা নিজ রাজ্যে ফিরে যাচ্ছে। ফলে ফসল তোলাও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফসল কাটার পরে তা প্রস্তুত করতে হবে, বাজারে নিয়ে যেতে হবে। এসবের জন্য ফের শ্রমিক প্রয়োজন হবে, প্রয়োজন হবে গাড়িচালক ও নিরবচ্ছিন্ন চলাচল।

লকডাউনের পূর্বে ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার কাছে ৭৭.৬ মিলিয়ন টন গম ও চাল রয়েছে বলে জানিয়েছিল। ১৯ মার্চের হিসেবে মজুত খাদ্যবীজ ছিল ২.২৫ মিলিয়ন টন। তবে সমস্যা হলো, উৎপাদিত পণ্য ও তার ক্রেতারা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আলাদা রাজ্যের হন। বিহার জানিয়েছে, আমরা চাল পাই পশ্চিমবঙ্গ থেকে, ডাল পাই মধ্যপ্রদেশ থেকে এবং সরষের তেল পাই রাজস্থান থেকে। কিন্তু লকডাউনের ফলে এই সাপ্লাই বন্ধ হয়ে গেছে। রাজ্যের সীমানা যেহেতু বন্ধ, সে কারণে পরিবহণ আর মসৃণ নেই ভারতে।

ভারতের কৃষি উৎপাদনের পরিবহণ নিয়ে দেশটির গণমাধ্যমের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, আন্তঃরাজ্য ট্রাক চলাচলের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার জেরে রাজ্যের সীমান্তে সীমান্তে দাঁড়িয়ে পড়ছে পণ্য বোঝাই ট্রাক। এক রাজ্যের টমেটো, আরেক রাজ্যের বেগুন গাড়িতেই নষ্ট হচ্ছে। ফলে দ্রুতই এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে যাতে কৃষি পণ্য চাষির ঘরে পচে যাচ্ছে আর অন্যদিকে বাজারে জোগানের সংকট তৈরি হচ্ছে। ছোট ও শহর ও পিছিয়ে থাকা জায়গায় আরো বড় সংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে কারণ যেখানে ছোট ছোট বাজারের মাধ্যমে সামগ্রী পৌঁছায়। যোগান শৃঙ্খলের সমস্যায় যুক্ত হয়েছে ট্রাক ড্রাইভারদের পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, কৃষিপণ্য প্যাকিংয়ে এবং মাল তোলা ও মাল নামানোর জন্য প্রয়োজনীয় শ্রমিকদের অনুপস্থিতিতে।

লকডাউন এবং কোয়রান্টিনের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই কৃষকেরা বাজার পর্যন্ত খাদ্যশস্য পৌঁছতে পারছেন না। এই পরস্থিতিতে চাল রফতানি বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছে ভারত সরকার। মূলত ইরান, সউদী আরব, ইরাকে বাসমতি চাল রফতানি করে নয়াদিল্লি। অ-বাসমতি চাল যায় বাংলাদেশ, নেপাল, সেনেগালের মতো দেশে। কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, মায়ানমার থেকে চাল সরবরাহ কমে যাওয়ায় অনেক দেশই ভারতের উপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে এখন। কিন্তু লকডাউন পরিস্থিতিতে ভারতের পক্ষেও বিদেশে চাল রফতানি সম্ভব হচ্ছে না। দেশের মানুষের প্রয়োজন মতো চাল যাতে মজুত থাকে, সে দিকেও নজর রাখতে হচ্ছে নয়াদিল্লিকে। সূত্র: দ্য ওয়্যার।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ