বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
নতুন করে ছুটি না পাওয়ায় করোনা আতঙ্ক মাথায় নিয়ে গেল দুদিন ধরে ঢাকা ফিরছিলেন শ্রমজীবী মানুষ। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সারা দিন পায়ে হেঁটে ও ভেঙে ভেঙে ছোট ছোট গাড়িতে করে, কেউ পিক-আপে মাছের ড্রামে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থল ফেরেন। ঢাকায় ফিরে আবারও ছুটি ঘোষণার পর একই ভাবে ফিরতে হয় তাদের। এসব মানুষের ড্রামে করে বাড়ি ফেরার ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে সমালোচনার ঝড় শুরু হয়। অসহায় শ্রমজীবী মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলায় মালিকদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান সচেতন নাগরিকরা।
ভাইরাল ছবিতে দেখা যায়, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইউরোপ যাওয়ার মতো মাছের খালি ড্রামে বাড়ির উদ্দেশে যাচ্ছে লোকজন। হঠকারী একটি সিদ্ধান্তে এভাবে ভোগান্তি পোহাতে হলো হাজারো মানুষকে। পেটের টানে পায়ে হেঁটে গেলো দুদিন ধরে তারা কর্মস্থলে ফিরেছিলেন।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার একটি পোশাক কারখানার অপারেটর মুজিবুর রহমান মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় গাড়ির জন্য অপেক্ষারত অবস্থায় আক্ষেপের সুরে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘‘করোনাভাইরাসের কারণে ছুটি হইল। টাকা নাই। বাড়িত চইলা গেলাম। চাকরি বাঁচাবার জন্য শনিবার চইলা আসলাম। আইসা শুনি আবার ছুটি। আগে জানাইলে কি হইতো? আসলে আমরা শ্রমিক না মানুষ, বুঝতে পারি না।’
ফেইসবুকে সোহেল গাজী লিখেছেন, ‘‘সব সিদ্ধান্ত কেনো এতো দেরি করে নেয়া হচ্ছে বুঝতে পারছিনা, সমাজের জ্ঞানি-গুনিরা এমন ভুল করলে আমরা সাধারন মানুষ কোথায় যাবো। জনগন যদি না বাঁচে এই গার্মেন্টস শিল্প কিভাবে বাচঁবে। আপনাদের দেখে বুকে সাহস পেতাম, আজ আপনাদের এমন ভুল সিদ্ধান্তে আর ভরসা রইলো না। এখন এই মানুষ গুলো দ্বিমরা দিবে, না খেয়েও মরবে করোনায়ও মরবে। আল্লাহ আপনাদের সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার তৌফিক দান করুক। মানুষের জীবন, রুটি রুজি নিয়ে এমন তামাশা আল্লাহ কি সইবে?’’
মাহের শামিম লিখেছেন, ‘‘ঐ সব গার্মেন্টস মালিকদের আইনের আওতায় আনা হউক। যাঁরা জাতীয় সার্থ বিবেচনা না করে, হাজার হাজার শ্রমিককে ঘর থেকে রাস্তায় বের করে আনলো। জাতি দেখতে চায় ক্ষমতা কি আমাদের সরকারের না অতিমুনাফা লোভী সার্থের। যাঁরা নিজের সার্থে সরকার ও দেশের পারিপার্শ্বিক অবস্থা তোয়াক্কা করে না, মালিকরা।’’
বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, ‘আমারে বাঁধবি তোরা, সেই বাঁধন কি তোদের আছে?’
গুরু ঠিকই বলেছেন, বাঙালিরে বাঁধে, বাঙালিরে ঠেকায়, সেই বাঁধন আজো আবিস্কৃত হয়নি। সেটা ইন্ডিয়ান ওশান, মেডিটেরিয়ান সি, কিম্বা রাজপথ হোক! বাঙালিরে ঠেকানোর সাধ্য কারো নেই।’’
সাদ সারাহ লিখেছেন, ‘‘করোনা ভাইরাস বাংলাদেশে ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে এই গার্মেন্টস মালিকদের জন্য। সব কিছু বন্ধ গার্মেন্টস খুলেছিল কেন,, লোভে পাপ পাপে মৃত্যু,,, ভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে শুধু গার্মেন্টস শ্রমিকদের মাঝে ছড়াবে না, এটার খেসারত সবাইকে দিতে হবে,, গার্মেন্টসে আগুন লাগলে শুধু শ্রমিক মরে, গার্মেন্টস ভেঙ্গে পড়লে শুধু শ্রমিক মরে, কিন্তু এই বিষয়টা তেমন না,,।’’
জহিরুল ইসলাম লিখেছেন, ‘‘গার্মেন্টস শিল্পের হর্তাকর্তাদের বিনয়ের সহিত অনুরোধ দয়া করে এরকম খেলা খেলবেন না! যে খালেয় নিম্ন আয়ের মানুষের মনে কষ্ট লাগে এবং মা মাটি ক্ষতবিক্ষত হয়।’’
আলাউদ্দিন আলো লিখেছেন, ‘‘খেটে খাওয়া মানুষের সাথে এমন আচরণ কেন করা হচ্ছে?তারা কি মানুষ নয়? মনে রাখবেন অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে তাদের অবদান অনেক বেশি।’’
মাহফুজুল ইসলাম লিখেছেন, ‘‘এই সব কিছুর জন্য দ্বায়ী সরকারের বিভিন্ন বিভাগের মাঝে সমন্বয়ের অভাব, তাদের এই পরিস্থিতিতে পরতে হতো না যদি তাদেরকে আবার ঢাকা যেয়ে গার্মেন্টসে যোগ দিতে বাধ্য না করতো।’’
নিলাদ্রী রনি লিখেছেন, ‘‘বাড়িতে চলে যেতে বলছিল কে? ঈদের ছুটি মনে করেছিলেন নাকি?শহর থেকে গ্রাম আবার গ্রাম থেকে শহর এইসব করে করে ভাইরাসটা আস্তে আস্তে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে যাচ্ছে আর মহামারী রুপ নিচ্ছে...।’’
মো. ইসলাম লিখেছেন, ‘‘আমাকে যে যাই বল আমি কিন্তু ড্রাম এ যাওয়া লোকদেরকে দোষারোপ করব না। তবে বদদোয়া দিবো গার্মেন্স মালিকদেরকে তারা যেন বুড়ো বয়সে কষ্টবোধ করে তখন যেন অনুধাবন করে যে শ্রমিকদের সাথে আজকের এমন মহামারী দিনে জুলুম করেছে। আল্লাহর কাছে বিচার চাওয়া চারা উপায় নেই,, গার্মেন্টসের মালিক গুলো হলো মানুষ রূপি জানোয়ার,, এরা এই গরীব মানুষ গুলো কে মানুষ মনে করে না।’’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।