মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
চীন করোনভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়লাভ করেছে বলেই মনে হচ্ছে। ফলে বৈশ্বিক আধিপত্য বিস্তারের পথ আরও সুগম হয়েছে দেশটির জন্য।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সূত্রপাত চীনের উহানে। একটি চোরাই পশু বিক্রির মার্কেট থেকে। অনেক চীনা নাগরিকই বিভিন্ন ভাইরাসযুক্ত বন্য প্রাণী যেমন, সাপ, বাদুড় ইত্যাদি খেতে পছন্দ করে। কিন্ত চীনের মতো আন্তঃসংযুক্ত, ঘনবসতিপূর্ণ পরিবেশে এটি একটি মহামারী সংক্রান্ত দুঃস্বপ্ন এবং এমন একটি বিপদ যা চীন কর্তৃপক্ষ উপেক্ষা করে এসেছে। এই প্রাদুর্ভাবের উৎপত্তি সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রকাশে তারা অনেক মূল্যবান সময় ব্যয় করেছে। ফলে চীন এবং পরবর্তীকালে বিশ্বের অন্যান্য অংশে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি এখনও আক্রান্তের সংখ্যা এবং মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিচ্ছে না, চলতি সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি নতুন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এটি দেশ দুইটিকে তীব্র বাক-যুদ্ধের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।
কিন্তু মহামারী মোকাবেলার লড়াইয়ে অন্য দেশগুলোর তুলনায় চীনের আপেক্ষিক সাফল্য লক্ষণীয়। পশ্চিমারা লকডাউন এবং সামাজিক দূরত্বের মাধ্যমে লড়াই করার সময়, প্রায় পুরো চীনের জীবনই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে। এশিয়া বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, কিশোর মাহবুবানি তার নতুন বইতে এই প্রশ্নটি করেছেন, ‘চীন কি জিতেছে?’ তার যুক্তি হল সিদ্ধান্তমূলক এবং কার্যকরিতার দিক থেকে চীনা নেতৃত্ব আমেরিকা ছাড়িয়ে গেছে। মার্কিন অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক মডেল ব্যর্থ হচ্ছে - এবং ট্রাম্প প্রশাসনের করোন ভাইরাস মহামারী সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া অবশ্যই এর প্রমাণ।
কয়েক বছর ধরে চীন সরকার বিভক্ত পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে বিভেদ এবং জয়ের ভূমিকা পালন করে আসছে। তবে মহামারী চলাকালীন সময়ে তাদের এই কৌশল নতুন গতি পেয়েছে। প্রথমে তারা মিডিয়ায় অযৌক্তিক ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়িয়ে দেয়। যেমন, করোনাভাইরাস মার্কিনিরাই তৈরি করে চক্রান্তমূলকভাবে চীনের ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। তারপরে এটি অন্যান্য দেশগুলোকে সহায়তার ছদ্মবেশে প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় তাদের দুর্বলতাগুলি তুলে ধরেছিল। তারা তাদের উৎপাদন শক্তি ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণে চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহের জন্য বেশি ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলোর কাছ থেকে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক ছাড় পাওয়ার চেষ্টা করছে। আবার মিডিয়াকে তারা বলছে, বিদ্যমান বাণিজ্যিক চুক্তির উপর ভিত্তি করেই এই ‘সহায়তা’র বেশিরভাগ অংশ সরবরাহ করা হচ্ছে।
এখন চীন ইন্টারনেটের ভবিষ্যতকে রূপ দেয়ার জন্য একটি দুঃসাহসিক কাজ শুরু করছে। চীনা কর্মকর্তাদের যুক্তি, বর্তমান, বর্তমান ইন্টারনেট কাঠামো আর নির্ভরযোগ্য নয়। এটি ঠিক, অপেশাদার এবং শিক্ষাবিদদের জন্য একটি নেটওয়ার্ক হিসাবে ইন্টারনেটের প্রতিষ্ঠা হয়, আমাদের সভ্যতার কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র হিসাবে বর্তমানে এর যে আধুনিক ভ‚মিকা, তার জন্য কখনই এটি ডিজাইন করা হয়নি। এটি অপরাধী, গুন্ডা এবং অন্যান্য দুষ্কৃতকারীদের জন্য বিশাল সুযোগ দেয়।
তবে চীনা প্রস্তাবটি ভয়ঙ্কর। টেলিযোগাযোগ গোষ্ঠী হুয়াওয়ের দ্বারা প্রস্তাবিত, রাষ্ট্রীয় সংস্থা চীন ইউনিকম এবং চীন টেলিযোগাযোগ এবং দেশটির শিল্প ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় (এমআইআইটি) একসাথে নভেম্বরে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগের বৈঠকে একটি ‘নতুন আইপি’ স্ট্যান্ডার্ড তুলে ধরবে। যার উপরে ভোটভুটি হবে। এই প্রস্তাবটি ইন্টারনেটের বর্তমান বিকেন্দ্রীভ‚ত মডেলকে প্রতিস্থাপন করবে, যেখানে ডেটা প্রেরণ এবং গ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া পৃথক ব্যবহারকারী এবং তাদের কম্পিউটারের উপর নির্ভর করে, একটি ‘টপ ডাউন’ মডেল যা অনেক দেশে রাষ্ট্র পরিচালিত টেলিকম সংস্থাগুলোকে সুযোগ দেবে ব্রাউজিং এবং ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ন্ত্রনের।
এর মাধ্যমে একটি আত্মবিশ্বাসী, সক্ষম এবং উদার চীনের চিত্র ফুটে উঠেছে। সত্যিকারের পরাশক্তি হিসাবে। এর বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া ও ক্রমবর্ধমান উদ্ভট প্রচেষ্টার মাধ্যমে। সন্দেহ নেই, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন ২০৪৯ সালে বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এটি অবাস্তব নয়, এটি চীনা নেতা শি জিনপিংয়ের স্পষ্ট লক্ষ্য। যদিও চীনা কমিউনিস্ট পার্টি পূর্ব-পশ্চিমের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা বলেছে, কিন্তু তাদের উচ্চাকাক্সক্ষা আর যাই হোক, বন্ধুত্বপূর্ণ নয়। তারা তাদের লক্ষ্যের অনুসরণে কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামরিক এবং প্রযুক্তিগত শক্তি অর্জন করছে।
তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন চীনকে একটি ‘পদ্ধতিগত প্রতিদ্বন্দ্বী’ হিসাবে গণ্য করেছে। অস্ট্রেলিয়া তার রাজনীতিতে বৈদেশিক হস্তক্ষেপকে ‘অপরাধ’ বলে এবং বাইরের শক্তির পক্ষে তদবিরকারীদের জন্য বাধ্যতামূলক নিবন্ধন জারি করে একটি নতুন অভূতপূর্ব প্যাকেজ পাস করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।