গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
করোনাক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে সরকার গোপনীয়তার আশ্রয় নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাবউবংপৎরঢ়ঃরড়হ: টহঃরঃষবফ-২)। বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি ও সরকার বিশৃংখল ব্যবস্থাপনার সমালোচনা করে এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি প্রফেসর ডা. হারুন আল রশিদ এবং মহাসচিব ডা. মো. আব্দুস সালাম একথা বলেন। তারা বলেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনাভইরাসের করালগ্রাসে ইতোমধ্যে পঞ্চাশ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ৯ লাখ। বিভিন্ন দেশ তাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে এই মহাবিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার নির্বিকার, তাদের কার্যক্রম কাগজে-কলমে, মাঠ পর্যায়ে দেরীতে হলেও আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টিনের চেষ্টা করলে রোগী সনাক্তকরণ বা চিকিৎসার ব্যপারে চরম উদাসীনতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। শুরু থেকে যথাযথ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা না করায় ধীরে ধীরে চরম জটিল রুপ ধারণ করেছে।
নেতৃদ্বয় বলেন, বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসকে মহামারী ঘোষণার পর থেকেই ড্যাব বিভিন্ন সেমিনার, বিবৃতি এবং সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার তথা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারী চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্টাফদের ব্যাক্তিগত নিরাপত্তা সুরক্ষা (পিপিই) নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্ণপাত করছেনা। বাংলাদেশের চিকিৎসকগণ তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরলসভাবে স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদাসীন আচরণের জন্য ইতোমধ্যে কয়েকজন চিকিৎসক হোম কোয়ারেন্টটিনে যেতে বাধ্য হয়েছে। তবুও কোনো চিকিৎসক সেবা প্রদানে বিরত হয়নি। অথচ আমরা অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করছি যে- করোনাভাইরাসের রোগীদের চিকিৎসা প্রদানের জন্য পিপিই, মাস্ক এন-৯৫ চিকিৎসকদের জন্য নিশ্চিত না করে সরকারের অন্য বিভাগের ব্যক্তিদের দেওয়া হয়েছে। যা ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ড্যাবেউবংপৎরঢ়ঃরড়হ: টহঃরঃষবফ-২র পক্ষ থেকে উপরোক্ত ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং অনতিবিলম্বে চিকিৎসা সেবা প্রদানকারীদের পিপিই, মাস্ক এন-৯৫ সরবরাহের জোর দাবি জানানো হয়। তাছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের পিপিই নিশ্চিত না করে উপরন্তু প্রয়োজনীয় জনবল, রোগী সনাক্তকণ, চিকিৎসা সেবার ন্যূনতম ব্যবস্থা না করে নতুন আটটি হাসপাতাল করোনা রোগী ভর্তির নির্দেশ দিয়েছে। বিশ^ করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করলে স্পষ্ট প্রতীয়মাণ হয় যে, বাংলাদেশ সরকার করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে গোপনীয়তার আশ্রয় নিচ্ছে।
ড্যাবউবংপৎরঢ়ঃরড়হ: টহঃরঃষবফ-২ নেতারা দ্ব্যর্থহীনভাবে সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, যাদের লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে তাদের প্রত্যেককে অনতিবিলম্বে পরীক্ষা করা হোক ও যথাযথভাবে চিকিৎসা করা হোক। করোনা আক্রান্ত বা মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে লুকোচুরি বন্ধ করা হোক। স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারীদের সরকারী উদ্যোগে বীমা করা হোক। সমাজিক সংক্রমণের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে বলে অন্ততপক্ষে জেলা পর্যায়ে রোগী সনাক্তকরণের ব্যবস্থা এবং করোনা রোগীদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত বহির্বিভাগে করোনা রোগীদের জন্য অত্যাবশকভাবে আলদা কর্ণার করা হোক। তারা আরো বলেন, করোনা প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকরী উপায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, আইসোলেশন, কোয়ারেন্টিন। এই পন্থা যথাযথভাবে কার্যকর করতে নি¤œ আয়ের মানুষদের অন্তত দু’বেলা খাওয়ার ব্যবস্থা করা অত্যন্ত জরুরী। নতুবা উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় তথা সরকার দাযী থাকবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সারাদেশের চিকিৎসগণ যেভাবে চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন তার জন্য কৃতজ্ঞতা এবং আন্তরিক ধন্যবাদ জানান ড্যাব নেতারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।