Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

অহন না খায় মরি গেলে কবর দিব কে?

আবু জাফর সোহেল | প্রকাশের সময় : ৩০ মার্চ, ২০২০, ১:৪১ পিএম

‘চুলায় আগুন জ্বলে না কয়েক দিন। রাস্তায় মানুষ নাই, কার কাছে ভিক্ষা চামু, যে কজন দেখা যায়, কাছে গেলে দূর দূর করে। আশেপাশের বাসা-বাড়িতেও ডুকতে দেয়। কি রোগ আইছে হুবাই খালি দূর দূর করে। কি করম। অহন না খায় মরি গেলে কবর দিবে কে? আঁর তো আপন কেউ নাই।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বললেন, ছিন্নমূল নারী মরিয়ম। মরিয়মের বাড়ী নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানার রামপুর ইউনিয়নে। বয়সের ভারে সোজা হয়ে হাঁটতেও পারেন না। থাকেন রাজধানীর মতিঝিলের সোনালী ব্যাংক কলোনির পাশে ময়লার স্তূপের পাশে ঝুপড়ির মধ্যে। স্বজনহীন এ বৃদ্ধার বয়স প্রায় ৭০। জমির খাজনা দিতে না পারায় ভিটেবাড়িসহ সবকিছু হাতছাড়া হয়ে যায়।
বিয়ের পরপরই স্বামী মারা যান। এলাকায় থাকার জায়গা পাননি। বাঁচার তাগিদে ঢাকায় চলে আসেন কবে সেই কথাও স্মৃতি থেকে মুছে গেছে ।
মরিয়াম বলেন, ‘হে সময় তো জোয়ান ছিলাম। এক বেডা বিয়ার কথা কইয়া ঢাকায় লইয়া আইছে। কয়দিনের একলগে রাখছে তারপর হেই ব্যাংকের পিছে হালাই থুই চলি গেছে। হেতারে তো আর খুঁজি পায়নো। ২৫-৩০ বছর আগের কথা। অন তো বুড়ি হই গেছি। আর কেউ খোঁজ নেয় না। হুবাই খালী দূর দূর করে’
ছবি তুলতে চাইলে সরে যেতে চাইলো। তখন বললাম ইনকিলাব পত্রিকা থেকে আসছি। তখন হাসির দিয়ে বলে ‘মামা চিনি গো চিনি। ইনকিলাব তো চিনি। আননে বুঝি হিয়ানে থাকেন।’
তিনি বলেন, ‘মামা গো আই কিততাম, হেডের জ্বালা তো সহ্য করতে হারিনা, দেহেন হেন্দার কাপরানও চিরি গেছে, অহন আই যদি না খায় মরি যায় আননেরা আরে কবর দিয়েন’
গত কয়েকদিন ধরে অঘোষিত লকডাউনে রাজাধানীর জনজীবন থমকে গেছে। এতে বিশেষ করে ছিন্নমূল মানুষেরা খুব বিপদে পড়েছেন। তাদের নাভিশ্বাস অবস্থা। সব ধরণের খাবারের দোকান বন্ধ থাকায় কেউ সাহায্য করলেও সেই টাকা দিয়ে খাবারও কিনতে পারছেন না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লকডাউন

৭ এপ্রিল, ২০২২
১৩ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ