Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনা সংক্রমণ কমাতে পারে উষ্ণ আবহাওয়া

নিউইয়র্ক টাইম্স | প্রকাশের সময় : ২৯ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

সংক্রমণের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা অব্যাহত রাখলে প্রকৃতিও মহামারীকে হ্রাস করতে সহায়তা করতে পারে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে এর অর্থ এই নয় যে, ভাইরাস ফিরে আসবে না।

ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির বিজ্ঞানীদের প্রাথমিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, উষ্ণ জায়গায় বসবাসকারীদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা কম। বেশিরভাগ করোনাভাইরাস সংক্রমণ ৩৭.৪ থেকে ৬২.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট (বা ৩ এবং ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এর মধ্যে থাকা নিম্ন তাপমাত্রার অঞ্চলগুলিতে হয়েছে।

নিরক্ষীয় জলবায়ুর দেশ এবং বর্তমানে গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময়ে থাকা দক্ষিণের যেসব দেশগুলির গড় তাপমাত্রা ৬৪.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট (বা ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এর বেশি রয়েছে, সেখানে করোনা সংক্রমণের হার বিশ্বব্যাপী সংক্রমণের তুলনায় ৬ শতাংশেরও কম।

এমআইটি’র গণনা বিজ্ঞানী এবং এই প্রতিবেদনটির সহ-লেখক কাসিম বুখারি বলেছেন, ‘যেখানেই তাপমাত্রা বেশি ঠাÐা, সেখানে সংক্রমণ দ্রæত বাড়তে শুরু করে।’ তিনি বলেন, ‘এমনকি আপনি এটি ইউরোপে দেখতে পাচ্ছেন, যদিও সেখানে স্বাস্থ্যসেবা বিশ্বের সেরা।’

ড. বুখারি বলেন, তাপমাত্রার ভিত্তিতে করোনা সংক্রমণের ব্যাপারটি যুক্তরাষ্ট্রেও স্পষ্ট। ওয়াশিংটন, নিউ ইয়র্ক এবং কলোরাডোর মতো রাজ্যের তুলনায় আরিজোনা, ফ্লোরিডা এবং টেক্সাসের মতো দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে করোনার প্রাদুর্ভাব ধীর গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে।

তবে ড. বুখারি স্বীকার করেছেন যে, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা, সামাজিক দূরত্ব ব্যবস্থা, পরীক্ষার সহজলভ্যতা এবং হাসপাতালের সার্বিক অবস্থাসহ বিভিন্ন কারণ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংক্রমণ সংখ্যা এবং বিস্তারকে প্রভাবিত করতে পারে।

করোনা মহামারী এবং আবহাওয়ার মধ্যে সম্ভাব্য পারস্পরিক সম্পর্কের বিষয়াটি নিয়ে নীতিনির্ধারক এবং জনসাধারণের আত্মতুষ্টি অনুভব করা উচিত নয়। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখনও কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা দরকার। উষ্ণ তাপমাত্রা এই ভাইরাসটির ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে, তবে কম সংক্রমণ অর্থ এই নয় যে কোনও সংক্রমণ নেই।’

উষ্ণ তাপমাত্রা করোনাভাইরাসের পক্ষে বাতাসে বা দীর্ঘ সময় ধরে কোনোকিছুর পৃষ্ঠের উপরে বেঁচে থাকা আরও কঠিন করে তুলতে পারে তবে কয়েকদিন না হলেও এটি কয়েক ঘন্টা ধরে বেঁচে থাকতে পারে। এমনকি ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো মৌসুমী ভাইরাস এবং সাধারণ সর্দিকাশির ভাইরাসও গ্রীষ্মকালে পুরোপুরি মরে যায় না। বহু মানুষের দেহে এবং বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে নিম্ন পর্যায়ে এগুলির অস্তিত্ব রয়ে যায় যেগুলো উপযুক্ত সময়ে আবার বিস্তার ঘটানোর জন্য অপেক্ষা করে থাকে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক কার্যালয় প্যান আমেরিকান হেলথ অর্গানাইজেশনের সহকারী পরিচালক জারবাস বারবোসা বলেছেন, কীভাবে আবহাওয়া করোনভাইরাসটির গতিবিধিকে প্রভাবিত করে, তার একটি পরিষ্কার চিত্র পেতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের আরও ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ সময় লাগবে।

জুলিও ফ্র্যাঙ্ক একজন চিকিৎসক যিনি মেক্সিকোতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং এখন মিয়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি, তিনি কলেছেন, ‘জনগণ যদি পেশাদার বিশেষজ্ঞদের সতর্কবাণী এবং উপদেশগুলো মানতে ব্যর্থ হয়, তবে ফলাফল বিপর্যয়কর হবে।’

 

 



 

Show all comments
  • Milton Roy ২৯ মার্চ, ২০২০, ১:২৬ এএম says : 0
    প্রথমে বিদেশ ফেরতদের বাড়িতে quarantine করার উপদেশ দিয়া হয়েছিল।এতে নির্দেশনা না মানায় সংক্রমণ বাড়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হওয়ায় তারপর বাড়ি থেকে নিয়ে তাদের quarantine এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন ঠিক একইভাবে ঢাকা ফেরত মানুষকে বাড়িতে quarantine করার অনুরোধ করা হচ্ছে।কিন্তু তারা অধিকাংশই যেন ঈদের ছুটি পেয়েছে। এভাবে যদি সংক্রমণ বেড়ে যায়, তখন ঢাকা ফেরতদেরও বাড়ি থেকে নিয়ে special quarantine করাতে হবে। ''সময়ের এক ফোড়, অসময়ের দশ ফোড়''।
    Total Reply(0) Reply
  • Zillur Rahaman ২৯ মার্চ, ২০২০, ১:২৭ এএম says : 0
    করোনাভাইরাস একটু একটু করে বাতাসে ছড়ায় বটে। বাতাসের চেয়ে মানুষের সংস্পর্শে এটি দ্রুত ছড়ায়। যেভাবেই করোনাভাইরাস ছড়াক না কেন, শুধু সরকারের পদক্ষেপের ওপর ভরসা করে থাকলেই চলবে না, জনগণকেও দায়িত্বশীল ও সচেতন হতে হবে। সতর্কতা ও সচেতনতার জন্য দরকার প্রস্তুতি ও প্রতিরোধ। প্রতিরোধের জন্য দরকার কার্যকর সামাজিক বিচ্ছিন্নতা ও নিরাপদ দূরত্ব। কিন্তু লকডাউনকে মানুষ ঈদের ছুটি মনে করে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে যা খুবই উদ্বেগ ও আতঙ্কের। সামাজিক বিচ্ছিন্নতা কার্যকর ও তদারকির জন্য সরকার সেনাবাহিনী নিযুক্ত করেছে যা করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুধু থেকেই দরকার ছিল। দেরিতে হলেও এটা প্রসংশনীয় উদ্যোগ। সামাজিক দূরত্ব স্থাপন বা শারীরিক দূরত্ব স্থাপন সংক্রামক রোগ বিস্তার প্রতিরোধের জন্য সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের একগুচ্ছ ঔষধবিহীন পদক্ষেপ। সামাজিক দূরত্ব স্থাপনের উদ্দেশ্য হল সংক্রামক রোগ বহনকারী ব্যক্তির মাধ্যমে সংস্পর্শ এড়ানোর সম্ভাবনা কমানো। একইসাথে আক্রান্ত ব্যক্তি যেন অপরের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে না পারে তথা রোগ সঞ্চালন কমানো এবং সর্বোপরি মৃত্যুহার কমানো। করোনাভাইরাস যেভাবে দ্রুত গতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে উঠছে তা বিবেচনায় রেখে আরও সতর্কতা অবলম্বনের কোনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে দরকার সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতা।
    Total Reply(0) Reply
  • সন্ধানী সেচ্ছাসেবী সংঘ ২৯ মার্চ, ২০২০, ১:২৮ এএম says : 0
    নির্মম,কঠোর আর নিষ্ঠুর নিয়ন্তন ব্যাবস্তাই চিনের অবস্তা উন্নতি করতে পেরেছে। বাংলাদেশেও এমন হওয়া উচিৎ।
    Total Reply(0) Reply
  • জান্নাতুল নাঈম মনি ২৯ মার্চ, ২০২০, ১:২৯ এএম says : 0
    বিজ্ঞানীদের উপর প্রেশার না বাড়িয়ে আসুন আমরা নিজেরা কিছু জ্ঞান খাটাই!! পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন সুশৃঙ্খল মানবিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ নিয়ে জীবন যাপন করি। মেডিকেল স্যায়েন্সে ড্রাগ বা মেডিসিন হল সবার শেষে। আগে হল ডিসিপ্লিন দ্যান ডায়েট। আর মানবিকতা মূল্যবোধ হল সবার আগে। প্রকৃতির সব কিছু যেন মানুষ থেকে নিরাপদ থাকে। Allah bless Us..!
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ তোফায়েল হোসেন ২৯ মার্চ, ২০২০, ১:৩০ এএম says : 0
    খুবই ভালো খবর, সত্যিই তেমনটি যেন হয়। আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন।
    Total Reply(0) Reply
  • md.ataur rahman ২৯ মার্চ, ২০২০, ৯:১৫ এএম says : 0
    Allah gives us life & Allah will take on time.Allah gives the holy Quran to follow 100%.then we actually Muslims.that's the meaning of kalima.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ