মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বিশ্বের অন্যতম জনবহুল দেশটিতে যখন করোনাবিরোধী লড়াইয়ে ব্যাস্ত। এমন সময় ভারতে করোনাবিরোধী সরঞ্জামের তীব্র ঘাটতির মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইহুদিবাদী ইসরাইল থেকে শত শত কোটি ডলারের অস্ত্র কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। স্বাস্থ্যসেবার জন্য একান্ত প্রয়োজনীয় মুখোস বা মাস্ক কিংবা সুরক্ষা বা প্রোটেকটিভ সরঞ্জামের যখন মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে তখন এ অস্ত্র কেনার সিদ্ধান্ত নিলেন মোদি।
চলতি সপ্তাহে এক বিবৃতিতে নয়াদিল্লি সরকার জানায় যে ভারতকে ১৬ হাজার ৪৭৯টি নেগেভ হালকা মেশিন গান সরবরাহ করবে ইহুদিবাদী ইসরাইল। অস্ত্র চুক্তি গতকাল সই করা হয়েছে। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতের প্রতিরক্ষা ক্রয় পরিষদ বা ডিএসি ইসরাইল থেকে অস্ত্র কেনার এ চুক্তি অনুমোদন করেছিল। ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, এ সব অস্ত্র অগ্রবর্তী ঘাঁটিতে মোতায়েন সেনাদের আস্থা বাড়াবে এবং প্রয়োজনীয় যুদ্ধ সক্ষমতা দেবে।
এদিকে, অস্ত্র কেনার ঘটনায় মোদি সরকার সমালোচনার ঝড়ে পড়েছে। করোনাভাইরাস সংকট মোকাবেলায় ভারত সরকারের ল্যাজেগোবরে অবস্থাকে কেন্দ্র করে সমালোচনার এ ঝড় উঠেছে।
ভারতে করোনাবিরোধী লড়াইয়ের অগ্রবর্তী ঘাঁটিতে রয়েছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এ কথা বলে স্বাস্থ্য কর্মী ও চিকিৎসকরা তাদের জন্য কোভিড-১৯ বিরোধী যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত পূর্ণ সুরক্ষা সরঞ্জামের দাবি তুলেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ দাবি তোলেন তারা। খোদ ভারতের রাজধানী দিল্লিতে একজন চিকিৎসক, তার স্ত্রী ও কন্যা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর প্রকাশের পরই এ দাবি তোলা হয়।
ভারতের প্রোগেসিভ মেডিকস অ্যান্ড সায়েন্টিস ফোরামের সভাপতি হারজিত সিং ভাট্টি বলেন, স্বাস্থ্যসেবা পেশায় জড়িতরা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সবচেয়ে বড় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। তুর্কি সংবাদ মাধ্যমে আনদালু জানায় তিনি বলেছেন, এ অবস্থায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন এই যে স্বাস্থ্য কর্মীদেরকে সুরক্ষার জন্য পর্যাপ্ত মুখোস বা মাস্ক, গাউন, হেড কভার বা মাথা ঢাকার বস্ত্রসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহ করা হোক।
ইহুদিবাদী ইসরাইলের কাছ থেকে অস্ত্র কেনার যে চুক্তি নয়াদিল্লি করেছে তার সমালোচনায় নেমেছেন ভারতের মানবাধিকার কর্মী ও রাজনীতিবিদরাও। মানবাধিকার কর্মী কবিতা কৃষ্ণান প্রশ্ন তোলেন, করোনা সংক্রান্ত ত্রাণ সহায়তা, চিকিৎসা অবকাঠামো, বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা এবং করোনা নির্ণয়ের পরীক্ষাসহ এ খাতকে অগ্রাধিকার দেয়ার বদলে সরকার কেনও সামরিক খাতে ব্যাপক অর্থ ব্যয় করছে?
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং বৈশ্বিক রাজনীতির অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক অচিন বিনায়ক ভারত সরকারের পদক্ষেপ প্রসঙ্গে বলেন, এটি নজিরবিহীন এবং কঠোর নিন্দা যোগ্য। তিনি আরও বলেন, একশ ৩০ কোটি মানুষের দেশ ভারতের প্রতিটি রুপি সত্যিকার বিপদ করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ব্যয় করা প্রয়োজন। এদিকে, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অপূর্ব আনন্দ বলেন, করোনা সংকটের সময়ে অস্ত্র কেনার মধ্য দিয়ে ভারতকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের মতো কঠোর বাধানিষেধের নিরাপত্তামূলক অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে।
এদিকে, ইরানের ইংরেজি নিউজ চ্যানেল প্রেসটিভিকে লেখক এবং লন্ডন পোস্টের রাজনৈতিক বিশ্লেষক শহিদ কোরেশি সম্প্রতি বলেছেন, মোদি ভারতের বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুতে পরিণত হতে চলেছেন। তিনি এনআরসি এবং সিএএ’র প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, নেতানিয়াহুর কাছ থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন মোদি এবং এমন বিল অনুমোদন করেছেন যা ভারতের মুসলিম জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। সূত্র: মিডল ইস্ট আই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।