Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

‘করোনা আতঙ্কে ফুটবল এখন গুরুত্বহীন’

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ মার্চ, ২০২০, ৮:১৫ পিএম

ঘরোয়া ফুটবলের মর্যাদাপূর্ণ আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ছয়বারের চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনী লিমিটেডের পর্তুগিজ কোচ মারিও লেমোস বলেছেন,‘করোনাভাইরাস আতঙ্কে বিশ্বের সব দেশেই ফুটবল এখন গুরুত্বহীন।’ মঙ্গলবার নিজের ফেসবুক পেইজে আবাহনী সমর্থক তথা বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের উদ্দেশ্যে এক ভিডিও বার্তায় কথাটি বলেন তিনি।

প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের প্রভাবে পুরো বিশ্বই এখন প্রায় অচল। বিশ্বব্যাপী ক্রীড়াঙ্গনও এর বাইরে নয়। এই ভাইরাসের সংক্রামণ থেকে বাঁচতে বর্তমানে বিশ্বের সব দেশেরই খেলাধুলা বন্ধ। স্থগিত করা হয়েছে ফুটবল, ক্রিকেটসহ নামী সব ক্রীড়া আসরের খেলা। বাংলাদেশেও ফুটবল. ক্রিকেট, হকিসহ সব ধরণের খেলা বন্ধ রয়েছে। ঘরোয়া ফুটবলের সর্বোচ্চ আসর বিপিএলের খেলা বন্ধ থাকায় ক্লাব থেকে ছুটি পেয়ে বাড়ি চলে গেছেন স্থানীয় ফুটবলাররা। যদিও বিদেশি কোচ ও ফুটবলাররা ঢাকাতেই অবস্থান করছেন। তবে তারা রয়েছেন অনেকটা স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাইনে। তাদেরই একজন ঢাকা আবাহনীর প্রধান কোচ মারিও লেমোস। করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে তিনি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করলেও রয়েছেন সচেতন। খেলা নেই, তাই দলের অনুশীলনও নেই। এমন অবস্থায় মারিও লেমোস অলস দিন কাটাচ্ছেন টিভি দেখে এবং ফেসবুক ও টুইটারে নিজেকে আবদ্ধ রেখে। এই অবসর সময়ে নিজের ফেসবুক পেজে করোনাভাইরাস নিয়ে নান সচেতনমূলক পোস্টও দিচ্ছেন লেমোস। মঙ্গলবার নিজের ফেসবুকে পেইজে এক ভিডিও বার্তায় এই পর্তুগিজ কোচ বলেন, ‘এই মুহূর্তে ফুটবল গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়। আপনারা চিন্তা করবেন না। যখন সবকিছু নিরাপদ হবে, ঠিক হয়ে যাবে-তখন আমরা ফের অনুশীলনে ফিরবো। আমরা দলকে প্রস্তুত করবো। লিগ শুরু হলে মাঠে ফিরবো। সেটা কোনো সমস্যা হবে না।’

বতর্মানে পুরো বিশ্বই এক কঠিন সময় পার করছে বলে উল্লেখ করেন মারিও লেমোস। তার কথায়,‘দুর্ভাগ্যবশত মানুষ কষ্ট ভোগ করছে। হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। মানুষ তাদের বাবা-মা, ভাই-বোনকে হারাচ্ছে। ব্যক্তি জীবনে আমি সব সময় ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করি। সেটা ভালো সময়ে হোক কিংবা খারাপ সময়ে। আমি আপনাদেরও (বাংলাদেশের মানুষ) ইতিবাচক থাকতে বলবো। আমি সবাইকে অবশ্যই ঘরে থাকতে বলবো।’

এখন সবচেয়ে জরুরি নিজেদের নিরাপদ রাখা-এমনটাই মনে করেন পর্তুগীজ কোচ লেমোস। এ নিয়ে তিনি বলেন,‘সবাই জানেন, আমি এই মুহূর্তে বাংলাদেশে আছি। এ সময়টা আমাদের কাজে লাগাতে হবে। ঘরে থাকতে হবে। সবাইকে সুরক্ষার মধ্যে থাকতে হবে, পরিবার ও সমাজকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। ইউরোপ ও এশিয়ায় আমার পরিবার-বন্ধুরা আছে। আমি সবার কথা চিন্তা করছি। এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে আমাকে লড়াই করে জিততেই হবে। ঘর থেকে এই ভাইরাসরোধে কাজ করতে হবে আমাদের সবাইকে। আমরা ভাইরাসের চেয়েও অনেক বেশি শক্তিশালী। আশা করছি, দ্রুত সবকিছু স্বাভাবিক হবে। তখন আমরা আবার ফুটবলে ফিরবো এবং অনুশীলনসহ যাবতীয় কাজ শুরু করতে পারবো।’

অন্যদিকে বিপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজনের আত্মীয়-স্বজন, পরিবার-পরিজন সবাই স্পেনে আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করলেও তিনি এখন অবস্থান করছেন ঢাকায়। তার স্ত্রী ঘুরতে গেছেন ভারতের গোয়ায়। স্পেন, বাংলাদেশ ও ভারতে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস হানা দেয়ায় বেশ উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে ব্রুজনের। তবে পেশাদারি ভুবনে তো সবকিছু থমকে থাকে না কখনোই। উদ্বেগের এই সময়েও নিজের কাজ করে যাচ্ছেন অস্কার ব্রুজন। করোনাভাইরাস আতঙ্কে এএফসি কাপ ও বিপিএল সহ সব খেলা বন্ধ থাকলেও অখন্ড অবসরে বসে নেই বসুন্ধরার ৪২ বছর বয়সী এই স্প্যানিশ কোচ। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যেও চালিয়ে যাচ্ছেন কাজ। কষছেন মাঠের ছক। মঙ্গলবার মুঠোফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে অস্কার বলেন,‘মাঠের অনুশীলন বন্ধ থাকলেও লিগে আমাদের সর্বশেষ ম্যাচের (চট্টগ্রাম আবাহনীর কাছে ৪-৩ গোলের হার) বিশ্লেষণ করে বেশি সময় কাটছে। আমাদের পরবর্তী প্রতিপক্ষের ম্যাচও দেখছি। ছেলেরা যেন সেরা ফিটনেস নিয়ে অনুশীলনে ফিরতে পারে, সেজন্যও কোচিং স্টাফদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করছি।’ তিনি যোগ করেন,‘আমার স্ত্রী এখন গোয়াতে আছে, দ্রুতই ফিরবে সে। পরিবার এবং বন্ধুরা স্পেনে ঘরবন্দী হয়ে আছে। নিয়মিত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে।’ অস্কার আরো বলেন,‘স্পেনের সরকার আগামী ১২ এপ্রিল পর্যন্ত জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। এর অর্থ হচ্ছে, সবাইকে ঘরে থাকতে হবে। হাসপাতালগুলোতে যে বিপর্যয়কর অবস্থা তৈরি হয়েছে, তা এড়াতে চাইছে সরকার। তবে এখন সবাই করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্ক। কিন্তু সামনের সপ্তাহটা আরো কঠিন হবে বলে আমি মনে করি। তবে আশা করছি এপ্রিলের শেষ দিকে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে এবং স্পেন ও বাংলাদেশসহ সব দেশের পরিস্থিতি দ্রুতই ভালো হয়ে যাবে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ