নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বিশ্বব্যাপী নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে পিছিয়ে গেছে একের পর এক সব ক্রীড়া ইভেন্ট। তবে একগুয়েমি সিদ্ধান্তে অটল থাকায় প্রশ্ন উঠেছে টোকিও অলিম্পিক কি নির্ধারিত সময়ে শুরু হবে, নাকি পিছিয়ে যাবে? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে চার সপ্তাহ সময় নিয়েছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি)।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বেই জীবনযাত্রা থমকে গেছে। তবে এরই মধ্যে নির্ধারিত সময়ে টোকিও অলিম্পিক শুরু হচ্ছে ধরে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে আইওসি ও আয়োজক জাপানের অলিম্পিক কমিটি। ‘নির্ধারিত সময়েই হবে অলিম্পিক’-এটা ধরে নিয়েই আইওসি অ্যাথলেটদের প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে বলেছে। এ নিয়ে সমালোচনাও কম হচ্ছে না। অলিম্পিক স্থগিতের দাবি উঠেছে চারপাশ থেকেই। এই দাবি আরও জোড়দার হয়েছে কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার টোকিও অলিম্পিকে অংশ না নেয়ার ঘোষণায়। অস্ট্রেলিয়ার অলিম্পিক কর্তৃপক্ষ প্রথমে খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেয়ার তাগিদ দেয়। দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে অ্যাথলিটদের টোকিও ভ্রমণের কোনো সুযোগ নেই। অস্ট্রেলিয়ার আগে এই তালিকায় প্রথমে নাম লেখানো দেশ কানাডা। দেশটির অলিম্পিক ফেডারেশন সাফ জানিয়ে দেয়, স্থগিত হয়ে ২০২১ সালে অলিম্পিক আয়োজিত হলেই শুধু তাতে অংশ নেবে কানাডা। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানিসহ কয়েকটি দেশ টোকিও অলিম্পিক পেছানোর আবেদন জানিয়ে আসছিল বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এই দুই দেশের অংশগ্রহন না করার কথা জানানোর পর সরে দাঁড়ালেন জাপানেরই বিশ্বকাপজয়ী নারী ফুটবলার নাহোমি কাওয়াসুমি। করোনাভাইরাস সংক্রান্ত যেকোনো ঝুঁকি এড়াতে সিদ্ধান্ত তার। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে অবশ্য ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন অলিম্পিক স্থগিতের। তার চব্বিশ ঘণ্টা না পেরোতেই অলিম্পিকের টর্চ রিলে ইভেন্ট থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন নাহোমি।
দেশটির ২০১১ নারী বিশ্বকাপজয়ী দলের গুরুত্বপ‚র্ণ সদস্য ৩৪ বছর বয়সী নাহোমি। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে নিউজার্সিতে স্কাই বøু-এফসি ক্লাবের হয়ে খেলছেন। নিউইয়র্ক শহরে করোনা ছড়িয়ে পড়ার পর নিজের ও সংশ্লিষ্ট সবার ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি এড়াতে টুইটারে অলিম্পিকের টর্চ রিলে থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা জানান জাপান জাতীয় দলের তারকা।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শেষ পর্যন্ত গতকাল পার্লামেন্টের অধিবেশনে বলেছেন, ‘করোনাভাইরাস মহামারির উদ্ভ‚ত পরিস্থিতির কারণে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত হবে না।’ ফলে অলিম্পিক স্থগিত ঘোষিত হওয়া এখন প্রায় নিশ্চিত। তিনি আরও জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি আইওসির প্রেসিডেন্ট টমাস বাখের সঙ্গে কথা বলবেন। সব দেশের অলিম্পিকে অংশগ্রহণের পরিপ‚র্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ গুরুত্বপ‚র্ণ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আবে বলেন, ‘তিনি মনে করেন না বর্তমান পরিস্থিতিতে তা সম্ভব।’
আইওসি অবশ্য এর আগে বলেছিল, অলিম্পিক আয়োজনের একটি বিকল্প পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি পরীক্ষা করে দেখবে। সন্দেহ নেই জাপানের প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য আইওসিকে এখন সেই পথে অগ্রসর হতে আরও বেশি অনুপ্রাণিত করবে। ফলে ধরে নেওয়া যায়, জুলাই মাসে টোকিওতে অলিম্পিকের আয়োজন বসছে না। তবে কবে নাগাদ অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হতে পারে, সেটাও এই মুহ‚র্তে নিশ্চিত নয়।
তবে ২০২০ সালের অলিম্পিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এ বছর অনুষ্ঠিত না হয়ে এক বছর পর, অর্থাৎ ২০২১ সালে তা অনুষ্ঠিত হতে পারে। আর সে রকম কিছু হলে সেটা হবে অলিম্পিকের ইতিহাসে প্রথম।
এরআগে গতকাল জরুরি বৈঠক করেছে আইওসির নির্বাহী বোর্ড। সেই বৈঠকেই চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চার সপ্তাহ সময় নিয়েছে আইওসি। কাল এক বিবৃতি সংস্থাটি বলেছে, ‘বিশ্বজুড়েই অবস্থা দিনকে দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে আইওসি পদক্ষেপ নিয়েছে। আইওসি ২০২০ অলিম্পিকের আয়োজক কমিটি, জাপানি কর্তৃপক্ষ ও টোকিও মেট্রোপলিটন সরকারের সঙ্গে একযোগে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করেছে। অলিম্পিকের ওপর এর প্রভাব কতটুকু পড়তে পারে কিংবা অলিম্পিক স্থগিত করতে হয় কি না সেটিও আমরা দেখছি। আইওসি দৃঢ়তার সঙ্গেই জানাচ্ছে এই বিষয়ে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যেই চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’
তবে আইওসি এটাই জানিয়ে দিয়েছে টোকিও অলিম্পিক একেবারেই বাতিল করে দেওয়া নিয়ে তারা মোটেও ভাবছেন না, ‘আইওসির নির্বাহী বোর্ড মনে করে টোকিও ২০২০ অলিম্পিক গেমস বাতিল করে দিলে কোনো কিছুরই সমাধান হবে না বা কারও কোনো উপকার হবে না। তাই বাতিল করা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।’ তবে অলিম্পিক ছোট পরিসরে আয়োজনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়নি আইওসি।
অলিম্পিক নিয়ে শঙ্কা দিনকে দিন ঘনীভ‚ত হচ্ছে। তবে এরই মধ্যে গ্রিস থেকে অলিম্পিক শিখা চলে এসেছে জাপানে। করোনা আতঙ্কের মধ্যেই সেটি দেখতে হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।