মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে ক্রমশ বেড়েই চলেছে মৃত্যু। চীনের উহান প্রদেশের থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া কোভিড-১৯ বিশ্ব মহামারিতে রোববার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৩৫ হাজার ১৫৭ জনে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৪ হাজার ৪৩৭ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯৬ হাজার ৯৫৮ জন।
এই মহামারির সবচেয়ে ভয়াবহ চিত্র দেখা গেছে ইতালিতে। করোনাভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে দেশটির সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত লম্বার্ডি অঞ্চলের কর্তৃপক্ষ। শনিবার রাত থেকে কার্যকর হওয়া সেসব পদক্ষেপে বাইরের সবরকম খেলাধুলা এবং শারীরিক কর্মকান্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি ব্যক্তিগতভাবেও কোন কিছু করা যাবে না।
শনিবার ইতালিতে করোনাভাইরাসে প্রায় ৮০০ মানুষের মৃত্যু হওয়ার পর দেশটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৬৫১ জনের মৃত্যু হওয়ায় দেশটিতে ৫ হাজার ৪৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। জরুরি সরবরাহ ব্যবস্থা ছাড়া সবরকমের ব্যবসাবাণিজ্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। হাসপাতাল, সড়ক আর রেলপথের কাজ ছাড়া সবরকমের নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে বলা হয়েছে। দেশটিতে সপ্তাহের ছুটির দিনগুলোয় যে উন্মুক্ত বাজার বসতো, সেগুলো স্থগিত করে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আটই মার্চ থেকে লকডাউনের মধ্যে রয়েছে লম্বার্ডি অঞ্চল।
ইতালিজুড়ে ‘প্রয়োজনীয়’ ছাড়া সবরকমের ব্যবসা বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জুজেপ্পে কোন্তে। তবে কোন ব্যবসাগুলোকে ‘প্রয়োজনীয়’ বলে গণ্য করা হচ্ছে, তা তিনি পরিষ্কার করেননি। সুপারমার্কেট, ঔষধের দোকান, পোস্ট অফিস এবং ব্যাংক খোলা থাকবে এবং গণপরিবহন চালু থাকবে। কোন্তে একটি টেলিভিশন বক্তৃতায় বলেন, ‘আমরা দেশের উৎপাদন শ্লথ করবো, তবে একেবারে বন্ধ করে দেবো না।’ এই সময়টি যুদ্ধ পরবর্তী সবচেয়ে সংকটময় সময় বলে তিনি বর্ণনা করছেন।
স্পেন জানিয়েছে, দেশটিতে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ৩২ শতাংশ বেড়ে গেছে। মৃত্যুর দিক দিয়ে ইতালির পরেই এখন স্পেনের অবস্থান। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৪০০ জনের মৃত্যু হওয়ায় করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৭০০ জন। দেশটির ৪ কোটি ৬০ লাখ মানুষকে লকডাউন অবস্থায় থাকার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। শুধুমাত্র জরুরি কাজ, খাবার কেনা, ঔষধ কেনা অথবা কুকুরকে হাঁটানোর জন্য তারা বাইরে বের হতে পারবেন।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সতর্ক করে দিয়েছেন যে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শ্লথ করতে জনগণ যদি সহায়তা না করে, তাহলে দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়তে পারে। ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, যারা সামাজিক বিচ্ছিন্নতার বিষয়গুলো মানছেন না, তারা দেশের জন্য ‘বিপজ্জনক’ এবং ‘দায়িত্বহীন’। দেশটিতে ১২,৫০০ জনের বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছে এবং ৫৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ডু কুমো তরুণদের সতর্ক করে দিয়েছেন, যাতে তারা দলবদ্ধভাবে চলাফেরা না করে। তিনি বলেছেন, ‘এটা জনস্বাস্থ্যের ব্যাপার এবং আপনি অন্য মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারেন না, এমনকি আপনার নিজের স্বাস্থ্যের জন্যেও নয়।’
এদিকে জার্মানিতে শনিবার একদিনেই ৪ হাজার ৫২৮ জন আর রোববার একদিনেই দেশটিতে ২ হাজারের বেশি মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে সেখানে এখন করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ২২ হাজার ৩৬৪ জনে দাঁড়িয়েছে। আর মৃতের সংখ্যা ৮৪ জন। সুস্থ হয়েছেন মাত্র ২০৯ জন। সূত্র : রয়টার্স, আল-জাজিরা, এপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।