বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
করোনোভাইরাস নিয়ে উদ্বেগ আতঙ্ক সর্বগ্রাসী রূপ ধারন করছে প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটে। চিকিৎসা সেবায় জড়িতরা নির্ভার নয়। তারা অবস্থান করছেন চরম ঝুঁকিতে। দ্রæত সংক্রমণ ভাইরাস করোনার ভয়াবহ বিস্তার ঝুঁকির মধ্যে সিলেটে কর্মরত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলা বাহুল্য। সেকারণে ভেতরে ভেতরে অজানা আতঙ্ক। প্রবল মানসিক চাপ নিয়ে কর্তব্য চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
ইতোমধ্যে কোনো নিরাপত্তা সামগ্রীই প্রদান করেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দেয়া হয়নি পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্টও (পিপিই)। সরকারি হাসপাতালগুলোতে কিছু নিরাপত্তা সামগ্রী প্রদান করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে সিলেট ওসমানী হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইউনুছুর রহমান বলেন, প্রটেকশন প্রয়োজনীয় রয়েছে। গতকাল দুশ’ এপ্রোন সংগ্রহ করলেও ৫শ’ এপ্রোনসহ সংগ্রহ করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কিছু দুষ্কৃতিকারী নিরাপত্তা নিয়ে বিভ্রান্তমূলক তথ্য প্রচার করছে বলেও তিনি জানান।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য সেবায় নিযুক্ত কর্মীদের তথ্যমতে, রোগীদের নিবিড় চিকিৎসা সেবা প্রদানে বিরাট বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, মনোবল। সেই মনোবল অটুটে অপরিহার্য উপকরণ নিরাপত্তা সামগ্রি। হাসপাতালে পর্যাপ্ত মাস্ক, গ্লাভস, এপ্রোন ও জীবাণুনাশক অপ্রতুলতা থাকায় চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীরাও সংক্রমণের ঝুঁকিতে।
সিলেট রাগীব-রাবেয়া হাসপাতালের এক মেডিসিন চিকিৎসক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যক্তিগত নিরাপত্তায় চিকিৎসকদের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ। এছাড়া হাঁচি-কাশিসহ সব ধরনের সংক্রমণ নিয়ে রোগীরা হাসপাতালে ঢুকছেন।
সিলেট উইমেনস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এমদাদ হোসেন বলেন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে বৈঠক হয়েছে। করোনার প্রাথমিক লক্ষণ আক্রান্তদের আলাদাভাবে চিকিৎসা সেবা প্রদানের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। একই সাথে অন্য রোগিদের চিকিৎসা চলবে। সিলেট উইমেনস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে নিজেদের সুরক্ষা করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষে কয়েক দফা দাবি জানিয়ে কর্মবিরতিতে যান ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তাদের অভিযোগ, চিকিৎসকদের জন্য ন্যূনতম নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। তারা কর্মবিরতি পালন করছেন।
নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজের অভ্যন্তরীণ মেডিকেল কর্মকর্তা (আইএমও) নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক জানান, চিকিৎসা প্রদানে বড় বাধা হয়ে দাড়িয়েছে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা। সরকার পক্ষ বা প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সুরক্ষার জন্য তেমন কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না চিকিৎসা সংশ্লিষ্টদের জন্য।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগে কর্মরত ডা. কায়সার আহমদ খোকন জানিয়েছেন, মাস্ক, গাউনসহ নিরাপত্তা সরঞ্জাম এখনো পর্যাপ্ত পরিমাণে সরবরাহ করা হয়নি হাসপাতােেল। তাই নিজ নিরাপত্তায় রোগীদেও চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন অনেক চিকিৎসক। এ মুহূর্তে হাসপাতালে সর্দি, কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টের রোগীদের সরাসরি দেখার মতো পরিস্থিতি নেই বলে মনে করেন তিনি। এ জন্য তাদের বিশেষ কক্ষে পাঠানো হচ্ছে। প্রাইভেট হসপিটাল এন্ড ডায়গনস্টিক সেন্টার ওনার্স এসোসিয়েশন সিলেটের সভাপতি ডা. নাসিম আহমদ বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের কাছাকাছি যাওয়ায় দেশে চারজন চিকিৎসককে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে, এমন খবরেও সিলেটের চিকিৎসকদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। পূর্ব প্রস্তুতি না থাকায় সেবা প্রদানের বদলে খোদ চিকিৎসা সংশ্লিষ্টরা আতঙ্কগ্রস্থ। দেশে পারসোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট বা আত্মরক্ষামূলক সরঞ্জামের (পিপিই) পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় রোগীদের কাছাকাছি গিয়ে চিকিৎসাসেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
সিলেটের সিভিল সার্জন প্রেমানন্দ মন্ডল বলেন, এ ব্যাপারের দ্রুতই নির্দেশনা আসতে পারে বলে আশাবাদী তিনি। গত শুক্রবার সিলেট শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য খোলা আইসোলেশন সেন্টারের জন্য পারসোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট বা আত্মরক্ষামূলক সরঞ্জাম (পিপিই) সরবরাহ করেছে সরকার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে পিপিই হস্তান্তর করেন সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কর্তৃপক্ষ। এব্যাপারে সিলেট শহীদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সুশান্ত কুমার মহাপাত্র বলেন, পারসোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই) সামগ্রি গ্রহণ করেছি, তবে এর আগে স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা হয়েছিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।