Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাঁশের সাঁকোতে ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার

নজির হোসেন নজু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার ১ নম্বর কামারপুকুর ইউনিয়নের পশ্চিম অসুরখাই ও পূর্ব অসুরখাই গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে চিকলী নদীর ওপর কাঁচারীঘাটে দীর্ঘদিনেও একটি সেতু নির্মাণ করা হয়নি। এতে কামারপুকুর ইউনিয়নের পূর্ব অসুরখাই, কোরানীপাড়া, ফাজিলপুর, ঘোনপাড়া, সরকারপাড়া গ্রামসহ আশপাশের কমপক্ষে ১০টি গ্রামের মানুষ সৈয়দপুর শহরে আসতে চিকলী নদী পারাপারে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। নিরূপায় হয়ে জনগণ জীবন জীবিকার তাগিদে অনেকটা নড়েবড়ে বাঁশের সাঁকো অতিক্রম করে প্রতিদিন সৈয়দপুর শহরে আসা যাওয়া করতে হয়। যার ফলে প্রায় দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে এ জায়গায় সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিল ভুক্তভোগী গ্রামবাসীরা। কিন্তু অদ্যাবধি তা বাস্তবায়িত হয়নি। এ নিয়ে জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা যায়, সৈয়দপুর উপজেলা শহরের উত্তর-পূর্ব প্রান্ত ঘেঁষে কামারপুকুর ইউনিয়নের অবস্থান। এ ইউনিয়নের পূর্ব দিক দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ঐতিহ্যবাহী চিকলী নদী। আর এ ইউনিয়নের পশ্চিম অসুরখাই ও পূর্ব অসুরখাই গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকায় রয়েছে চিকলী নদীর কাঁচারীঘাট।
চিকলী নদীর কাঁচারীঘাটে পূর্বপাশে উপজেলার ১ নম্বর কামারপুকুর ইউনিয়নের পূর্ব অসুরখাইসহ আশপাশের কোরানিপাড়া, ফাজিলপুর, ঘোনপাড়া, মাঝাপাড়া, শাহ্পাড়া, সরকারপাড়ার কমপক্ষে ১০টি গ্রাম রয়েছে। কামারপুকুর ইউনিয়ন ছাড়াও সৈয়দপুর উপজেলা কাশিরাম বেলপুকুর এবং রংপুরের তারাগঞ্জের আলমপুর ইউনিয়নের উল্লিখিত গ্রামগুলো বিভিন্ন পেশার মানুষজন চিকলী নদীর কাঁচারীঘাট হয়ে সৈয়দপুর শহরে যাতায়াত করে থাকেন। অথচ এ চিকলী নদীর ওপর কাঁচারীঘাটে দীর্ঘদিনেরও নির্মিত হয়নি একটি সেতু। ফলে সেখানে নিজেদের আর্থিক সহায়তায় ও স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি একটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে চিকলী নদী পেরিয়ে সৈয়দপুর শহরে যাতায়াত করে থাকেন স্থানীয়রা।
সৈয়দপুর লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র মো. মোশফিকুর রহমান ও ছাত্রী নাবিলা জানান, প্রতিদিন তাদের বাঁশের সাঁকো দিয়ে নদী পেরিয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। শুষ্ক মৌসুমে তেমন সমস্যা না হলেও বর্ষার সময় তারা ভীষণ কষ্টে পড়েন। তখন চিকলী ব্রিজ অতিক্রম করে তাদের বিদ্যালয়ে যাতায়াত করতে হয়।
কামারপুকুর ইউনিয়নের পূর্ব অসুরখাই ঘোনপাড়া গ্রামের মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, কাজের জন্য প্রতিদিন তাকে বাড়ি থেকে খুব ভোরে রেব হয়ে রাতে ফিরতে হয়। চিকলী নদীর কাঁচারিঘাটে বাঁশের সাঁকো পারাপার খুব কষ্ট হয়। আর বর্ষা মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হওয়া যায় না। তখন অনেক কিলোমিটার ঘুরে বটতলী ব্রিজ দিয়ে কর্মস্থলে যেতে হয় তাকে।
রংপুরের তারাগঞ্জের আলমপুর ইউনিয়নের ফাজিলপুর শাহ্পাড়ার ষাটোর্ধ্ব হজরত আলী শাহ জানান, যুগ যুগ ধরে বাঁশের সাঁকো দিয়ে নদী পারপার হচ্ছে কয়েক গ্রামবাসী। সব নির্বাচনের সময় ভোটের জন্য এসে অনেক প্রার্থীই সেতু নির্মাণ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু নির্বাচিত হলে আর তাদের কোনো খোঁজখবর থাকে না।
কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম লোকমান বলেন, কাঁচারীঘাটে চিকলী নদীর ওপর সেতু নির্মাণের বিষয়ে উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় অনেকবার প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সেতু নির্মাণ হলে ১০ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে।
সৈয়দপুর উপজেলা প্রকৌশলী এ এফ এম রায়হানুল ইসলাম বলেন, চিকলী নদীর কাঁচারীঘাটে ৬৫ মিটার একটি সেতু নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্পের আওতায় একটি প্রস্তাব তৈরি সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়েছে। আশা করি এ বছরই প্রকল্পটি অনুমোদন পাবে। আর অনুমোদন পেলেই চিকলী নদীর কাঁচারীঘাটে সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সাঁকো

১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
২৫ জানুয়ারি, ২০২২
২০ জানুয়ারি, ২০২২
১৬ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ