Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাঁশের সাঁকোই ভরসা

জনপ্রতিনিধিরা কথা দিয়ে ভোট নেন, পরে আর খোঁজ রাখেন না

শফিকুল ইসলাম বেবু, কুড়িগ্রাম থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৫ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

সেতু নেই, তাই বাঁশের সাঁকোই ভরসা। অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করেন এ সাঁকো দিয়ে। এটি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বারো মাসিয়া নদীর ওপর নড়োবড়ো সাঁকোর অবস্থা। প্রতিদিন ছয়টি গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ চলাচল করছেন বাঁশের সাঁকো দিয়ে। এতে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে খুদে শিক্ষার্থী ও রোগীরা। দীর্ঘ দিনেও সেতু না হওয়ায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে আর কেউ খোঁজ রাখেনি। আর দুর্ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়ত। তাছাড়াও এ অঞ্চলের কৃষিপণ্য চাষাবাদ প্রচুর হলেও সময়মত যোগাযোগের ব্যবস্থা না থাকায় পাচ্ছে না ফসলের ন্যায্য মূল্য। সেখানে সেতু নির্মাণ করা হলে পাল্টে যাবে ৩০ হাজার মানুষের জীবন যাত্রারমান।

জানা গেছে, ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের বারো মাসিয়া নদীর ওপর নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোটি নিজেদের উদ্যোগে তৈরি করেছে গ্রামের মানুষ। এই সাঁকো দিয়ে ছয়টি গ্রামের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ চলাচল করছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। সাঁকোর পশ্চিম পাড়ে রয়েছে পশ্চিম কান্তাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঝাউকুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর গোরুকমন্ডপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফয়জুল উলুম মাদরাসা, গোরুকমন্ডপ কমিউনিটি ক্লিনিক। পূর্ব পাশে রয়েছে পশ্চিম ফুলমতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালাহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাওডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালার হাট আর্দশ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও পশ্চিম ফুলমতি উচ্চ বিদ্যালয় ও কমিউনিটি ক্লিনিক। দু’পান্তের গ্রামগুলোর যোগাযোগের সংযোগস্থল হওয়ায় এ সাঁকো দিয়ে হাজারও মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করেন। এতে হরহামেশাই ঘটে দুর্ঘটনা। রোগী থাকলে দুর্ভোগের মাত্রা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষদেরকে ভোটের সময় জনপ্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিয়ে আসলেও তা বাস্তবায়ন করেনি। প্রতিশ্রুতি ফুলঝুঁরিতে আটকে রয়েছে সেতু নির্মাণের। দেখাও মিলছে না ওই সব প্রার্থীদের। এমন অভিযোগ দু’পারে মানুষের। ফলে প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই পায়নি বঞ্চিত কান্তাপাড়া, ঝাউকুটি চরগোরুক, পশ্চিম ফুলমতি, জামাকুটি, কলাবাগা গ্রামের অধিবাসীরা। সে কারণে ওই গ্রামগুলোতে ছোয়া লাগেনি ডিজিটাল যুগের। পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর ভাগ্য পরিবর্তন সম্ভাবনা থাকলেও প্রধান বাঁধা এ বারো মাসিয়া ইন্দুর ঘাটের বাঁশের সাঁকো। নিজের চাহিদায়মতে চাঁদা সংগ্রহ করে তৈরি করা হয়েছে বাঁশের সাঁকো। সে সাঁকোর দু’পারের মানুষের প্রধান ভরসা। শুকনো মৌসুমে লেখা পড়ার জন্য স্কুল কলেজ গামী ছাত্রছাত্রীরা পারাপার হলেও বর্ষা মৌসুমে লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটে তাদের। সময়মত পারাপার করতে না পারায় ব্যবসায়ীরাও বিপাকে পড়েন অনেক সময়।

পশ্চিম ফুলমতি গ্রামের মীর হোসেন বলেন, একটি সেতুর অভাবে চল্লিশ বছর ধরে জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছি। সুস্থ মানুষ সাঁকো দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনায় পড়ছেন, অসুস্থদের অবস্থা বলার মতো নয়। বেশি সমস্যা হয় প্রসূতিদের নিয়ে। জনপ্রতিনিধিরা কথা দিয়ে ভোট নেন। ভোট পার হলে তারা আর খোঁজ রাখেন না।

স্বেচ্ছায় সাঁকো মেরামতকারী শাহাজামাল আলী জানান, ৭ বছর ধরে বাঁশের সাঁকোটি প্রতিদিন মেরামত করে আসছি। এলাকার বাঁশ ও ধান সংগ্রহ করে সাঁকোটি চলাচলের উপযোগী করে দেয়া হয়। এ জন্য ধান মৌসুমে ওই নদীর পাড়ে মাইক বাজিয়ে হালখাতা করে কিছু টাকা গ্রামবাসীদের কাছ থেকে নেয়া হয়। উঠানো টাকা দিয়ে রশি অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র ক্রয় করে সাঁকো চালু রাখা হয়।

নাওডাঙ্গা স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল আব্দুল হানিফ সরকার বলেন, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা অনেক কষ্ট করে ভাঙা সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করেন। তাছাড়াও কৃষকদের পণ্য আনা-নেওয়ায় অনেক কষ্ট হয়। অসুস্থ রোগীকে সময়মতো হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। এখানে সেতু নির্মাণ করা হলে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে।

নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান হাছেন আলী এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, বারোমাসিয়া নদীর ওপর সেতু নির্মাণ অতি প্রয়োজন। অনেক আগে থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি। দ্রুত কাগজপত্র সংগ্রহ করে মন্ত্রণালয়ে গিয়ে সেতু নির্মাণের চেষ্টা করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী আসিক ইকবাল রাজিব বলেন, বারো মাসিয়া নদীর ওপর ৩০ মিটার সেতু নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাঁশের সাঁকোই ভরসা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->