Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘লকডাউন’ নয়, বন্ধ ক্রিকেটপাড়া

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাসের কারণে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সব ধরনের ঘরোয়া খেলাধুলা স্থগিত করে দিয়েছে সরকার। সেদিনই প্রথম রাউন্ডের খেলার পর কেবল দ্বিতীয় রাউন্ডের জন্য প্রিমিয়ার লিগ স্থগিত করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। অনেকটা শঙ্কা আর আতঙ্ক নিয়েই দিন কাটছিল ক্রিকেটারদের, কেউ কেউ আসছিলেন অনুশীলনেও। অবেশেষে কেটে গেল সেই দোটানাও। গতকালই আনুষ্ঠানিক ঘোষনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটও বন্ধ করে দিয়েছে বিসিবি। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত বিসিবির অধীনে স্বীকৃত কোনো টুর্নামেন্ট বা খেলা মাঠে গড়াবে না।

গতকাল দুপুরে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে করোনা পরিস্থিতির কারণে সব ধরনের ক্রিকেট বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সভা শেষে বেরিয়ে বোর্ড প্রেসিডেন্ট জানান, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব কিছু স্থগিত, ‘আপনারা জানেন যে পুরো পৃথিবীতেই যা হচ্ছে, সব জায়গাতেই খেলা বন্ধ। আমাদেরও ক্রিকেট বন্ধ হয়ে গেছে। আমরাও প্রথম রাউন্ডের পর ডিপিএল বন্ধ করেছিলাম। তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আমরা দুদিন অপেক্ষা করি, অবস্থা বুঝি। এখন আমরা বসে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

কিছুদিন আগেই দেশের শীর্ষ ক্লাবগুলোকে নিয়ে শুরু হয়েছিল বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। দুই দিন (এক রাউন্ড) খেলা অনুষ্ঠানের পর সরকারি ঘোষণায় এটি স্থগিত হয়ে যায়। এবার এলো অনির্দিশ্টকালের স্তগিতাদেশ, ‘কিছু পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। প্রথমে মনে হয়েছে খেলোয়াড়রাও খেলতে চাচ্ছে, ক্লাবও কিছু কিছু চাচ্ছে। কিন্তু এখন ভিন্নমতও আসছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ক্রিকেটের সকল খেলা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আমরা স্থগিত করছি।’

নির্দিষ্ট সময় বেধে না দেওয়ার কারণ হিসেবে বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘নির্দিষ্ট সময় বলতে পারছি না। কারণ প্রতিদিন পরিস্থিতি বদল হচ্ছে। আমরা যদি জানতে পারতাম ৩১ মার্চের পর উন্নতি হবে, তাহলে ৩১ মার্চ বলতাম। তখন সব ঠিক হবে না আরও খারাপ হবে সেটা তো আমরা বলতে পারছি না।’ তবে বোর্ড প্রধানের ধারনা, খেলা বন্ধ থাকার ব্যাপারটা এবার বেশ লম্বা হতে চলেছে। অন্তত ১৫ এপ্রিলের আগে মাঠে খেলা ফেরার কোন সম্ভাবনা দেখছেন না তিনি, ‘আমার মনে হয় না ১৫ এপ্রিলের আগে ডিপিএল শুরুর সম্ভাবনা আছে। বরং এটা বাড়তেও পারে। শুধু খেলোয়াড়দের না, প্রত্যেক মানুষের সতর্ক হওয়া উচিত এই করোনাভাইরাস নিয়ে। কাজেই এখন ক্রিকেট খেলার পরিস্থিতি না’

খেলা তো বন্ধই। কিন্তু দাপ্তরিক কাজ আর ব্যক্তিগত অনুশীলন ছিল চালু। এবার সেটাও বোধহয় আর হচ্ছে না। অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য সব ধরনের ক্রিকেট বন্ধের ঘোষণার সময় পাপন জানিয়েছেন, খেলোয়াড় কর্মকর্তাদের এখন বাসায় থাকতে বলা হয়েছে। খুব জরুরী প্রয়োজন ছাড়া যেন কেউ না বের হন।

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড তাদের অফিস বন্ধ করে দাপ্তরিক কাজ বাসা থেকে করতে বলেছে কর্মীদের। বিসিবিও এই পথে হাঁটছে কিনা জানতে চাইলে বোর্ড প্রধানের কথা, পুরোপুরি লকডাউন না হলেও সবাইকেই বাসায় থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তারা, ‘ওটা আপনারা দেখতে পাবেন। প্রতিদিন পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। এখন একটা বলব, পরে আরেকটা তা তো হয় না। আমরা নিজেরাই সতর্ক হবো। আপাতত লিগ বন্ধ করেছি। এবং যা করা দরকার করা হবে। এটা শুধু আমাদের জন্য না, সকলের জন্য একটাা কথা যে জিনিসটাকে হালকা করে নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। কাজেই আমাদের সচেতন হতে হবে। যতটুকু সম্ভব বাসা থেকে না বেরুতে বলা হয়েছে। জরুরী ছাড়া খেলোয়াড় এবং বোর্ডে যারা আছে তাদের বাসা থেকে না বেরুনোর কথা বলা হয়েছে।’

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ এর কারণে এরমধ্যে বিশ্বের অনেক দেশই অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে ১৭২টি দেশে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসের ভয়াবহতা প্রতিনিয়তই হচ্ছে বিস্তৃত। বাংলাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। অফিস আদালত চালু থাকলেও মানুষের চলাচল সীমিত হয়ে আসছে। গতকাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ১৭ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে একজন বয়স্ক ব্যক্তি মারাও গেছেন। সবমিলিয়ে সারা বিশ্বে মৃতের সংখ্যা পেরিয়ে গেছে ৯ হাজার! মোট আক্রান্তের সংখ্যাও ছাড়িয়েছে ২ লক্ষ ২২ হাজার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ