Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনা রোধে দিল্লির পর এবার বাংলাতেও গোমূত্র উৎসব, নেতৃত্বে বিজেপি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ মার্চ, ২০২০, ৫:৩৪ পিএম

করোনাভাইরাস আতঙ্কে কাঁপছে সারা বিশ্ব। ভারতেও এর কারণে ইতিমধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতেও সেখানে এই মারণ ভাইরাস নিয়ে চলছে ধর্ম ব্যবসা ও রাজনীতি। এবং যথারীতি তাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি। করোনার প্রতিষেধক হিসেবে অনেকদিন ধরেই গরুর মূত্র পানের প্রচারণা চালাচ্ছে তারা। গত রোববার খোদ রাজধানী দিল্লিতে গোমূত্র পার্টির আয়োজন করেছিল হিন্দু মহাসভা। বিতর্কিত এই ঘটনার পরের দিনই এবার কলকাতায় গোরু পুজা এবং গোমূত্র পানের আসর বসালেন এক বিজেপি নেতা। এভাবে ভারতে ধর্মের নামে সবার চোখের সামনেই সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে। তাতে জোরদার উৎসাহ জোগাচ্ছে বিজেপি এবং হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি।

সোমবার জোড়াবাগানে ধুপ-ধুনো-ফুল-ফল-মিষ্টি দিয়ে গোরুকে পুজো করা হয়। তার পরে তামার ঘটিতে করে গোমূত্র বিতরণ করা হয়। স্থানীয় লোকজনের হাতে গোমূত্র ঢেলে দিতে দেখা গেছে ওই বিজেপি নেতাকে। করোনার কোনও প্রতিষেধক যে হেতু এখনও আবিষ্কার হয়নি, সে হেতু গোমূত্র পানই বাচার একমাত্র উপায় বলে দাবি করেছিলেন ওই নেতা। সেখানে যারা উপস্থিত ছিলেন, তারাও বেশ অকাতরেই করোনা রোধের ‘মহাঔষধ’ হিসেবে গোমূত্র পান করেন। তবে অনেককে না জানিয়েও খাওয়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশমকর্মী পিন্টু প্রামাণিক জানান, তাকে না জানিয়ে চরণামৃত বলে খাওয়ানো হয়েছিল গোমূত্র। পরে মঙ্গলবার ওই অজ্ঞাতপরিচয় বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ দায়ের করেন।

এ দিনই জোড়াসাঁকো এলাকায় এক বিজেপি সমর্থক গোরুকে মাতৃজ্ঞানে পুজো করে গো-মূত্র চরণামৃত হিসাবে বিলি করেন। আবার হুগলির ডানকুনিতে রীতিমতো বোর্ড লাগিয়ে দোকান খুলে গোমূত্র ও গোবর বিক্রি করতে দেখা যায় এক দুধ ব্যবসায়ীকে।

এসব ঘটনার প্রতিবাদ হচ্ছে খুবই সামান্য। কারণ, মোদি সরকার এমনভাবে সাধারণ মানুষের মনে ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করেছে যে, স্রোতের বিরুদ্ধে যেয়ে বিজ্ঞান ও চিকিৎসার কথা বলে জনরোষের মুখে পরতে চাচ্ছেন না কেউ। সেখানে এখন ধর্ম নিয়ে সচেতনতা মানে দেশদ্রোহিতা।তবে এর মধ্যেই গোমূত্র নিয়ে এই ‘অপপ্রচারের’ বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার দাবি জানিয়েছে বাম দল। সোমবার বিধানসভার অধিবেশনে শিক্ষা বাজেট নিয়ে আলোচনার সময় সিপিএম বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বলেন, সরকার পাল্টা প্রচারে মানুষকে বোঝাক, জীবজন্তুর মলমূত্র সেবন করলে বা গায়ে মাখলে রোগ সারা তো দূরের কথা, বরং বেড়ে যেতে পারে। জবাবি বক্তৃতায় এ প্রসঙ্গে না-ঢুকলেও পরে নিজের ঘরে পার্থ বলেন, ‘এটা অবৈজ্ঞানিক। কেউ কেউ এই অবৈজ্ঞানিক বিষয় নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।’ রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা গোরুর দুধে সোনা খোঁজেন, তারা যে গোমূত্রে করোনা সারাবেন, এতে আর আশ্চর্যের কী আছে?’ সূত্র: টিওআই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ