Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চীনে বইছে স্বস্তির হাওয়া, প্রাণ খুলে বেরিয়ে আসছে মানুষ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০২০, ৩:১৮ পিএম

চীনের ইয়াংশি রাজ্যের শিনুয়েন শহরে যেন প্রাণ ফিরেছে। স্থানীয়রা বের হচ্ছেন, ঘোরাফেরা করছেন। গতকালের আগের দিন পর্যন্ত ডরমিটরিতে অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মাহবুবুর রহমান মিরাজ। আজ জানালেন, তিনি গতকাল থেকেই আন্তর্জান্তিক শিক্ষার্থীদের ডরমিটরি থেকে বের হয়েছেন। অন্যরাও ঘোরাফেরা করতে পারছেন। শিক্ষকরা সবসময় তাঁদের খোঁজ-খবর রাখছেন। নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হচ্ছে সবার। তাঁদের খাবার-পানীয়সহ প্রয়োজনীয় যেকোনো জিনিস সরবরাহ করছেন। 'ওখানকার স্থানীয়দের চেয়ে আমাদের যেন আরো বেশি আগলে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয়', বললেন মিরাজ। শিক্ষকরা তাঁদের বলছেন, তোমরা দেশের ভবিষ্যত। তোমাদের কিছু হলে আমরা অপরাধী হয়ে যাবো। তাঁদের হাতে খরচের টাকাও দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
চীনের উহান থেকে ৪১১ কিলোমিটার দূরে ইয়াংশি রাজ্যের শিনুয়েন শহরে গত ২৬ জানুয়ারি থেকে কার্যত ‘লক-ডাউন’ (অবরুদ্ধ) অবস্থায় ছিলেন বাংলাদেশি এই শিক্ষার্থী। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দারা ঘরের বাইরে বের হওয়ার সুযোগ পেলেও তাঁর মতো শিক্ষার্থীরা পাননি। মিরাজ জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে চীন কর্তৃপক্ষ শুরু থেকেই অত্যন্ত সচেতন ছিল। বাড়তি সতর্কতা ছিল তরুণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে। তাঁদের শিক্ষকরা দিন-রাত পালা করে সব সময় শিক্ষার্থীদের দেখাশোনা করছেন।
এর আগে মিরাজ জানিয়েছিলেন, তাঁর কক্ষে এসে কর্তৃপক্ষ তাপমাত্রা পরীক্ষা করেছেন। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের বাইরে যেতে বারণ করছেন। তাঁরা কোনো ঝুঁকি নেবেন না।
মিরাজ জানিয়েছিলেন, ‘লক-ডাউন’ অবস্থায় তাঁদের পড়ালেখা অবশ্য বন্ধ থাকেনি। অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। তাঁকে মাস্ক, টিস্যু পেপার, হ্যান্ডওয়াশ ও প্রয়োজনীয় ওষুধসামগ্রী কিছুই কিনতে হয়নি। সবই বিশ্ববিদ্যালয় ও স্থানীয় শহর কর্তৃপক্ষ এবং কমিউনিস্ট পার্টি থেকে সরবরাহ করা হয়েছে।
চীন কর্তৃপক্ষ কিভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে- জানতে চাইলে বাংলাদেশি ওই শিক্ষার্থী বলেন, করোনাভাইরাস মহামারি আকারে দেখা দেওয়ার পরই চীনের শহরগুলোকে পরস্পরের কাছ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। ঠাণ্ডা-জ্বর জাতীয় যেসব উপসর্গ করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে দেখা দেয় সেগুলোর ওষুধ ফার্মেসি থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। এর কারণ হলো লোকজন যাতে প্রয়োজনে হাসপাতালে যায় ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে উপযুক্ত চিকিৎসা নেয়। কারো মধ্যে করোনার উপস্থিতি পেলে তাকে আলাদা করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, করোনাভাইরাস যখন ছড়িয়ে পড়ছিল তখন চীনা নববর্ষের ছুটি। এ সময় অন্তত এক মাস প্রায় সব কিছু বন্ধ থাকে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণে চীন কর্তৃপক্ষ তখন এক শহর থেকে অন্য শহরে যাতায়াত বন্ধ করে দিলেও খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখে। কোথাও খাবার ও চিকিৎসা বা স্বাস্থ্যসামগ্রী সংকট পড়লে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সেখানেই সেনাবাহিনীকে পাঠানো হয়। ওই অবস্থাতেও অনলাইনে যেসব অফিস চলা সম্ভব সেগুলো চলেছে। এ ছাড়া চীনের অর্থনৈতিক লেনদেনের বেশির ভাগই পরিচালিত হয় মোবাইল ফোনের অ্যাপসের মাধ্যমে। লোকজন নগদ টাকা খুব একটা ব্যবহার করে না। তাই অর্থনৈতিক লেনদেনে তেমন প্রভাব পড়েনি।
মিরাজ জানান, যারা বাইরে গেছে তাদেরই গায়ের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হয়েছে। তাপমাত্রা অস্বাভাবিক থাকলে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলোয় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সবচেয়ে বেশি যেসব কাজ করা হয়েছে তা হলো মাস্ক পরা, হাত ধোয়া ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা।



 

Show all comments
  • mohiuddin ১৫ মার্চ, ২০২০, ৪:০৯ পিএম says : 0
    সবার সচেতন হওয়া উচিত
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ