Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই

ডাক্তার ও ভাইরোলজিস্টদের সতর্কতা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০২০, ১২:০৩ এএম

করোনা ভাইরাস আর দশটি ফ্লুর মতো নয়। এ থেকে মৃত্যুর হার হয়তো কম। কিন্তু এই রোগকে সাধারণ ফ্লু হিসেবে দেখাটা বোকামি। ডাক্তার ও ভাইরোলজিস্টরা এই সতর্কতা উচ্চারণ করেছেন। ইয়াহু নিউজের খবরে বলা হয়, ইতালিতে দেশটির পুরো স্বাস্থ্য কাঠামোই বিপাকে পড়েছে। দেশটিতে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। ইতালির ডাক্তার বিয়াংকা টুইটারে লিখেছেন, ‘দয়া করে শুনুন। এখানে উত্তর ইতালিতে আমরা অনেক বড় ভুল করেছি। সবাই বলছিল যে, আরে এটা শুধু ফ্লু। আর এখন আমাদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র ধসে পড়ার মতো অবস্থা। সবাই কোনো গুরুত্ব না দিয়ে বাইরে বের হয়েছে। এখন আমাদের দাদারা বা বাবার বয়সীরা মারা যাচ্ছেন। করোনা ভাইরাস কোনো ফ্লু রোগ নয়।’ ডা. ড্যানিয়েল ম্যাচিনি ফেসবুকে এ নিয়ে লম্বা লেখা লিখেছেন। ৩২ হাজার বারেরও বেশি বার শেয়ার হওয়া ওই লেখায় ম্যাচিনি বর্ণনা করেছেন কীভাবে এক ভাইরাসের কবলে পড়ে ইতালির সম্প‚র্ণ স্বাস্থ্য কাঠামোই ভেঙ্গে পড়ার জোগাড়। ইতালির বারগামো শহরে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামিল আছেন ম্যাচিনি। তিনি লিখেছেন, ‘যুদ্ধ যেন রীতিমত বিস্ফোরিত হয়ে উঠেছে। দিনরাত লড়াই চলছে অবিরত। হাসপাতালের শয্যার প্রয়োজন নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। যেসব বিভাগ খালি পড়ে ছিল, সেখানেও রোগীতে ভর্তি হয়ে গেছে।’ তিনি আরও লিখেছেন এই ভাইরাসকে কোনোভাবেই ফ্লুর সঙ্গে তুলনা করা যাবে না। তিনি বলেন, ‘আমাকে দয়া করে বোঝান যে, কোন ফ্লু ভাইরাস এত নাটকীয়ভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে? এখনও অনেক মানুষ আছে, যারা ভয় পায় না বলে গর্ব করে। তারা ডাক্তারদের নির্দেশনা এড়িয়ে চলছে। নিত্যদিনের স‚চি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে প্রতিবাদও করছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এক মহামারি সংকট চলছে।’ অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজিস্ট প্রফেসর ইয়ান ম্যাক্যায় বলেন, এই ভাইরাসের ভয়াবহতাকে খাটো করে দেখা উচিত নয়। তিনি বলেন, তাকে অনেক মানুষই বলেন যে, করোনা ভাইরাস স্রেফ একটি ফ্লু। তারা একে বড় ঝুঁকি মনে করেন না। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি একে গুরুত্বের সঙ্গে না নিই, তাহলে যে কতটা বাজে অবস্থা হতে পারে, তা বোঝানো কঠিন।’ তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশে অত্যন্ত আধুনিক মেডিকেল দলকেও এমন স্রেফ শয্যা না থাকায় এমন সব সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে, যেখানে জীবন মরনের প্রশ্ন জড়িত। কারণ, অসুস্থ মানুষের সংখ্যা অত্যন্ত বেশি। সা¤প্রতিক দেশগুলোতে ইতালিয়ান সংবাদ মাধ্যমে এসেছে যে, কীভাবে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের সংকট পড়ে গেছে। হুবেই শহর, যেখান থেকে ভাইরাস ছড়িয়েছে, সেখানে মেডিকেল কর্মীরা রাত-দিন বিরামহীনভাবে কাজ করে গেছেন। এই ভাইরাস ইনফ্লুয়েঞ্জা নয়। গত সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রস আদানম নির্দিষ্ট করে বলে দিয়েছেন যে, করোনাভাইরাস মহামারিকে ফ্লুর সঙ্গে তুলনা করা উচিত নয়। তিনি বলেন, ‘এই ভাইরাস সার্স নয়, মার্স নয়, ইনফ্লুয়েঞ্জাও নয়। এটি খুবই ইউনিক বা অনন্য একটি ভাইরাস, যেটির নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে।’ মৌসুমি ইনফ্লুয়েঞ্জার চেয়েও এই ভাইরাস অনেক ভয়াবহ। তিনি বলেন, অনেক মানুষেরই মৌসুমি জ্বর বা ফ্লুর বিরুদ্ধে এক ধরণের প্রতিরোধ ক্ষমতা জন্ম নিয়েছে। কিন্তু এটি একেবারেই নতুন ভাইরাস, যার কোনো প্রতিষেধক নেই। মানুষের শরীরে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিরোধ ক্ষমতা এখনও জন্ম নেয়নি। এ কারণে এই ভাইরাস থেকে ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকি বেশি। অনেকে খুব মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। তিনি বলেন, এই ভাইরাসের বর্তমান মৃত্যুর হার ৩.৪ শতাংশ। মৌসুমি ফ্লুর ১ শতাংশেরও কম। তিনি বলেন, আমরা মৌসুমি ফ্লু প্রতিরোধের কথা বলিও না। এটি সম্ভবও নয়। কিন্তু করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সম্ভব। যদি কনটেইনমেন্ট করা যায়, তাহলে ইনফেকশন ছড়ানো বন্ধ হবে। মানুষের জীবন বাঁচবে। কনটেইনমেন্ট সম্ভব। ইয়াহু নিউজ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ