পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
গণমাধ্যমগুলো উগ্র জাতীয়তাবাদী উন্মত্ততা দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ
ইনকিলাব ডেস্ক : কাশ্মীরে নিরস্ত্র বিক্ষোভকারী ও শোকার্ত জনতার ওপর ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২১ জনে দাঁড়িয়েছে। তা সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ নিয়ে ভারতের নিন্দা না করে মুখ বুজে থাকায় কাশ্মীরিদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। কাশ্মীরে ভারতীয় বাহিনীর নিপীড়নের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহের প্রতীক হয়ে ওঠা তরুণ নেতা বুরহান ওয়ানিকে গত শুক্রবার ভারতীয় বাহিনী গুলি করে হত্যা করার পর ভূস্বর্গ খ্যাত এই উপত্যকায় সাম্প্রতিককালের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভ ঠেকাতে কারফিউ জারি, ইন্টারনেট ও সড়ক বন্ধ করলেও জনতার স্রোতকে ঠেকানো যায়নি। হাজার হাজার মানুষ বুরহানির মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ করেছে, নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে জড়িয়েছে।
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরের জামে মসজিদের ইমাম এবং সর্বদলীয় হুরিয়েত কনফারেন্সের নেতা মিরওয়েজ উমর ফারুক আলজাজিরাকে বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং ভারত নিরাপত্তা বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের নিন্দা না জানানোর ফলে প্রমাণিত হচ্ছে যে কাশ্মীরিদের জীবনের কোনো মূল্য নেই তাদের কাছে। কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রতিষ্ঠান এই সহিংসতার নিন্দা জানায়নি। কারণ তারা এর প্রয়োজন বোধ করছে। তারা এই স্থান থেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন এমন অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। তাকে শুক্রবার থেকে শ্রীনগরে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে।
উমর ফারুমের এই মতই প্রতিধ্বনিত হচ্ছে বহু পর্যবেক্ষক ও মানবাধিকার কর্মীদের মধ্যে। তারা বলেন, বুরহানির মৃত্যুর খবর প্রকাশে ভারতের গণমাধ্যমগুলো উগ্র জাতীয়তাবাদী উন্মত্ততা দেখাচ্ছে। বিদ্রোহী তরুণ এই নেতাকে ভারতের গণমাধ্যমগুলো সন্ত্রাসী বলে উল্লেখ করছে, অথচ তিনি ছিলেন কাশ্মীরি তরুণদের হার্টথ্রব। তিনি প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছিলেন, কোনো হিন্দু তীর্থযাত্রীর ওপর তারা হামলা করবেন না। লন্ডনে বসবাসরত কাশ্মীরি ঔপন্যাসিক মির্জা ওয়াহিদ বলেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে রাষ্ট্রযন্ত্র ও ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রচারণায় কোনো পার্থক্য নেই। দিল্লিভিত্তিক মানবাধিকার কর্মী গৌতম নাভলাখা বলেন, ভারতের সুশীল সমাজে এ ঘটনায় যেভাবে মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছেন তা অত্যন্ত সমস্যাসঙ্কুল। তারা বোধ হয় চরমপন্থা ও কাশ্মীরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারছে না। তারা বোধ হয় সব ভিন্ন মতাবলম্বীকে চরমপন্থী ইসলামী বলে দমাতে চান। কিন্তু কাশ্মীরের পরিস্থিতি তো ভিন্ন। তারা বুঝতে পারছেন না সেখানকার (কাশ্মীরের) জনগণের হৃদয় ও মন ভারতের সাথে নেই এবং এটা একটা বাস্তব তথ্য। কাশ্মীরের স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, নিহতের সংখ্যা ২২ এবং সুশীল সমাজ বলছে এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে চিকিৎসকরা জানান, বহু লোক গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। এদের মধ্যে অন্তত চারজনের অবস্থান সঙ্কটাপন্ন। তারা বলছেন, ভারতীয় সেনারা বিনা উসকানিতে সহিংসতার আশ্রয় নিচ্ছে এবং দেখামাত্র গুলি করে হত্যার নীতি অবলম্বন করছেন। আলজাজিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।