Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বেসরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি ৯ দশমিক ২ শতাংশ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০২০, ১২:০২ এএম

বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধি কমছেই; বাড়ছে সরকারের ঋণ। গত আট মাস ধরে টানা নামছে বিনিয়োগ বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান নিয়ামক বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি। আর চড়ছেই সরকারের ঋণের বোঝা। যাকে অর্থনীতির জন্য উদ্বেগের বলছেন বিশ্লেষকরা। বাংলাদেশ ব্যাংক গত সোমবার ব্যাংকিং খাতের ঋণের হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, জানুয়ারি শেষে বেসরকারি খাতে ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৫২ হাজার ৪৭৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এই অংক গত বছরের জানুয়ারির চেয়ে ৯ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে এই একই সময়ে ব্যাংক থেকে সরকারের নেওয়া মোট ঋণের স্থিতির পরিমাণ হচ্ছে এক লাখ ৬৩ হাজার ২৫৫ কোটি ১০ লাখ টাকা। যা ২০১৯ সালের জানুয়ারির চেয়ে ৬৫ দশমিক ০৫ শতাংশ বেশি।
তথ্য অনুয়াযী, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছর শেষে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ দশমিক ৩২ শতাংশ। আর সরকারের ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ১৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আর এটাকেই ‘এই মুহুর্তে’ বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান সমস্যা হিসেবে দেখছেন অর্থনীতির বিশ্লেষকরা।
উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ বাড়ার যে লক্ষ্য ধরেছে, বর্তমান অঙ্ক তার থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ পয়েন্ট কম। অন্যদিকে মুদ্রনীতিতে সরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয় ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ। বাড়তে বাড়তে জানুয়ারি শেষে তা ৬৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের চেয়ে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ। আগের মাস নভেম্বরে প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ। অক্টোবরে ছিল ১০ দশমিক ০৪ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে ১০ দশমিক ৬৬ শতাংশ। আগস্টে ছিল ১০ দশমিক ৬৮ শতাংশ। তার আগের মাস জুলাইয়ে ছিল ১১ দশমিক ২৬ শতাংশ। তার আগে জুনে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ দশমিক ২৯ শতাংশ; মে মাসে ১২ দশমিক ১৬ শতাংশ। এপ্রিলে ছিল ১২ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ, মার্চে ১২ দশমিক ৪২ শতাংশ। জানুয়ারি ও ফেব্রæয়ারিতে ছিল যথাক্রমে ১৩ দশমিক ২০ শতাংশ ও ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে ব্যাংক খাত থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ধরেছে সরকার। সাবেক অর্থ উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজ বলেন, এটা খুবই উদ্বেগের যে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ৯ শতাংশে নেমে এসেছে, যা মুদ্রানীতির লক্ষ্যের চেয়ে অনেক কম। মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, বাজেটে ঘোষিত ৮ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর বিকল্প নেই। এজন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। সুশাসন নিশ্চিত করে আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। উদ্যোক্তাদের মধ্যে আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। তানাহলে কিন্তু আমাদের সামনে বড় বিপদ অপেক্ষা করছে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর একে ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’ আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, এমনিতেই বিনিয়োগের অবস্থা খারাপ। বেশ কিছুদিন ধরে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ কম। তার উপর ব্যাংক থেকে সরকার প্রচুর ঋণ নেওয়ায় এই প্রবাহে আরও টান পড়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঋণ

৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৫ জানুয়ারি, ২০২৩
২৯ ডিসেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ