নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
টেস্টে দুর্বার। ওয়ানডেতে অপ্রতিরোধ্য। টি-টোয়েন্টির প্রথম ম্যাচেও স্পষ্টত আধিপত্য। তিন সংস্করণেই দুর্ধর্ষ ব্যাটিং-ফিল্ডিং মিলিয়ে ‘পারফেক্ট প্যাকেজ’ হয়ে উঠল বাংলাদেশ। বিপরীতে জিম্বাবুয়ের জন্য ‘জয়’ থেকে গেল ‘অধরা’। দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আজ বাঘের গর্জন শোনানোর অপেক্ষায় টাইগাররা। সাফল্য যেন ধরা দিতে গিয়েও ধরা দিচ্ছিল বাংলাদেশ শিবিরে। ঠিক সে সময় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটি আলোর ঝলকানিতে ধরা দিয়েছে সেই সাফল্য। শুধু ধরা দিয়েছে বললেও ভুল হবে। একেবারে সাফল্যের সুউচ্চ মিনার ছুয়ে গেছে। এখন বাকি শুধু একটি ম্যাচ। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে শেষ টি-টোয়েন্টিতে জিতে ‘সাফল্যের ষোলকলা’ পূর্ণ করতে চায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ব্রিগেড।
ওপেনার লিটন দাস ও তামিম ইকবাল এই সিরিজের প্রতিটি ম্যাচেই যেন ছাড়িয়ে গেছেন নিজেদের। ভেঙে তচনচ করে দিয়েছেন রেকর্ডবুকের সব পাতা। এখন যেকোন পাতা ওল্টালেই শুরুতে নাম আসবে এই জুটির। মহাকাব্যিক ইনিংস খেলে এই সিরিজে বাদবাকিদের একদম আড়াল করে দিয়েছেন এই দুই মহানায়ক। ইতিহাসে ‘আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট’ যেভাবে ক্রমেই রাজ্য দখল করতে করতে এগিয়ে গেছেন চূড়ান্ত সাফল্যের দিকে। ঠিক সেভাবেই নান্দনিক পুল শট, ডাউন দ্য উইকেটে এসে বাউন্ডারি, সুইপ, রিভার্স সুইপ, হুক শট, স্ট্রেইট ড্রাইভে ক্রীড়াপ্রেমীদের হৃদয় জয় করে নিয়েছেন তারা। অথচ এইতো ক’দিন আগেও তামিমকে নিয়ে সমালোচনা করার লোকের অভাব ছিল না। পরিস্থিতি বদলে গেছে। আজ সেই সমালোচকেরাই মুখে কুলুট এটে তামিম বন্দনায় ব্যস্ত। আসলে তামিমের দীর্ঘদিনের ক্যারিয়ারে উত্থান-পতন সবই ছিল। কিভাবে পরিস্থিতি নিজের অনূকূলে আনতে হয় তা তিনি জানেন। করেও দেখালেন। লিটন অবশ্য এতটা সমালোচিত হচ্ছিলেন না।
হারিয়ে যাওয়া মুস্তাফিজুর রহমান অনেক দেরিতে হলেও ফিরে পেয়েছেন নিজের পুরোনো ধার। অনেকদিন পর স্কোয়াডে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের অর্ন্তভুক্তিও ছিল দলের জন্য বড় প্রাপ্তি। গত ম্যাচে আমিনুল ইসলাম বিপ্লব দেখিয়েছেন দলের প্রয়োজনে তিনি কত বড় অস্ত্র। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ জানিয়েছিলেন, এখন থেকেই বিশ্বকাপের পরিকল্পনার কথা। দলপতির কথায় শোনা গিয়েছিল একটি দীপ্ত শপথ। মাঠে দেখা গেল তারই বাস্তবায়ন। নিষেধাজ্ঞার খড়গ থাকায় স্বাভাবিকভাবেই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সম্ভবনা কম সাকিব আল হাসানের। তবে তার অনুপস্থিতিতেও মাহমুদউল্লাহ-মুশফিক-তামিমরা জ্বলে উঠতে প্রস্তুত। আশা দেখাচ্ছেন সাইফউদ্দিন, আফিফ হোসেন, আমিনুল ইসলাম বিপ্লবেরাও। গত ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় সৌম্য সরকারও ব্যাটে-বলে দাপট দেখাতে মরিয়া।
বাংলাদেশ ৮-জিম্বাবুয়ে ৪। এই হল দু’দলের টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি লড়াইয়ের সমীকরণ। মানে জিম্বাবুয়ে জিততেও পারে বাংলাদেশের বিপক্ষে! বর্তমান ফর্মের বিচারে এই ভাবনা আসা অমূলক নয়। যেখানে বলে কয়ে টাইগাররা হারাচ্ছে সাবেক চিরপ্রতিদ্ব›দ্বীদের। সবশেষ তিন ম্যাচের প্রতিটিতেই জয় মাহমুদউল্লাহ বাহিনীর। তবে শেষ পাঁচ ম্যাচের দিকে তাকালে একটু ভয়ই পেতে হয়। বাংলাদেশ ৩, জিম্বাবুয়ে ২। আবার আফ্রিকার দলটি ম্যাচ দুটি জিতেছে খুলনাতে। ছোট ফরম্যাটে জিম্বাবুয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর সামর্থ্য রাখে যেকোন সময়। তাই অতি আত্মবিশ্বাসী না হয় কিছুটা সাবধানতা অবলম্বনই শ্রেয়। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের কারণে প্রায় হারতেই বসেছিল মাশরাফি মুর্তজার দল। তবে শেষে তরী ডুবে যায়নি।
তারপর থেকে আরও সাবধানী হয়ে উঠেছে টিম টাইগার্স। এই সিরিজের পর বাংলাদেশকে হতে হবে আরও সতর্ক। কারণ প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। সেখানে একটি ওয়ানডে ও একটি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। তারপর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও একটি পরীক্ষা দিতে হবে। বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ডের মাটিতে আইরিশদের বিপক্ষে চারটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ অনেকটাই এগিয়ে নেবে মাহমুদউল্লাহর দলকে। অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নিতে ইংলিশ কন্ডিশনে খেলাটা হবে উঠবে একটি প্লাস পয়েন্ট। তবে চিন্তা যতই বিশ্বকাপ কেন্দ্রিক হোক। আপাতত প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো, অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ও দলের বাকি সদস্যদের মাথায় চিন্তা একটাই। জিম্বাবুয়েকে সিরিজের শেষ ম্যাচে হারানো। তাহলে সাফল্যের ষোলকলাই পূর্ণ হয়ে উঠবে। বিশ্বকাপসহ পরবর্তী সিরিজেও অনুপ্রেরণা যোগাবে এই সিরিজ জয়ের আত্মবিশ্বাস। সেজন্য এই মুহুর্তে একটাই চাওয়া। শেষ ম্যাচে জয়। সফরকারিদের হোয়াইটওয়াশ করা। খালি হাতে বিদায় দেয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।