Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

করোনার কেন্দ্র পরিদর্শনে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং

মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪ হাজার ১৬ চীনে আক্রান্তদের ৭০ শতাংশই সুস্থ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ১৬ জনে। তবে আশার কথা, চীনে ভাইরাস আক্রান্ত ৭০ শতাংশ মানুষই চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর মধ্যেই চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে ভ্রমণ করলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

ডিসেম্বরে শেষের দিকে এই অঞ্চল থেকেই প্রথমে গোটা চীনে, এরপর বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, উহানে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর এই প্রথম শহরটি ভ্রমণ করলেন শি চিনপিং। এমন এক সময় তিনি উহান শহরে গেলেন যখন চীনের মূল ভূখন্ডে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমে এসেছে। এখন যাতে অন্যদেশ বিশেষ করে ইরান, ইতালি ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে নতুন করে এই ভাইরাস চীনে প্রবেশ করতে না পারে সে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বেইজিং। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হতেই উহান শহরটি অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। সেখান থেকে কাউকে বের হতে বা প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। এর মধ্যেই এলাকাটিতে প্রেসিডেন্টের সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, প্রেসিডেন্ট শি’র উহান পরিদর্শন এই অর্থ বহন করে যে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে দেশটির প্রচেষ্টা সফল হচ্ছে বলে মনে করে বেইজিং।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনে করোনায় আক্রান্ত ৮০ হাজারের বেশি মানুষের অধিকাংশই উহান শহরের বাসিন্দা। মঙ্গলবার সকালে সেখানে পৌঁছান প্রেসিডেন্ট শি। তিনি করোনাভাইরাস মহামারী পরিস্থিতি এবং এর নিয়ন্ত্রণ কাজ পরিদর্শন করেন। এছাড়া এই সফরে উহানের স্বাস্থ্যকর্মী, সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা, পুলিশ, করোনা আক্রান্ত রোগী এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন তিনি। এর আগে করোনা নিয়ে চীনা প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ উঠলে জানুয়ারির শেষদিকে উহান পরিদর্শন করেন চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং।

বিশ্বজুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লক্ষাধিক ছাড়িয়েছে। যার অধিকাংশই হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। নিহত ৪ হাজার ১৬ জনের মধ্যে ৩ হাজার ২৪ জনই মারা গেছে প্রদেশটিতে। তবে চীনে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এই সংখ্যাটা আক্রান্ত রোগীর প্রায় ৭০ ভাগ। ম্যাকাওতে আক্রান্ত সবাই সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরে গেছে।

গত সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডবিøউএইচও) প্রধান ডক্টর টেড্রস আধানম গেব্রেইয়েসুস জেনেভায় সংস্থাটির সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ভাইরাসটি ইতোমধ্যে অনেক দেশেই পা রেখেছে। এটি প্যানডেমিকে (মহামারির চেয়ে বড় সংকট) পরিণত হওয়ার হুমকি এখন সত্য হতে চলেছে।’ তিনি বলেন, ‘অল্প কিছু দেশ সম্প্রদায়ভিত্তিক সংক্রমণ আটকাতে সক্ষম হয়েছে। তবে, এ নিয়ে বিশ্ব নেতাদের এখনই হাল ছেড়ে দেয়ার দরকার নেই। চীনে ৮০ হাজারের বেশি করোনা রোগীর ৭০ শতাংশই সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।’ দেশটিতে মহামারি প্রায় শেষের পথে বলেও মন্তব্য করেন ডবিøউএইচও’র মহাপরিচালক।

এদিকে, বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় উদ্বেগ জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তারা। সংস্থাটির জরুরি কর্মস‚চির নির্বাহী পরিচালক মাইক রায়ান বলেন, ‘যখন কোনও কিছু (করোনাভাইরাস) ১০০টি দেশে ছড়িয়ে পড়ে, আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ছাড়ায়, তখন চিন্তা তো হবেই। মাত্র দুই সপ্তাহ আগেও এটি ৩০টি দেশে ছিল।’

ডবিøউএইচও জানিয়েছে, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি ও ইরান- এই চারটি দেশেই করোনা আক্রান্ত ৯৩ শতাংশ রোগী রয়েছেন। ৮০টি দেশে আক্রান্তের সংখ্যা একশ’রও নিচে। এছাড়া, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে মাত্র ২০ শতাংশের শরীরে গুরুতর উপসর্গ দেখা গেছে, বাকি ৮০ শতাংশের শরীরেই বড়জোর হালকা নিউমোনিয়া দেখা গেছে। সংস্থাটির কর্মকর্তাদের মতে, হৃদরোগ, শ্বাসকষ্ট, ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। চীনে ৮০ বছর বয়োসোর্ধ্বদের করোনায় মৃত্যুর হার প্রায় ২০ শতাংশ।

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ১৬ জনে। আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ১৩ হাজারের অধিক, এর মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন সাড়ে ৬৩ হাজার মানুষ। তবে আগ্রাসীভাবে বিশ্বব্যাপী একশরও বেশি দেশে ভাইরাসটির সংক্রমণ ঘটলেও আক্রান্তদের সুস্থ হয়ে উঠার হারও আশাব্যাঞ্জক। এ ছাড়া জার্মানি, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়াসহ আক্রান্ত সব দেশেই পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবায় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন রোগীরা। সূত্র : এএফপি, জিনহুয়া।



 

Show all comments
  • সাইফুল ইসলাম ১১ মার্চ, ২০২০, ৩:২৫ এএম says : 0
    সঠিক কাজ করেছেন
    Total Reply(0) Reply
  • রাসেল ১১ মার্চ, ২০২০, ৩:২৫ এএম says : 0
    এটা তার দায়িত্ব
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ