পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) রয়েছে ৬টি অনস্ট্রিট পার্কিং। এসব পার্কিংয়ে ফ্রি স্টাইলে ফি আদায় করা হচ্ছে। প্রাইভেট কারের জন্য ১০ টাকা পার্কিং ফি নির্ধারণ করা হলেও কোথাও কোথাও ২০ টাকা এবং আরো বেশি ফি নেয়া হচ্ছে। প্রত্যাশিত ফি না দিলে নাজেহাল করা হয়। সরেজমিন ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
ডিএসসিসির মতিঝিল, এ্যালিফ্যান্ট রোডের বাটা সিগন্যাল, গাউছিয়া মার্কেট, বায়তুল মোকাররম, পলওয়েল মার্কেট, হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের সামনে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য ইজারা দেয়। এই অনস্ট্রিট পার্কিং ইজারা দেয়ার সময় ১৫টি শর্ত দেয়া হয়। সেগুলো হলো নির্ধারিত পার্কিংয়ের জায়গায় কোনো ব্যবসা না করা, অতিরিক্ত ফি না নেয়া, পার্কিং ফি বোর্ডে টানিয়ে দেয়া, সড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণ এবং যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং রোধ।
শর্ত সাপেক্ষে দুই বছর আগের এই ব্যবস্থা মানছে না কোনো ইজারাদার। মতিঝিলে সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতি ঘণ্টায় ১০ টাকা নির্ধারণ করা থাকলেও ইজারাদাররা ২০ টাকার নিচে কোনো ফি নিচ্ছে না। অর্থাৎ টিকিট বানানো হয়েছে ২০ টাকার। আবার পার্কিংয়ের স্থানে অন্য কোনো ব্যবসা করার শর্ত না থাকলেও অধিকাংশ স্থানে বিভিন্ন হকার ও অস্থায়ী দোকান চলছে টাকার বিনিময়ে। শর্তানুযায়ী এসব নিয়মের ব্যতিক্রম হলে ইজারাদারের ইজারা বাতিল ঘোষণা করার কথা থাকলেও এ নিয়ে ডিএসসিসির কোনো উদ্যোগের কথা কেউ বলতে পারেনি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছরে ডিএসসিসি অনস্ট্রিট পার্কিংয়ের জন্য রাজধানীর ৬টি স্থান ইজারা দেয়। মতিঝিলের ২৪ তলা বিল্ডিং থেকে আলিকো বিল্ডিং পর্যন্ত ৯৫টি পার্কিংয়ের স্থান ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ইজারা পেয়েছেন রিফাত ইন্টারপ্রাইজের মালিক মো. নুরুল ইসলাম চৌধুরী।
বায়তুল মোকাররমের স্বর্ণের মার্কেটের পাশের সড়কের একপাশে পার্কিংয়ের ৪৮টি স্থান ৫ লাখ ৩২ হাজার টাকায় ইজারা পেয়েছেন ডিএ এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. দিদার। পলওয়েল মার্কেটের সামনের সড়কে পার্কিংয়ের ১৮টি স্থান ১ লাখ ১৭ হাজার ৮০০ টাকায় ইজারা পেয়েছেন দি ফিউচার এসেস্টের মালিক মো. আরজু।
হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল থেকে নেভী কলোনি পর্যন্ত রাস্তার এক পাশে পার্কিংয়ের ৬২টি স্থান ৪ লাখ ২৯ হাজার টাকায় ইজারা পেয়েছেন পার্কিং কইইনক লি. মালিক মো. রাফাত রহমান। মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের সামনের সড়কে ৮৩টি স্থান ৬ লাখ ১ হাজার টাকায় ইজারা পেয়েছেন এইচ এন্ড এন এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. মাহবুবুল হক।
বাটা সিগন্যাল থেকে গাউছিয়া পর্যন্ত সড়কে পার্কিংয়ের ৪৮টি স্থান ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকায় ইজারা পেয়েছেন টাইমস ইন্টারন্যাশনালের মালিক মো. নসিরুল ইসলাম সবুজ। এরা সবাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
সরেজমিনে এসব অনস্ট্রিট পার্কিংয়ের স্থানগুলোতে দেখা যায়, বাটা সিগন্যাল থেকে গাউছিয়া পর্যন্ত নির্ধারিত পার্কিংয়ের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমান সবজি, জুতা এবং পোশাক বিক্রেতারা টাকার বিনিময়ে ব্যবসা করছেন। এজন্য তারা দিনে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত দেন ইজারাদারের লাইনম্যানদের। আবার ঘণ্টায় ১০ টাকা ডিএসসিসির নির্ধারিত ফি থাকলেও তারা নিচ্ছেন ২০ টাকা।
নির্ধারিত ফি উল্লেখ করে বোর্ড টানানোর কথা থাকলেও সেটি নেই। ফি বেশি নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে গাউছিয়ার লাইনম্যান রিফাত বলেন, আমরা কিছু জানি না। আমাদের যত টাকার টিকিট দিয়েছে আমরা সে টাকার টিকিট দিচ্ছি গাড়িওয়ালাদের। আমরা তো এসব করিনি। যারা এগুলো ইজারা নিয়েছেন তারা বলতে পারবেন। মতিঝিলের লাইন ম্যান রিংকু মিয়া বলেন, ডিএসসিসি ঘণ্টা প্রতি ১০ টাকা নিতে বলেছে। আমরা তো প্রতি ঘণ্টা ১০ টাকা নিচ্ছি। টিকিটে ২০ টাকা লেখা দেখিয়ে সে বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ২০ টাকা হচ্ছে প্রথম দুই ঘণ্টার জন্য। পরের প্রতি ঘণ্টা ১০ টাকা করে।
লাইনম্যান রিংকু বোঝাতে চেয়েছেন তারাও প্রতি ঘণ্টা ১০ টাকাই নেন, তবে তা প্রথম দুই ঘন্টা পর। কিন্তু যখন প্রথম ঘণ্টা থেকেই ১০ টাকা করে নেওয়ার নিয়ম সেটি কেনো মানা হচ্ছে না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা সিটি করপোরেশন বুঝবে। আপনার এতো দরকার কি?
একই অবস্থা পলওয়েল মার্কেট, বায়তুল মোকাররম জুয়েলারী মার্কেট, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল ও হলি ফ্যামিলির সামনেও। কোথাও ২০ টাকার নিচে পার্কিং ফি নিচ্ছে না তারা। যদিও তাদের যুক্তি ডিএসসিসি প্রতি ঘণ্টা ১০ টাকা নির্ধারণ করলেও তারা প্রতি দুই ঘণ্টার জন্য ২০ টাকা নিচ্ছে। সুতরাং এতে নিয়ম ভাঙা হচ্ছে না, দাবি তাদের।
এসব বিষয়ে ইজারাদারদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা কেউ কথা বলতে রাজি হননি। অনিয়মের বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ডিএসসিসির সম্পত্তি বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা রাসেল বলেন, যদি এ ধরণের অনিয়মের লিখিত অভিযোগ পাই এবং প্রমাণ মেলে তবে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।