Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনায় আতঙ্ক নয়, সতর্কতাই ভরসা

এস এম ফয়েজ | প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০২০, ৩:৫৩ পিএম

চীন, ইতালি, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের নানা দেশ মাড়িয়ে করোনা ভাইরাসের হানা বাংলাদেশেও। এরইমধ্যে শনাক্ত হয়েছে তিন জন। আরো তিনজনকে রাখা হয়েছে পর্যবেক্ষনে। বাতাসের মাধ্যমে দ্রুত ছড়ানো প্রাণঘাতি এ ভাইরাস দমন বা প্রতিরোধে এখনো কোনো প্রতিষেধক আবিস্কার হয়নি। নির্ধারণ হয়নি চিকিৎসা ব্যবস্থাও। এ অবস্থায় আতঙ্কে দৌড়ছুটের চেয়ে সতর্কতা-সাবধানতাই ভরসা। করোনা থেকে নিরাপদ থাকতে ব্যক্তিগত পরিস্কার- পরিচ্ছন্নতাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। দিনে কয়েক বার সাবান পানিতে হাত ধোয়া জরুরি। হ্যান্ডশেক- কোলাকুলি এড়িয়ে চলতে হবে। সব সময় মাস্ক পরাও নিরাপদ। বাজারে মাস্ক বিক্রির ধুম পড়েছে। তবে, সার্জিক্যাল মাস্ক বেশি কার্যকর। জ্বর বা কাশি আক্রান্তদের কাছ থেকে দূরে থাকা বা এড়িয়ে চলা ছাড়া উপায় নেই। প্রতিদিন চেষ্টা করুন এক বা একাধিক বার গোসল ও প্রচুর পরিমান পানি পান করা। পরিচিত কারো জ্বর, ঠান্ডা বা শ্বাসকষ্ট হলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া জরুরি। প্রয়োজনে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে পারেন। কেউ অসুস্থ হলে তার মেডিকেল ইতিহাস জানাটাও জরুরি। আর যেসব এলাকায় এ করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে বা আক্রান্ত রোগী রয়েছে। সর্তক থাকতে হবে কাচাঁবাজারে যাওয়ার সময়। মাছ, মাংস, দুধ ,ডিম আধা কাচা খাওয়া যাবে না। কাচা মাংস, মাছ ও সবজি ধরার পর হাত ভাল করে ধুয়ে নিতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা এ বিষয়ে গোটা বিশ্বকে সর্তক করেছেন এবং সর্তক থাকার আহবান জানিয়েছেন। আসুন সর্তক থাকি। দেশ ও মানুষকে বাচাঁই। সচেতন হলে সর্তকতা আসবেই। গণপরিবহন এড়িয়ে চলা কিংবা সতর্কতার বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বাস, ট্রেন কিংবা অন্য যে কোন ধরণের পরিবহনের হাতল কিংবা আসনে করোনাভাইরাস থাকতে পারে। সেজন্য পরিবহনে চলাফেরার ক্ষেত্রে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করা,নেমে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।অফিসে একই ডেস্ক এবং কম্পিউটার ব্যবহার করলেও ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, হাঁচি-কাশি থেকে করোনাভাইরাস ছড়ায়।যে কোন জায়গায় করোনাভাইরাস কয়েক ঘন্টা এমনকি কয়েকদিন পর্যন্ত সক্রিয় থাকতে পারে। অফিসের ডেস্কে বসার আগে কম্পিউটার, কিবোর্ড এবং মাউস পরিষ্কার করে নিন। খেলাধুলার স্থান, সিনেমা হল থেকে শুরু করে ধর্মীয় স্থানও রয়েছে সেখানেও বাড়তি সতর্কতার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যখন গ্রাহকরা যায় তখন অনেকেই একটি কলম ব্যবহার করেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোন ব্যক্তি যদি সে কলম ব্যবহার করে তাহলে পরবর্তী ব্যবহারকারীদেরও করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। সেজন্য কলম আলাদা করে রাখতে পারেন। টাকা উত্তোলনের জন্য যে এটিএম বুথ ব্যবহার করা হয়, সেখান থেকেও সংক্রমণ হতে পারে। কারণ এটিএম বুথের বাটন অনেকে ব্যবহার করে। বাড়ি কিংবা অফিসের লিফট ব্যবহারের সময় নির্ধারিত ফ্লোরে যাবার জন্য লিফটের বাটন অনেকে ব্যবহার করছেন। অফিস ভবনে প্রতিদিন শত-শত মানুষ লিফট ব্যবহার করছেন। এদের মধ্যে কেউ যদি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী থাকেন এবং সে লিফটের বাটনে অন্যদের আঙ্গুল গেলেও সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে। তবে সর্তকতাই একমাত্র এ সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে পারে। তাই করোনায় আতঙ্ক নয়, সতর্কতাই ভরসা।

লেখক : সাংবাদিক, বাংলাভিশন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ