পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতজুড়ে হিন্দুত্ববাদী সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদ, ফেলানীসহ সীমান্ত হত্যার বিচারসহ নানা ইস্যুতে মোদি বিরোধী প্রচারণায় সরব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সমস্যা সমাধানের দাবিতে লাগাতার ৪৪ দিন অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ঢাবি শিক্ষার্থী নাসির অব্দুল্লাহ।
গত শুক্রবার তিনি ও তার সহযোগী শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে রাজু ভাষ্কর্যে প্রদর্শন করা হয় আলোকচিত্র। বর্তমানে এসব শিক্ষার্থীর মূল চাওয়া মোদির বাংলাদেশ সফর ঠেকানো। অন্যদিকে মোদিকে বয়কট করতে ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রচারণা চালিয়েছে ছাত্র ফেডারেশন। মোদি ঠেকাতে শুরু থেকেই সরব ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরসহ বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীরা।
রাজু ভাষ্কর্য প্রদক্ষিণ করে দেখা যায়, ভারতীয় বাহিনীর বিচার বহির্ভূত বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা ও মোদি বিরোধী প্রচারণা। এ ইস্যুতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন আলোকচিত্র ও ব্যানার প্রদর্শন করেন। এরমধ্যে রয়েছে হাতে লেখা, মোদী নট ওয়েলকাম; সীমান্ত হত্যা বন্ধ কর; পিন্ডি থেকে মুক্ত হয়েছে দিল্লির দাসত্বের জন্য নয়। আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে প্রতিকি হিসেবে রাজু ভাষ্কর্যে কাটাতার ঝুলানো হয়। কাটাতারের ওপর বিভিন্ন আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এরমধ্যে রয়েছে, সীমান্তে বসবাসকারীদের ওপর ভারতীয় বন্যহাতির আক্রমণ, বিএসএফের বুলেটে শরীরে ৬ ইন্সি গর্ত হয়ে যাওয়া বাংলাদেশি নাগরীকের ক্ষতবিক্ষত হওয়ার ছবি; সীমান্তে স্বামীর মৃত্যুর পর মূর্ছা যাওয়া স্ত্রীর মাথায় পানি ঢালার ছবি; ছেলেকে হত্যার পর ক্রন্দনরত মায়ের মুখ; বিএসএফে হত্যা করার পর লাশ গোসল দেয়া; সীমান্ত, বিএসএফ, ভারী অ¯্র ও গোলাবারুদের বিভিন্ন ছবি।
‘ফেলানীর স্মরণে সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে আলোকচিত্র প্রদর্শনী’ শীষক এসব প্রদশনী গত শুক্রবার বেলা ১২টায়র দিকে শুরু হয়। এ প্রসঙ্গে অন্যতম আয়োজক নাসির আব্দুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী যাকে হত্যা করে বিএসএফ সীমান্তের কাঁটাতারের ওপর ঝুলিয়ে রেখেছিলো সে দৃশ্য সারা বিশ্ব দেখেছে। ফলে আমরা নারী দিবসে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছি। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বহির্ভূত বাংলাদেশী নাগরিক হত্যার প্রতিবাদে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তিনি।
এরআগে গত ২২ জানুয়ারি ভোর থেকে শুরু করে ২৪ ঘন্টায় বিএসএফের গুলিতে ৫ বাংলাদেশি নিহতের পর ২৫ জানুয়ারি সীমান্ত হত্যার বিচারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে বসেন মার্কেটিং বিভাগের এ শিক্ষার্থী। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি নাসির আব্দুল্লার সাথে সংহতি জানিয়ে গণস্বাক্ষর ও ‘কাঁটাতারের বন্ধুত্ব: বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক’ বিষয়ে আলোচনা সভায় আয়োজন করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, সীমান্ত হত্যা কোন ভাবেই মেনে নেয়ার মত বিষয় নয়। দু-দেশেরই বিচার ব্যবস্থা আছে, কেউ অপরাধ করলে তাকে আটকিয়ে রাখেন, তারপর সে কোন আদালতে যাবে কিন্তু তাকে হত্যা করা যাবে না। আমি আমার এ দাবি করেছি রাষ্ট্রের কাছে। সীমান্ত হত্যা যে বন্ধ করতে হবে এটা আমাদের রাষ্ট্রীয় নীতিতে যেন অন্তর্ভুক্ত হয়। আর রাষ্ট্রের মধ্যে আপনিও আছেন আমিও আছি, এটা কোন দলের বিষয় নয়। আমরা গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে ১৩ শ’ স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছি। মন্তব্যলিপি চালু করেছি, সেখানে মন্তব্য আসছে। “সীমান্ত আলাপ” নামক একটা আলাপ চালু করেছি, “কাঁটাতার” নামে একটা পত্রিকা বের করেছি। সামনে আমরা সীমান্তের মানুষদের নিয়ে একটা ডকুমেন্টারি তৈরি করবো। আমরা তাদের কান্নাগুলো সবার কাছ পৌঁছে দিতে চাই। এছাড়াও আমরা সীমান্ত ট্যুর চালু করতে চাই। আমরা সীমান্ত নিয়ে একটা সামগ্রিক পদক্ষেপ নিয়েছি।
‘বয়কট মোদি’র প্রচারণা: এদিকে পটিয়ায় মন্দিরে হামলা ও দিল্লিতে মসজিদ ভাংচুর একইসূত্রে গাঁথা উল্লেখ করে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার সম্মিলিত লড়াই ই ভারতসহ বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক শক্তিকে সমূচিত জবাব প্রদানের কথা বলেছেন বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজন বলেন। তিনি আরও যুক্ত করেন, দিল্লি-মেঘালয়সহ ভারতব্যাপী সাম্প্রদায়িক হত্যার মূল হোতা নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশের মানুষ স্বাগত জানাতে সম্মত নয়। ক্ষমতায় টিকে থাকতে বাংলাদেশ সরকার এরূপ হিংস্র সাম্প্রদায়িক নেতাকে আমন্ত্রণ জানালেও বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা এ বিষয়কে জাতীয় অমর্যাদার বিষয় হিসেবেই দেখছে।
গতকাল রোববার সকাল ১১ টায় বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন এর উদ্যোগে ‘১১ই মার্চ পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ’ কে সফল করতে ইডেন কলেজ, গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ, নীলক্ষেত মোড়, ঢাকা কলেজ-এ প্রচারপত্র বিতরন ও সাম্রদায়িক নরেন্দ্র মোদিকে প্রতিহত করার আহ্বান জানানো হয়। কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাহিদ সুজনের নেতৃত্বে এ সময় কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাদিক রেজা, কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত অর্থ সম্পাদক আহমেদ নবীন, ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক সৈকত আরিফ, সম্পাদক অনুপম রায়সহ নেতা-কর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক সৈকত আরিফ বলেন, সিমান্তহত্যা, আন্তর্জাতিক নদীর পানি বন্টন, বিষয়ে ভারতের আগ্রাসী মনোভাবের আমরা বিরোধিতা করছি। এরকম সময়ে বাংলাদেশের সরকার যেন ছাত্র-জনতার হৃদয়ের দাবিকে গুরুত্ব দিয়ে নরেন্দ্র মোদির সফর বাতিল করেন সে জন্যই আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামনে ছাত্রসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে বিক্ষোভ করবো। এ লড়াইয়ে আপামর সাধারণ জনগণকে সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহবান জানাই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।