Inqilab Logo

সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

করোনা আতঙ্ক : গণপিটুনির ভয়ে ভারতে ১৫ ঘণ্টা গৃহবন্দি চীনা নাগরিক

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ মার্চ, ২০২০, ২:১৩ পিএম

সারা পৃথিবীজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। এর ধারাবাহিকতায় ভারতেও ক্রমশ ছড়াচ্ছে করোনাভাইরাস। এ পর্যন্ত দেশটিতে অন্তত ৩০ জনের শরীরে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে প্রায় অর্ধেকই ভিনদেশি নাগরিক। ফলে সেখানে বিদেশিদের দেখলেই আতঙ্কিত হচ্ছেন অনেকে। আর সে যদি চীনা নাগরিক হয়, তাহলে তো কথাই নেই!
সম্প্রতি উত্তর প্রদেশের বেশ কয়েকজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আতঙ্ক। এই আতঙ্কের চোটে গণপিটুনির ভয়ে ১৫ ঘণ্টা গৃহবন্দি হয়ে রইলেন এক চীন থেকে আগত বাসিন্দা। গত বুধবার রাতে এই নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে দিল্লির কাছে উত্তরপ্রদেশে অবস্থিত গ্রেটার নয়ডায়।
বৃহত্তর নয়ডার গ্রিন প্যারাডাইসো হাউজিং সোসাইটির বাসিন্দারা জানতে পারেন যে, চীন থেকে আগত একজন ব্যক্তি অসুস্থ ও তিনি কিছুতেই দরজা খুলছেন না। সন্দেহের বশে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের ও পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা।
কিন্তু কোনওভাবেই দরজা খুলতে চাননি সেই চীনা ভদ্রলোক। তার ভয় যে, তাকে হয়তো পিটিয়ে মেরে ফেলবে স্থানীয় মানুষ। অনেক করে বোঝানোর পর প্রায় পনেরো ঘণ্টা বাদে বৃহস্পতিবার দুপুরে দরজা খোলেন তিনি। তাকে তখনই সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার করোনাভাইরাসের জন্য পরীক্ষা করা হয়, কিন্তু কিছু পাওয়া যায় নি।
জানা যাচ্ছে, গত মাসের দুই তারিখ চীন থেকে ফিরেছেন এই ভদ্রলোক। ২৮ দিনের আইসোলেশনেও ছিলেন তিনি এটা নিশ্চিত করার জন্য যে তার করোনাভাইরাস নেই। পুলিশ জানায়, এই চীনা ব্যক্তি ইংলিশ বা হিন্দি বুঝতে পারে না। শেষে একটি অ্যাপ ব্যবহার করে তার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। তার কথা বুঝতে না পেরে স্থানীয়রা তাকে গণপিটুনি দেয়, এই কারণে দরজা খুলছিল না সেই ব্যক্তি।
জানা যায়, সামান্য সর্দি-কাশিতে ভুগছিল চীন থেকে আগত এই ব্যক্তি। কিন্তু তাতেই আতঙ্কিত বোধ করেন স্থানীয়রা। ফলে সারারাত বিভিন্ন সরকারি দফতরে ফোন করেন স্থানীয়রা। এই চীনা নাগরিককে দিল্লি এয়ারপোর্টে করোনার জন্য স্ক্রিনও করা হয়েছিল।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহানে প্রথমবারের মতো ধরা পড়ে করোনাভাইরাস। এরপর অন্তত ৮০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বাণিজ্যিক প্রতিদ্ব›দ্বী চীনে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮০ হাজার ৫৫২ জন, মারা গেছেন তিন হাজারেরও বেশি মানুষ।
চীনের পর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে অন্তত ৬ হাজার ২৮৪ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে, মারা গেছেন ৪২ জন। মৃত্যুর সংখ্যায় দ্বিতীয় অবস্থানে ইউরোপের দেশ ইতালি। দেশটিতে এ পর্যন্ত অন্তত ১৪৮ জন মারা গেছেন, আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৮৫৮ জন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ