বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সাত বছর পার হলেও এখনো তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার বিচার হয়নি। ঘাতকরা সরকারের সাথে জড়িত থাকায় ওই হত্যার বিচার হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি। এছাড়া ত্বকী হত্যাকাণ্ড বিচারহীনতার প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্টজনরা।
গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে ত্বকী হত্যার সাত বছর পূর্তিতে ‘সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চ’ আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে এমন মন্তব্য করেন তারা। বৈঠকে ত্বকী হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা দেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্য সচিব হালিম আজাদ। সভাপতিত্ব করেন ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি।
বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ত্বকী হত্যা একটি একটি রাজনৈতিক হত্যা। ত্বকীর বাবার কর্মকাণ্ডের জেরেই এমন মেধাবী কিশোরকে হত্যা করা হয়েছে। দেশে বিচারহীনতা সংস্কৃতির কারণেই ত্বকী, সাগর-রুনি, তনুর মতো একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
তিনি বলেন, ত্বকী কাউকে আঘাত করেনি, কারও প্রতি অন্যায় করেনি। তারপরও তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ রাষ্ট্র তাকে নিরাপত্তা দিতে পারেনি, তার হত্যার বিচার করতে পারেনি। বিচারের পাশাপাশি আর কোনো কিশোরকে যেন ত্বকীর মতো হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে না হয়, সেজন্য আমাদের আন্দোলন করতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম বলেন, সমাজকে রক্ষা করতে আমাদের আন্দোলন ছাড়া বিকল্প কিছু নেই। আন্দোলনের মাধ্যমেই ত্বকীসহ সাগর-রুনি ও তনুর বিচার বিচারকার্য শেষ করতে বাধ্য করা হবে। বিচার ব্যবস্থা কতটা নিয়ন্ত্রিত সেটা পিরোজপুরের বিচারককে বদলির বিষয়টি দেখলেই বোঝা যায়। সরকারের পছন্দের মানুষকে জামিন না দেওয়ায় পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো. আব্দুল মান্নানকে বদলি করা হয়েছে।
সিনিয়র সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান বলেন, ত্বকীর বিচারের জন্য আমরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারি।
সভাপতির বক্তব্যে ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি বলেন, আইনের ওপর আমাদের আর ভরসা নেই। বর্তমানে দেশে আইনের চেয়ে ব্যক্তির দাম বেশি। আর ত্বকীর ঘাতকেরা সরকারের সাথে জড়িত।
তিনি আরো বলেন, আমরা ত্বকী হত্যার বিচার চাই। ত্বকী ছাড়াও আরো যেসব হত্যাকাণ্ড হয়েছে; সেগুলোর বিচারও চাই।
গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সচিব শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া, আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়–য়া প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নারায়ণগঞ্জ শহরের বাসার সামনে থেকে নিখোঁজ হয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বির ছেলে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। এরপর ৮ মার্চ সকালে শীতলক্ষ্যা নদীর শাখা চারারগোপ এলাকার খালে ত্বকীর লাশ পাওয়া যায়। ওইদিন রাতেই ত্বকীর বাবা অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। পরে ১৮ মার্চ পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন ত্বকীর বাবা।
এতে সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, তার ছেলে অয়ন ওসমান, জেলা যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা জহিরুল ইসলাম পারভেজ ওরফে ক্যাঙারু পারভেজ, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রাজীব দাস, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, সালেহ রহমান সীমান্ত ও রিফাতকে দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেন তিনি। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।