Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে

সুজনের অনলাইন আলোচনায় বক্তারা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০২ এএম

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে দেশে ধর্ষণ বাড়ছে। ধর্ষষকে ফাঁসি দেয়ার আইন করে নয়, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন বন্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে এক হয়ে লড়তে হবে। স্কুল-কলেজে পড়ার সময়ই শিক্ষার্থীদের নারী ও পুরুষের সমানাধিকারের বিষয় শেখাতে হবে। প্রশাসন ও বিচারব্যবস্থায় নারীবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ধর্ষণ-নিপীড়ন বন্ধে বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও প্রতিকারে করণীয়’ শীর্ষক অনলাইন গোলটেবিল বৈঠকে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সুজন সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, আমাদের দাবি তুলতে হবে, যাতে বিচার হয়। নাহলে ধর্ষণের মহোৎসব বন্ধ হবে না।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিচারহীনতার পরিবেশ তৈরি হওয়ায় দেশে ধর্ষণ বেড়েছে। যৌন অপরাধ নিয়ে কথা বলার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো একটি লেন্স দিয়ে না দেখে সামগ্রিকভাবে বিষয়টি দেখতে হবে।

করোনা মহামারির সঙ্গে এখন ধর্ষণের মহামারিও যুক্ত হয়েছে উল্লেখ করেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ধর্ষণের মহামারি এখন সমাজের সর্বক্ষেত্রে বিরাজমান। সরকার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড করেছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো বিচার হওয়া। বিচারে দীর্ঘসূত্রতা, বিচারহীনতার সংস্কৃতি, রাজনৈতিক প্রভাব ইত্যাদি কারণে যথাযথ বিচার হচ্ছে না। বিচারহীনতার এই সংস্কৃতি দূর করে অপরাধীকে যথাযথ বিচারের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বিচার যদি দ্রুত না হয় এবং সর্বোচ্চ শাস্তি না হয়, তাহলে এই বিধান অর্থহীন হয়ে যাবে।
সুজনের জাতীয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক সি আর আবরার বলেন, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে অপরাধীরা মনে করে যা ইচ্ছা তাই করা যাবে এবং রাজনৈতিক কারণে পার পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সালমা আলী বলেন, পরিবার, সমাজ সব জায়গায় নারীদের সমান মর্যাদায় দেখার মানসিকতা তৈরি করতে হবে। যৌন অপরাধ বন্ধে পরিবার ও সমাজের ভূমিকা অনেক। প্রশাসন ও বিচারব্যবস্থায় নারীবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে।

সম্মিলিতভাবে ধর্ষণের বিরুদ্ধে লড়ার করার দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, স্কুল-কলেজ থেকেই নারী ও পুরুষের সমানাধিকারের বিষয় শেখাতে হবে। এ দেশে ৩০ বছর ধরে নারী নেতৃত্ব; এরপরও নারীর সত্যিকার অর্থে ক্ষমতায়ন হচ্ছে না। ধর্ষকদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে। মৃত্যুদন্ড দিয়েই ধর্ষণ কমানো যাবে না মন্তব্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, সমাজে বিভিন্ন জায়গায় জেন্ডার সংবেদনশীলতার অভাব রয়েছে।

গোলটেবিলে বৈঠকে প্রবন্ধ পাঠ করেন সুজনের নির্বাহী সদস্য শাহনাজ হুদা। আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানিয়া হক, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি প্রমূখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিচারহীনতার-সংস্কৃতি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ