পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর চরমোনাইয়ের পীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, দিল্লির মুসলমানদের হত্যাকারী উদ্রবাদী, বিশ্ব সেরা সন্ত্রাসী নরেন্দ্র মোদীকে দেশের জনগণ কিছুতেই আসতে দেবে না। মুজিববর্ষে নরেন্দ্র মোদি যদি ঢাকায় পা রাখেন তা’হলে জনগণ জান মাল রক্ত দিয়ে প্রতিহত করতে প্রস্তুত রয়েছে। পীর সাহেব বলেন, আমরা ভাঙচুর নৈরাজ্যে বিশ্বাসী না। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী। মোদিকে প্রতিহত করার দাবিতে তিনি আগামীকাল শুক্রবার বাদ জুমা সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে সমাবেশ সফল করার আহবান জানান।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর বলেন, দিল্লীতে মুসলিম গণহত্যা এবং মসজিদ মাদরাসাগুলোতে অগ্নিসংযোগ করে লুটতরাজ চালাচ্ছে। মুসলমান হত্যা করে নর্দমায় লুকিয়ে রেখেছে। মুজিববর্ষের দাওয়াত প্রত্যাহার করে মোদিকে বাংলাদেশের মুসলমানদের মনোভাব জানিয়ে দিন। তাকে ঢাকায় আনা হলে মুজিববর্ষকে কলঙ্কিত করা হবে।
গতকাল বিকালে বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে ভারতে মুসলিম নির্যাতন গণহত্যা পবিত্র মসজিদে অগ্নিসংযোগ এবং নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এছাড়া ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে মোদির সফর বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি ও বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে উগ্রবাদী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর বাতিল করার দাবি জানান। জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করে নরেন্দ্র মোদিকে যদি বাংলাদেশে আনা হয় তবে উদ্ভ‚ত পরিস্থির জন্য সকল দায়দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ভারতে এনআরসির মূল উদ্দেশ্য ভারতকে মুসলিম শূণ্য করা। তিনি বলেন, আমাদের দেশের অনেক মন্ত্রীরা বলছেন, দিল্লির মুসলিম নিধন ঘটনা ভারতের আভ্যন্তরীণ বিষয়। তিনি বলেন, তাহলে ভারতে এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ছে কেন? ভারতের কোন সচেতন মানুষ মোদির সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছে না কেন? কাজেই মুসলিম হত্যাযজ্ঞকে অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে চালিয়ে দেয়ার কোন সুযোগ নেই।
নগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, নগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, আলহাজ¦ আবদুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, মাওলানা আহমাদ আব্দুল কাইয়ুম, মাওলানা মকবুল হোসাইন, যুবনেতা কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মাওলানা নেছার উদ্দিন, অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, ছাত্রনেতা এম হাসিবুল ইসলাম ও মাওলানা আরিফুল ইসলাম।
বিক্ষোভ সমাবেশের পর একটি বিশাল মিছিল বের হয়ে পল্টন মোড় হয়ে বিজয়নগর নাইটেংগেল পৌঁছলে পুলিশ মিছিলের গতিরোধ করে, কিন্তু তখনও জনতার স্রোত বায়তুল মোকাররম গেট ত্যাগ করেনি। এসময় কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। মাওলানা মাদানী বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা জনগণকে নয়, ভারতকে সস্তুষ্ট করতে ব্যস্ত। ভারতের সাথে সরকারের সম্পর্ক বন্ধুত্ব ও সমতামূলক নয়, বরং দাসত্বমূলক।
সীমান্ত হত্যা নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে দলের মহাসচিব বলেন, বিএসএফ এর নির্বিচার হত্যাকান্রডে কারণেই ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত বিশে^র সবচেয়ে প্রাণঘাতী সীমান্ত। বিএসএফই আমাদেরকে ফেলানীর লাশ উপহার দিয়েছে। সভাপতির বক্তব্যে প্রিন্সিপাল শেখ ফজলে বারী মাসউদ রাখেন, মোদি একজন খুনি, বিশ্ব সন্ত্রাসী, মানবতার দুশমন। তাকে দাওয়াত দিয়ে মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে বর্তমান সরকারের জন্য কল্যাণকর হবে না। তিনি মোদিকে প্রত্যাখান করার আহ্বান জানান।
খেলাফত মজলিস: এছাড়া, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত মুসলমানদের রক্তে রঞ্জিত। এ রকম একজন উগ্রসাম্প্রদায়িক ব্যক্তিকে বাংলাদেশের জনগণ কোনভাবেই বাংলাদেশে দেখতে চায় না। অবিলম্বে উগ্রবাদী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর বাতিল করতে হবে। জনগণের মতামতকে উপেক্ষ্ করে নরেন্দ্র মোদিকে যদি বাংলাদেশে আনা হয় তবে উদ্ভ‚ত পরিস্থির জন্য সকল দায়দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে। দিল্লীতে মুসলিম গণহত্যার প্রতিবাদে এবং নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর বাতিলের দাবিতে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরীর মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
গতকাল বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সমানে ঢাকা মহানগরীর সহ সভাপতি মাওলানা শরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাওলানা আজীজুল হকের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব আহমদ আব্দুল কাদের, মাওলানা মুহাম্মদ শফিক উদ্দিন, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, খেলাফত আন্দোলনের (একাংশের) আমীর মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, দেওভোগ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আবু তাহের জিহাদী, অধ্যাপক আবদুল হালিম, অধ্যাপক মোঃ আবদুল জলিল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. আহমদ আবদুল কাদের আরো বলেন, দিল্লীতে মুসলিম গণহত্যা, মসজিদ মাদরাসা ধ্বংস ও মুসলমানদের ঘর-বাড়ী, দোকান পাটে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। আর শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী সফলের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণ মুসলিম বিদ্বেষী রক্ত পিপাসু নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমন প্রতিহত করতে হবে। আগামী ৬ মার্চ সমমনা ইসলামী দলসমূহ ঘোষিত রাজধানীসহ সারাদেশে গণমিছিলের কর্মসূচী সফল করতে হবে।
গোপালগঞ্জে মানববন্ধন : ভারতের দিল্লিতে মুসলমানদের গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, মসজিদ ভাঙচুরের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে গতকাল কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড গওহরডাঙ্গা বাংলাদেশ। গোপালগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে এ প্রতিবাদ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে নেতৃত্বদেন ছদর সাহেব (রহ.) এর পৌত্র ও গওহরডাঙ্গা মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতি উসমা আমীন।
মানববন্ধনে মুফতি উসামা আমীন বলেন, দিল্লিতে মুসলামানদের পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হচ্ছে। অনতিবিলম্বে এই জুলুম, নির্যাতন, হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
মুফতি উসামা আমীন আরো বলেন, বাংলাদেশের মানুষ শান্তি প্রিয়, সকল ধর্মের মানুষ শান্তিতে বসবাস করছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গুবন্ধু শেখ মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে দাঙ্গা সৃষ্টিকারী ভারতের নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশের জনগণ দেখতে চায় না। আশাকরি সরকার তার দাওয়াত বাতিল করে জনগণের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাবে। অন্যথায় দেশের ধর্মপ্রাণ তৌহিদী জনতাকে সাথে নিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে প্রতিহত করা হবে।
সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা সামছুল হকের সভাপতিত্বে ও মুফতি মোহাম্মদ তাসনীমের সঞ্চালানয় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, গওহরডাঙ্গা মাদরাসার মাওলানা ফরিদ আহমাদ, মাওলানা কাবিরুল ইসলাম, কোর্ট মসজিদ মাদরাসার মুফতি হাফিজুর রহমনা, কাজুলিয়া মাদরাসার মাওলানা আবুল কালাম, তানজিমুল মুদাররিসিন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ঝিনাত আলী, মুসলিম এতিম খানার মাওলানা হায়াত আলী, খাদেমুল ইসলাম বাংলাদেশের জয়েন্ট সেক্রেটারী মুফতি মোস্তফা কাসেম, কাশিয়ানী তারাইলফুকরা মাদরাসা মাওলানা শিহাব উদ্দিন, মুকসুদপুরের টেকের হাট মাদরাসার মাওলানা এনায়েতুল্লাহ।
কর্মসূচি : আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় প্রেসক্লাবে ভারতের দিল্লীতে মুসলিম গণহত্যা, মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে এবং সমমা ইসলামি দলসমূহ ঘোষিত কর্মসূচি সফলের লক্ষ্যে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর উদ্যোগে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন সংগঠনের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী। এ ছাড়া জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মাহ পরিষদ আজ সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সমানে মোদির সফরের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।