মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
চীন থেকে শুরু হয়ে করোনাভাইরাস পশ্চিম দিকে মধ্য প্রাচ্য, ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ক্রমবর্ধমান হারে অগ্রসর হচ্ছে। ধারনা রয়েছে, আসন্ন গরমের মাসগুলোতে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমে যেতে পারে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, গত ১০ ফেব্রুয়ারি একটি সমাবেশে বলেছিলেন যে, এপ্রিলের মধ্যে করোনাভাইরাসের সমস্যা নিজেই সমাধান হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘তাত্ত্বিকভাবে সত্যি হচ্ছে, যখন গরম পরে, তখন অলৌকিকভাবে এটা চলে যায়।’ কিন্তু এই তত্ত্বের কোন সত্যতা আছে কি? এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা কি বলছেন?
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, ইনফ্লুয়েঞ্জা বা সর্দিজনিত করোনাভাইরাসের জন্য দায়ি ভাইরাসগুলোর প্রকোপ গরমের সময়ে কমে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। কারণ আবহাওয়ার সাথে এই ধরণের ভাইরাসগুলোর সম্পর্ক রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এই প্রবণতাকে বলেন ‘সিজনালিটি’। তবে নতুন ভাইরাসও যে একই আচরণ করবে নেটি নিশ্চিত নয়।
এ বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ড স্কুল অফ মেডিসিনের পোস্টডক্টোরাল ফেলো স্টুয়ার্ট ওয়েস্টন বলেন, ‘আমরা আশা করি এটি সিজনালিটি প্রদর্শন করবে, তবে এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যায় না।’ ভাইরাসটি নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে।
টাইম ম্যাগাজিন এক প্রতিবেদনে, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতামত তুলে ধরেছে। তারা এই বিষয়ে একমত হয়েছেন যে, উষ্ণ আবহাওয়া ভাইরাসের বিস্তারকে প্রভাবিত করবে কিনা এখনই নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। প্রতিবেদনে পেনসিলভেনিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির সংক্রামক রোগ ডায়নামিকস কেন্দ্রের পরিচালক এলিজাবেথ ম্যাকগ্রাভের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে যে, প্রাদুর্ভাব কখন এবং কীভাবে শেষ হবে তা নির্ধারণ করার জন্য অনেক বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে। ভাইরাস সংক্রমণের হার, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতিগুলির কার্যকারিতা, আবহাওয়া এবং মানব প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্ভবত তার ভবিষ্যত নির্ধারণে ভূমিকা রাখবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) তাদের ওয়েবসাইটে লিখেছিল যে, আবহাওয়া এবং তাপমাত্রা কোভিড-১৯ (করোনভাইরাসের বৈজ্ঞানিক নাম) এর বিস্তারকে প্রভাবিত করে কিনা তা এখনও জানা যায়নি। তারা জানিয়েছে, সাধারণ সর্দি এবং ফ্লু জাতীয় কিছু ভাইরাস শীতের সময় বেশি ছড়িয়ে পড়ে তবে এর অর্থ এই নয় যে অন্যান্য মাসগুলিতে কেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হবেন না। আবহাওয়া উষ্ণ হয়ে উঠলে কোভিড-১৯-এর বিস্তার হ্রাস পাবে কিনা তা এখনো বলা যাচ্ছে না।
সংবাদ সংস্থা সিএনএন তাদের প্রতিবেদনে টেক্সাসের বেলর কলেজ অফ মেডিসিনের ন্যাশনাল স্কুল অফ ট্রপিকাল মেডিসিনের ডিন ডক্টর পিটার হোটেজের বরাত দিয়ে বলেছে, ‘বসন্ত এবং গ্রীষ্মে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমে যাবে এটি বেপরোয়া ধারণা।’
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হার্ভার্ড এপিডেমিওলজিস্ট মার্ক লিপসিচ মনে করেন না যে কোনও আবহাওয়া পরিবর্তন ভাইরাস ছড়ানোয় বড় বাধা সৃষ্টি করতে পারে। কোভিড-১৯ এখন বিশ্বজুড়ে নথিভুক্ত করা হয়েছে। ভাইরাসটি যদি সাধারণ ফ্লু ভাইরাসের মতো কিছু হয় তবে দক্ষিণ গোলার্ধে ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে এটি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে।’
লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিনের ডেভিড হেইম্যান বলেছেন যে, বিভিন্ন আবহাওয়ার এই নতুন ভাইরাসের প্রকোপ কী ভাবে পরিবর্তিত হবে তা পূর্বাভাস দেয়ার পক্ষে যথেষ্ট তথ্য জানা যায়নি। হেইম্যান ন্যাশনাল জিওগ্রাফিককে বলেন, ‘প্রমাণ ও ভিত্তি ব্যতীত ভবিষ্যদ্বাণী করার ঝুঁকি হল, ভুল হলেও এগুলো সত্যি বলে ধরে নেয়া হতে পারে এবং অসাবধানতা চলে আসতে পারে। যেখানেই সম্ভব এটি নির্মূল ও নিয়ন্ত্রণে জোর দেয়া উচিত।’
বিশেষজ্ঞরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, গ্রীষ্মে কোভিড -১৯ কম সক্রিয় হয়ে উঠলেও জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তারা নিয়ন্ত্রণ না করলে এটি ফিরে আসতে পারে। টাইম ম্যাগাজিনের রিপোর্টে এই কথা কলা হয়েছে। এ বিষয়ে সান ফ্রান্সিসকো বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারের মেডিসিনের অধ্যাপক চার্লস চিউ বলেন, ‘আমরা যদি একাধিক দেশে ধারাবাহিক সংক্রমণ দেখতে পাই তবে ভাইরাসটি নির্মূল করা খুব কঠিন হবে।’ তিনি বলেন, ‘এমন একটি ঝুঁকি রয়েছে যে, মৌসুমী ভাইরাস হিসাবেই সবার অজান্তে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে যেতে পারে।’ সূত্র: ডন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।