Inqilab Logo

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

মোদিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে দেখতে চায় না জনগণ

হাটহাজারীতে বাবুনগরী

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

বাংলাদেশের জনগণ রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দেখতে চায় না বলে মন্তব্য করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ও হাটহাজারী মাদ্রাসার সহযোগী পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।

গতকাল শনিবার বাদ আসর হাটহাজারী ডাক বাংলো চত্ত¡রে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ হাটহাজারী পৌরসভার উদ্যোগে দিল্লিতে মুসলিম গণহত্যা, মসজিদ ধ্বংস ও বাংলাদেশে নরেন্দ্র মোদির আগমনের প্রতিবাদ সমাবেশ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, স¤প্রতি ভারতে মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইন সিএএ-এর প্রতিবাদ করায় দেশটির রাজধানী দিল্লিতে মুসলমানদেরকে শহীদ করা হয়েছে। মসজিদকে ভেঙে তাতে গেরুয়া পতাকা উড়িয়েছে। এসব ঘটনার নিন্দা ও ধিক্কার জানানোর ভাষা আমাদের নেই। ভারতের মুসলমানদের ওপর রাষ্ট্রীয়ভাবে সন্ত্রাস চালাচ্ছে বিজেপি সরকার। মোদি একজন খুনি, বিশ্ব সেরা সন্ত্রাসী। গো-হত্যার মিথ্যা অভিযোগ তুলে বিভিন্ন সময়ে মুসলমানদের ওপর যেসব নির্যাতন চালানো হচ্ছে সেখানে তা অত্যন্ত বর্ব্বর। কাশ্মীরে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম বর্ব্বরতা চালাচ্ছে মোদি সরকার।

তিনি আরো বলেন, তারা মুসলমানদেরকে দেশছাড়া করার হীন উদ্দেশ্যে মুসলিমবিরোধী নাগরিকত্ব বিল পাশ করেছে। গত কয়েকদিনে দিল্লিতে মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইন সিএএ-এর প্রতিবাদ করায় হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীরা- জঙ্গিরা মুসলমানদের ওপর বর্ব্বরোচিত হামলা, নৃশংস হত্যা, মসজিদে ভাঙচুর করায় আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। অনতিবিলম্বে এসব বন্ধ না হলে ঐক্যবদ্ধভাবে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, ইসলাম সবসময় মানবাধিকারের কথা বলে। শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার কথা বলে। অমুসলিম স¤প্রদায়কে নিরাপত্তাদানের কথা বলে। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে বসবাস করছে। অথচ ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিম স¤প্রদায় সবসময় সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু স¤প্রদায় কর্তৃক নির্যাতিত নিপীড়িত হচ্ছে। উলামায়ে দেওবন্দের রক্তের বিনিময়ে আজকে বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন ভারত রাষ্ট্র স্থান পেয়েছে। বালাকোট আন্দোলন থেকে রেশমী রোমাল ও আজাদী আন্দোলন সবখানেই উলামায়ে কেরামের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে। সেই মুসলিম রক্তে স্বাধীন হওয়া ভারতে আজ মুসলিম সংখ্যালঘুদের উপর যেভাবে জুলুম নির্যাতন চালাচ্ছে তা পরিষ্কার রাষ্ট্রীয় নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। ভারতের উচিত হবে নিজ দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা।

তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, মুসলমানদের ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙে গেলে বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ যুদ্ধ লেগে যেতে পারে। আমরা বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে বলবো এ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে সোচ্চার হোন। রক্তাক্ত বিশ্বের চেহারা দেখার পূর্বেই মুসলিম নিধন বন্ধে এগিয়ে আসুন। ভারতীয় এই গণহত্যা থামানোর জন্য জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের কাছে রাষ্ট্রীয়ভাবে জোরালো দাবি তুলে ধরা বাংলাদেশ সরকারের একটা নৈতিক, ধর্মীয় ও সাংবিধানিক দায়িত্ব।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, দেশের শান্তিকামী মানুষ গুজরাটের কসাইখ্যাত দিল্লি গণহত্যার খলনায়ক নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশের মাটিতে কোনক্রমেই সহ্য করবে না। মোদি বাংলাদেশে আসতে চাইলে ঢাকাসহ সারা দেশের বিমানবন্দর অচল করে দেয়া হবে এবং মোদির আগমনের কারণে দেশের অচল অবস্থা সৃষ্টি হলে এর দায়ভার সরকারকেই নিতে হবে। দেশে শীর্ষ উলামায়ে কিরামের পরামর্শে হেফাজত আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফির নির্দেশে ভারতের চলমান সঙ্কট এবং বাংলাদেশে মোদির আগমন প্রতিহত করতে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, হাটহাজারী মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা নূরুল ইসলাম জাদীদ, হেফাজত নেতা মুফতী মাহমুদুল হাসান গুনভী, মাওলানা নসীম সাহেব, মাওলানা মীর মুহাম্মদ কাসেম, মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ আলী কাসেমী, মাওলানা জাফর আহমদ সাহেব, মাস্টার আহসানুল্লাহ, মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জী, মাওলানা কাজি সফিউল্লাহ, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মুফতী তৈয়ব, মাওলানা ইমরান সিকদার, মাওলানা আব্দুর রহীম মাওলানা কামরুল কাসেমী, মাওলানা ইকবাল মাদানী, মাওলানা হাবীবুর রহমান হাবীব, মাওলানা আসাদুল্লাহ আসাদ, জনাব শফিউল আলম, মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মোদি

২৮ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ