পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের জ্বালানি খাতে নতুন সম্ভাবনার দেখা দিয়েছে। জ্বালানি সংকট নিরসনে এবার দিনাজপুরের দিঘীপাড়া কয়লাখনি থেকে কয়লা উত্তোলনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এ খনিতে ১২ দশমিক ৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে অত্যন্ত উন্নতমানের কয়লা রয়েছে। জ্বালানি বিষেজ্ঞদের মতে এ কয়লার সম্ভাব্য মজুতের পরিমাণ ৭০৬ মিলিয়ন মেট্রিক টন। পানি প্রতিরোধের মাধ্যমে কয়লা উত্তোলন করার সম্ভব। দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার পুঁটিমারা ইউনিয়নের দিঘীপাড়া কয়লাখনি পানির কারণে খনি থেকে কয়লা উত্তোলন করা না গেলে এবার নতুন পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করার পরামর্শ দিয়েছে জরিপকারী কনসোর্টিয়ামের কর্মকর্তারা।
জরিপকারী প্রতিষ্ঠানটি গত সপ্তাহে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের কাছে এ বিষয়ে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ইনকিলাবকে বলেন, জরিপকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদন পেয়েছি। পরিবেশ ঠিক রেখে ও কৃষিজমির ব্যবহার না কমিয়ে কয়লা উত্তোলন যদি লাভজনক হয় কেবল তখনই কয়লা উত্তোলন করবে সরকার। প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে ভূমির অপর্যাপ্ততা রয়েছে। কয়লা উত্তোলন করা হলে বিশাল এলাকা কৃষি উৎপাদনে আর কাজে লাগানো যায় না। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষিজমি সংরক্ষণ করে কয়লা উত্তোলন করার নির্দেশ দিয়েছেন। কৃষিজমি নষ্ট হবে এ বিবেচনায় সরকার উত্তরবঙ্গের কয়লাখনি উন্নয়ন করা থেকে বিরত রয়েছে।
দিঘীপাড়া কয়লাখনি ফিজিবিলিটি স্টাডি প্রকল্পের কর্মকর্তার জানান, দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার পুঁটিমারা ইউনিয়নের অন্তর্গত দিঘীপাড়া কয়লাখনির ছড়িয়ে থাকা কয়লা পানির কারণে দীর্ঘ দিন ধরে উত্তোলন সম্ভব হবে না এমন মতামত ছিল। তবে জরিপকারী জার্মানি ও অস্ট্রেলীয় যৌথ কনসোর্টিয়াম দীর্ঘ জরিপের পর যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, মাল্টিস্লাইস লংওয়াল টপ কোল কেভিং উইথ কাট অফ ওয়াল পদ্ধতি অর্থাৎ মাটির নিচে দেয়াল দিয়ে পানি প্রতিরোধের মাধ্যমে এ কয়লা উত্তোলন করা যাবে। এ পদ্ধতিতে বার্ষিক ৩ মিলিয়ন মেট্রিক টন হিসেবে ৩০ বছরে ৯০ মিলিয়ন মেট্রিক টন কয়লা উত্তোলন করা সম্ভব হবে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৩১ মে দিঘীপাড়া কয়লা খনিতে জরিপ করার বিষয়ে একটি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি (বিসিএমসিএল) একটি চুক্তি সই করে সরকার। জার্মানির দুই কোম্পানি মিবরাগ কনসালটিং ইন্টারন্যাশনাল জিএমবিএইচ ও ফুগরো জার্মানি ল্যান্ড জিএমবিএইচ এবং অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানি আরপিএম গ্লোবাল নামের তিনটি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে এই কনসোর্টিয়াম গঠন করা হয়। ফিজিবিলিটি স্টাডি ফর ডেভেলপমেন্ট অব দিঘীপাড়া কোল ফিল্ড এ্যাট দিঘীপাড়া, দিনাজপুর, বাংলাদেশ নামের প্রকল্পটির চুক্তি সইয়ের পর কনসোর্টিয়ামটি গত তিন বছর ধরে দীঘিপাড়া কয়লা খনিতে জরিপ কাজ করে। চুক্তি অনুযায়ী কনসোর্টিয়াম ভৌত কাজের অংশ হিসেবে ২৪ বর্গকিলোমিটার এলাকায় টপোগ্রাফিক সার্ভে, ৬ বর্গকিলোমিটার এলাকায় ৩-ডি সিসমিক সার্ভে, ৬৭টি বোরহোল খনন, ৪টি প্রোডাকশন ওয়েল, ১০টি পিজোমেট্রিক বোরহোল খনন, ২০টি অবজারভেটোরি বোরহোল খনন, ১২টি প্যাকার টেস্ট, ইআইএ, ইএমপি এবং আরএপি স্টাডির কাজ শেষ করে।
প্রকল্পটির পরিচালক জাফর সাদিক ইনকিলাবকে বলেন আমরা আমাদের জরিপ কাজ শেষ করেছি। গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয় ও পেট্রোবাংলায় আমাদের জরিপের বিষয়ে একটি খসড়া প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। শিগগির চূড়ান্ত প্রতিবেদন জ্বালানি মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হবে। প্রতিবেদনে আমরা দীঘিপাড়া কয়লা খনির সম্ভাব্য মজুতের পরিমাণ জানিয়েছি ৭০৬ মিলিয়ন মেট্রিক টন। এর আগে এই খনিতে পানির কারণে কয়লা তোলা যাবে না বলে শোনা গেলেও আমরা জরিপের মাধ্যমে দেখেছি এই খনি থেকে কয়লা উত্তোলন সম্ভব। তবে পদ্ধতি কিছুটা জটিল। সেখানে মাল্টি স্লাইস লংওয়াল টপ কোল কেভিং উইথ কাট অফ ওয়াল পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন যাবে। যে খনি থেকে কয়লা উত্তোলন হবে সেখানে যেহেতু পানির একটা বিষয় আছে সেহেতু মাটির নিচে আমাদের একটি দেয়াল তৈরি করতে হবে। বেন্টোনাইট নামক একটি কেমিক্যাল এবং কাদামাটি দিয়ে একটি দেয়াল তৈরি করতে হবে। মাটির নিচে ৮০ থেকে ১০০ মিটার ভেতরে এই দেয়াল হবে পানি প্রতিরোধী। পানির প্রতিরোধ করার পর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির মতো স্তরে স্তরে কেটে আনা হবে কয়লা।
এদিকে প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, মাটির নিচে প্রায় ৩৭০ মিটার নিচে রয়েছে এই কয়লা। ফিজিবিলিটি স্টাডির প্রতিবেদন চ‚ড়ান্ত হলে দরপত্র করা হবে অথবা ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে কয়লা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত নেবে জ্বালানি বিভাগ। তারা জানান, জার্মানিতে এই পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন হচ্ছে। মন্ত্রণালয় থেকে এরইমধ্যে এই পদ্ধতি দেখতে জার্মানি ঘুরে এসেছে একটি প্রতিনিধিদলও। ফলে দিঘীপাড়ার জন্য এই পদ্ধতিই হবে সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি। দিঘীপাড়ায় প্রাপ্ত কয়লা অত্যন্ত উন্নতমানের। এ কয়লা বিটুমিনাস টু সাব-বিটুমিনাস প্রকৃতির বলে তারা জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।