Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চুড়িহাট্টার আগুনে নিহতদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দাবি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

এক বছর আগে রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ওয়াহেদ ম্যানশনের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে হতাহতদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে তাদের স্বজনরা। সেই সঙ্গে তারা পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক ও দাহ্য পদার্থের গুদামগুলো সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নেওয়ারও দাবি করেছেন।
গতকাল শুক্রবার ওয়াহেদ ম্যানশনের সামনে পাঁচটি সামাজিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘ঐক্যবদ্ধ সকল সামাজিক সংগঠনের’ ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ওয়াহেদ ম্যানশনের আগুনে ঘটনাস্থলে ৬৭ জন মারা যান। পরে আহতদের মধ্যে থেকে আরও চারজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
সংগঠনটির আহ্বায়ক ও নিহতদের মধ্যে দুজনের স্বজন এম এ রহিম বলেন, চুড়িহাট্টা ট্রাজেডির এক বছর অতিবাহিত হয়ে গেল। অথচ নিহত, আহত, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো কীভাবে আছে খোঁজ নেওয়ার লোক পাইনি। পাইনি কোনো সরকারি সাহায্য সহযোগিতা। অসহায় পরিবারগুলো দিন দিন ভিটা-বাড়ি বিক্রি করে নিঃস্ব হচ্ছে। আর্থিকসহ অন্যান্য সহায়তা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।
আগুনে আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা ও নিহতদের পরিবারের চিকিৎসা ও পড়াশোনার ব্যয় বহন, অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের আর্থিক সহযোগিতা প্রদান ও ক্ষতিগ্রস্ত ওয়াহেদ ম্যানশন মেরামতের সুযোগ দিয়ে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করার ব্যবস্থা করার দাবি এই সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়। অবশ্য ২০ ফেব্রুয়ারি নিহতদের ৩১ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা ও যোগ্যতা অনুসারে চাকরির ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মেয়র সাঈদ খোকন।
সংবাদ সম্মেলনে নিহতের স্বজনরা বলেন, ৩১ পরিবারকে আর্থিক সাহায্য সহযোগিতা এবং কোনো পরিবারের যোগ্য ব্যক্তিকে চাকরি দেওয়ার কথা বলেছেন মেয়র। আমরা মেয়রের এই আশ্বাসে বিশ্বাস করছি। কিন্তু অন্যান্য পরিবারগুলো সহায়তা পাওয়ার কোনো ব্যবস্থা এখনও হয়নি। বাংলাদেশ প্লাস্টিক ব্যবসায়ী সমিতি নিহতদের পরিবারগুলোকে ৫০ হাজার টাকা করে সহযোগিতা করেছে বলে জানানো হয়।
সংগঠনের নেতা এম এ রহিম বলেন, চুড়িহাট্টার অগ্নিকান্ডে যারা আহত হয়েছিলেন তাদেরকে তাৎক্ষণিক যে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল, তারপর আর সরকারি সহায়তায় কোনো চিকিৎসা হয়নি।
রহিমের দুই ভাতিজা মাসুদ রানা ও মাহবুবুর রহমান রাজু ওয়াহেদ ম্যানশনে ‘এম আর টেলিকম’ নামে দোকান চালাতেন। দুই ভাইই আগুনে মারা যান। তাদের বাবা সাহেব উল্লাহ বলেন, আমার দুই ছেলে আগুনে মারা গেছে। এখন পরিবারে দুই ছেলের স্ত্রীসহ আমরা সাত সদস্য আছি। ছেলেদের হারিয়েছি, ব্যবসা হারিয়ে এখন যে বেঁচে আছি খুব অসহায় দিন যাপন করতে হচ্ছে।
আগুনে নিহত ওয়াসি উদ্দিন মাহিদের চাচাতো ভাই আশিক উদ্দিন সৈনিক বলেন, আমরা যারা এখানে আছি তারা কেউ কেমিক্যাল বিশেষজ্ঞ না। এই ভবনের ক্ষতিকর কী কেমিকেল ছিল তা আমরা জানি না। তবে আমি দেখেছি বিস্ফোরণে এই ভবনের দেয়াল উড়ে আশেপাশের ভবনগুলোতে পড়েছে।
‘বেশি টাকার লোভে’ কেমিক্যালের গুদামের আর কোনো বাড়ি ভাড়া না দিতে এলাকার বাড়িওয়ালাদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান। ওয়াহেদ ম্যানশনের আগুনে নিহত মো. জুম্মনের ছেলে ও অগ্নিকান্ডের ঘটনায় মামলার বাদী মো. আসিফ বলেন, আমি বাবা হারিয়েছি। বাবা হারানোর যে কত ব্যথা কেবল আমিই বুঝি।
সংবাদ সম্মেলনের পর নিহত-আহদের পরিবার-স্বজনসহ অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে ওয়াহেদ ম্যানশনের সামনে একটি মানববন্ধন করা হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নিহত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ