Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পূর্ব জেরুজালেমে আরও ৩ হাজার অবৈধ বসতি নির্মাণ করবে ইসরায়েল

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৭:১২ পিএম

অধিকৃত পশ্চিমতীরে আবারও নতুন করে বাড়ি নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। কয়েক বছর আগে পূর্ব জেরুজালেমে ইহুদিদের জন্য ৩ হাজার বাড়ি নির্মাণের ঘোষণা দেয়ার পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনার মুখে সেই পরিকল্পনা স্থগিত হয়ে যায়। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশের পর বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সেই বসতি নির্মাণ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।

২০২০ সালের ২৮ জানুয়ারি ‘ডিল অব দ্য সেঞ্চুরি’ বা শতাব্দীর সেরা চুক্তি নামের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক জেরুজালেম শহরকে ইসরায়েলি ভূখণ্ড হিসেবে দেখানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় শহর জেরুজালেমের বাইরের আবু দিস নামের একটি ছোট গ্রামকে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে। ওই পরিকল্পনায় জর্ডান নদীর পশ্চিম তীরের অংশবিশেষ ও গাজা উপত্যকা নিয়ে নামমাত্র একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের কথা বলা হয়েছে, যে রাষ্ট্রের নিজস্ব কোনও সেনাবাহিনী থাকবে না। এই পরিকল্পনা ঘোষণার পর তা প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। এমন বাস্তবতায় জর্ডান উপত্যকা ও পূর্ব জেরুজালেমে আরও তিন হাজার ইহুদি বসতি স্থাপনের ঘোষণা দিলেন নেতানিয়াহু।

২০১৪ সালে ফিলিস্তিনের গিভাট হ্যামাতোসে ইহুদিদের জন্য ২ হাজার ৬১০টি বসতি স্থাপনের অনুমতি দেয় ইসরায়েলের জেরুজালেম পরিকল্পনা কমিটি। পরে ওই বসতি নির্মাণের সমালোচনা করে যুক্তরাষ্ট্র, ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এতে সেই সময়ে ওই পরিকল্পনা স্থগিত করে তেল আবিব কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার জেরুজালেমের উপকণ্ঠে হার হোমাতে ইসরায়েলি বসতি পর্যবেক্ষণে যান দেশটির প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। সেই সময়ে এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আজ আমি গিভাট হ্যামাতোসে ইহুদিদের জন্য ৩ হাজার বাড়ি নির্মাণের অনুমোদন দিলাম। যার মধ্যে এক হাজারের নির্মাণ কার্যক্রম খুব শিগগিরই শুরু হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বেইট সাফাফায় আরবদের জন্য ১ হাজার বাড়ি নির্মাণ করা হবে।’ তবে ওই এলাকায় কবে নাগাদ নির্মাণ কার্যক্রম শুরু হবে সে সম্পর্কে কিছুই জানাননি তিনি। অন্য প্রকল্পে হার হোমাতে আরও ২ হাজার ২০০ বাড়ি নির্মাণ করা হবে।

ইসরায়েলের ওই বসতি স্থাপন পরিকল্পনা ঘোষণার পর নিন্দা জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। তার একজন মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনে বলেন, ‘নেতানিয়াহুর হাজার হাজার বসতি স্থাপনের ঘোষণাই হচ্ছে দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পদ্ধতিগত লঙ্ঘন এবং ট্রাম্প পরিকল্পনার বাস্তবায়ন।’

উল্লেখ্য, ১৯৯০ এর দশকের শুরু থেকে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে বেশ কয়েক দফায় শান্তি আলোচনা হয়েছে। ফিলিস্তিনিরা চায় পশ্চিম তীরে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে এবং পূর্ব জেরুজালেমকে এর রাজধানী বানাতে। ১৯৬৭ সালের আরব যুদ্ধের পর থেকে ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে রেখেছে। পূর্ব জেরুজালেমকে নিজেদের অবিভাজ্য রাজধানী বলে দাবি করে থাকে ইসরায়েল। অবশ্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পূর্ব জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। ১৯৬৭ সালের পর পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে প্রায় ২০০ বসতি স্থাপন করেছে ইসরায়েল। পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমে স্থাপিত এসব বসতিতে প্রায় ৬ লাখ ইসরায়েলি বসবাস করে। আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় এ বসতি স্থাপনকে অবৈধ বলে বিবেচনা করা হলেও ইসরায়েল তা মানতে নারাজ। সূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস।



 

Show all comments
  • jack ali ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৮:৫৬ পিএম says : 0
    Whole Islamic world is silent-- whereas muslims are getting killed/raped/their land is occupied--- but we muslim we don't have humanity...
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসরায়েল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ