Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ব্রিটেনেও দেখাতে হচ্ছে নাগরিকত্বের প্রমাণ, বাড়ছে বিভ্রান্তি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৪:৩৭ পিএম

ভারতে এনআরসি নিয়ে যে ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, ব্রেক্সিট পরবর্তী যুক্তরাজ্যেও অনেকটা সে ধরনের পরিস্থতি তৈরি হতে চলেছে। সেখানে ৯৫ বছর বয়সী এক ইতালীয় ব্যক্তিকে তার নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে বলা হয়েছে। তার নাম আন্তোনিও ফিনেল্লি। গত ৬৮ বছর ধরে তিনি ইউকে-তে রয়েছেন। ব্রেক্সিটের পরে তাকে ইউকে-তে থাকতে হলে নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে বলে স্বরাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে। গত ৩২ বছর ধরে সরকারি পেনশন পাওয়া আন্তোনিও পড়েছেন বিব্রতকর অবস্থায়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে যে পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল, তারই আওতায় আন্তোনিও ইতালি থেকে ইউকে-তে এসেছিলেন। অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে তার আবেদন গৃহীত হয়েছিল। ইউকে-তে তাকে স্বাগত জানানো হয় অগ্রিম বেতন এবং একটি স্যান্ডউইচ দিয়ে। অথচ, সেই আন্তোনিওর বক্তব্য, ইউকে-তে থাকার অধিকারের প্রমাণ জোগাতে তাকে ৮০ পাতার ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট জমা দিতে হয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন সেটলমেন্ট স্কিমে আবেদন করার পরে আন্তোনিওকে বলা হয়, তিনি যে ইউকে-তে টানা পাঁচ বছর রয়েছেন, তার প্রমাণ দিতে। অথচ ইউকে-র স্বরাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আন্তোনিওর স্ত্রী, ছেলে মারা গিয়েছেন। তিনি বলছেন, ‘পুরোটাই ভুল।’ তার চিন্তা নাতিনাতনিদের নিয়ে- ‘ওরা ভালো থাকবে তো? ওই সময়ে অভিবাসীদের যে প্রশংসাপত্র দেয়া হয়েছিল, তা আমার কাছে রয়েছে। আমি তো আজীবন এখানে কাজ করেছি, পেনশনও নিচ্ছি। আমাকে কেন ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট দিতে হচ্ছে!’

আন্তোনিওকে দেখে উদ্বেগ বেড়েছে তার মতো অনেকেরই। জীবনের উপান্তে এসে কাগজ দেখাতে হবে কেন, সেটাই অনেকে বুঝে উঠতে পারছেন না। ইতালীয়দের পরামর্শদাতা সংস্থা ইনকা সিজিলের এক স্বেচ্ছাসেবী দিমিত্রি স্কারলাতো জানিয়েছেন, আন্তোনিওর মতো এক বৃদ্ধাকে তিনি চেনেন যিনি কাগজ প্রশ্নে প্রায় হৃদরোগে আক্রান্ত হতে বসেছিলেন। দিমিত্রির প্রশ্ন, ‘আন্তোনিও এতগুলি বছর ধরে এ দেশে রইলেন। অথচ এই সিস্টেমের কাছে ওর অস্তিত্বই নেই। কেন?’ আন্তোনিও অবশ্য প্রথম নন, যাকে ‘কাগজ’ দেখাতে বলল ইউকে-র স্বরাষ্ট্র দপ্তর। গত সপ্তাহে ১০১ বছর বয়সি জিওভানি পামেইরোকে বলা হয়েছিল তার অভিভাবকদের নিয়ে যেতে যাতে তারা জিওভানির হয়ে নাগরিকত্বের আবেদন জানাতে পারেন। এই বিভ্রাটের কারণ, সিস্টেমে জিওভানির বয়স দেখানো হচ্ছে ১ বছর।

কী বলছে স্বরাষ্ট্র দপ্তর? তাদের বক্তব্য, এগুলি অটোমেটেড চেক। এতে বিপুল সংখ্যক আবেদনকারীকে অতিরিক্ত প্রমাণপত্র দেখাতে হবে, এমনটা নয়। তবে প্রয়োজনে একাধিক তথ্য তারা দেখাতে পারেন যেমন ডাক্তারের নোট, পে-স্লিপ ইত্যাদি। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যুক্তরাজ্য


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ