পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) কৃষিঋণ বিতরণ হয়েছে ১৩ হাজার ১০৪ কোটি টাকার। অথচ চলতি অর্থবছরে ঋণ দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা ২৪ হাজার ১২৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ পুরো ব্যাংকিং খাত এ সাত মাসে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার ৫৪ শতাংশ কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে সরকারি ব্যাংক বিতরণ করেছে ৬ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা। যা এ অর্থবছরে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার ৬০ শতাংশ। অন্যদিকে বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা। যা বেসরকারি ব্যাংকগুলোর উপর নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার ৫০ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হাল-নাগাদ প্রতিবেদনে এ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কৃষি ঋণ বিতরণ হয়েছে মোট ২৩ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১ হাজার ৮১৬ কোটি টাকা বেশি। এটি আগের অর্থবছরের (২০১৭-১৮) তুলনায় ২ হাজর ২২২ কোটি টাকা বেশি। সে বছর ২৩ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার ঋণের মধ্যে সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন ৮ ব্যাংক থেকে সরবরাহ করা হয় ১১ হাজার ২৯৩ টাকার কৃষিঋণ। বাকি ১২ হাজার ৩২৪ কোটি টাকার ঋণ দেয় বিদেশি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলো। দেশে কাজুবাদাম ও রাম্বুটানের চাহিদা বাড়ায় এ খাতে কৃষিঋণ বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৯-২০ অর্থবছরের কৃষিনীতি অনুযায়ী এখন এ দুই ফল চাষেও ঋণ দিবে ব্যাংকগুলো।
কাজু বাদামের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে আমাদের দেশে। প্রধানত আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হয়ে থাকে কাজুবাদামের চাহিদা। তবে দেশেও এটা চাষ করার সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের চাহিদা পূরণ করা হলে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা সম্ভব। ইনসিটো পদ্ধতিতে কাজুবাদাম চাষ খুবই সময়োপযোগী একটি প্রযুক্তি। এটি পাহাড়ি এলাকায় ঢালু ও টিলাযুক্ত পতিত অনুর্বর জমির বাণিজ্যিক ফসল। পুষ্টি গুণাগুণের বিবেচনায় এ বাদামকে সুপারফুড বলা হয়। এছাড়া এটা থেকে তেলও উৎপাদন করা যায়। উপযুক্ত অঞ্চলে কাজুবাদাম চাষাবাদের উদ্দেশে ব্যাংকগুলোকে কৃষিঋণ বিতরণের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
অন্যদিকে চিরসবুজ রাম্বুটানগাছ ১২ থেকে ২০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। রাম্বুটানগাছ পুরুষ ও স্ত্রী দুই ধরনের হয়ে থাকে। বাংলাদেশের আবহাওয়া রাম্বুটান চাষের জন্য উপযোগী। দেশের দক্ষিণাঞ্চ ও পার্বত্য জেলাসহ ঢাকা, খুলনা, যশোর জেলায় এ ফলের চাষাবাদের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রায় সব ধরনের মাটিতেই এই ফল চাষ করা যায়। রাম্বুটান চাষেও নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী ঋণ বিতরণ করতে পারবে ব্যাংক।
দেখা গেছে, খাদ্য নিরাপত্তা ও পল্লী অঞ্চলে অর্থ সরবরাহের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি তথা দারিদ্র্য দূরীকরণে সরকারের লক্ষ্য রয়েছে। সরকারের লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ব্যাংকিং খাতের মোট বিতরণ করা ঋণের কমপক্ষে ২ শতাংশ কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা বাধ্যতামূলক। একই সঙ্গে সুদের সর্বোচ্চ হার বেঁধে দেয়া হয়েছে ৯ শতাংশ। যে সব ব্যাংক কৃষিঋণ বিরতণ কম করে, জরিমানা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের একাউন্ট থেকে টাকা কেটে রাখা হয়। পরের বছর অনর্জিত টাকা পুনরায় বিতরণ করলে কেটে রাখা টাকা ফেরত দেয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক তথ্যে দেখা যায়, ২০০৯-১০ অর্থবছরে যখন কৃষিঋণ বিতরণ ২ শতাংশ হারে বাধ্যতামূলক করা হয়, সে বছর কৃষিঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ৯ হাজার কোটি টাকার কিছু উপরে। ১০ বছরে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রায় দেড়শ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ২১ হাজার ৮০০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। চলতি অথবছরে এর হার আরো বাড়বে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণ বিভাগ সূত্র জানায়, কৃষিঋণ বিতরণে ২ শতাংশ বাধ্যতামূলক করে দেয়ায় কৃষি খাতে অর্থের সঞ্চালন বেড়েছে, যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে কর্মসংস্থানে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।