Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনার প্রভাব কাটিয়ে শিগগিরই অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে : চীন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০৮ পিএম

চীন জোরালো আস্থা প্রকাশ করে বলেছে, করোনাভাইরাসের মহামারী খুব দ্রæতই শেষ হবে এবং দেশের অর্থনীতিও শিগগিরই আবার শক্তিশালী হয়ে উঠবে। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার ছিন ক্যাং আজ (শনিবার) মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে একথা বলেছেন।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব যখন শেষ হয়ে যাবে তখন দ্রæত গতিতে ভোক্তাদের চাহিদা বাড়তে থাকে এবং সে অনুযায়ী অর্থনীতি আবার শক্তিশালীভাবে ঘুরে দাঁড়াবে।
করোনাভাইরাসের মহামারী মোকাবেলায় চীনের পদক্ষেপের প্রতি জোরালো সমর্থন জানিয়ে এর আগের দিন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বক্তব্য রেখেছেন। সে সময় তিনি মার্কিন সরকারের সমালোচনা করে বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ে তারা অতিমাত্রায় প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ওয়াং ই বলেন, “করোনাভাইরাস পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এটি সত্যিই আকস্মিক সমস্যা এবং চীন ও সারা বিশ্বের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।”
তিনি দাবি করেন, চীন করোনাভাইরাসের মোকাবেলায় যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তা বিশ্বের অনেক দেশের জন্যই কঠিন হতো।
রয়টার্সের আয়োজনে অর্থনীতিবিদদের এক মতামত জরিপ বলছে, ভাইরাসের ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ রুখে দেয়া গেলে শিগগিরই পুনরুজ্জীবিত হবে দেশটির অর্থনীতি।
৭-১৩ ফেব্রæয়ারি পরিচালিত ওই জরিপে অংশ নেন চীনের মূল ভূখন্ড, হংকং, সিঙ্গাপুর, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের ৪০ জন অর্থনীতিবিদ। তারা জানান, ২০২০ সালের প্রথম প্রান্তিকে চীনের প্রবৃদ্ধি গত প্রান্তিকের ৬ শতাংশ থেকে ৪ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে আসবে। নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে চীনের প্রবৃদ্ধিতে এ ধস প্রত্যাশিতই ছিল। ফলে চলতি বছর দেশটির মোট অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সর্বোচ্চ ৫ দশমিক ৫ শতাংশ হবে বলে আগেই পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল, যা ১৯৯০ সালের পর প্রবৃদ্ধির সর্বনিম্ন হার। গত বছর চীনের প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ১ শতাংশ।
তবে জরিপে অংশগ্রহণকারী অর্থনীতিবিদরা এর মধ্যেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তাদের মতে, প্রথম প্রান্তিক বাজেভাবে কাটলেও দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকে চীনের প্রবৃদ্ধি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করবে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। মূলত চীনের মূল ভূখন্ডের বেশ কয়েকজন অর্থনীতিবিদের আশাবাদী পূর্বাভাসের কারণে প্রবৃদ্ধির এ সম্ভাব্য হার বেড়েছে। অর্থনীতিবিদদের এ পূর্বাভাস ছিল ২ দশমিক ৯ থেকে ৬ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে। উল্লেখ্য, নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম চিহ্নিত হয় চীনের উহান শহরে। শহরটি বৈশ্বিক বিভিন্ন পণ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ কেন্দ্র।
প্যানথিয়ন ইন লন্ডনের এশিয়াবিষয়ক প্রধান অর্থনীতিবিদ ফ্রেয়া বেয়ামিশ বলেন, ভাইরাসের সংক্রমণ ও সংবরণ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে চীনের যে কী পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হবে, সে বিষয়ে কেউই কিছু স্পষ্ট করে বলতে পারছে না। পরিসংখ্যানের অস্পষ্টতার কারণে আমরা সম্ভবত এ বিষয়ে নিশ্চিতও হতে পারব না। তবে আমরা ধারণা করছি, প্রথম প্রান্তিকে দেশটির প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশেরও নিচে নেমে আসবে। তাছাড়া চতুর্থ প্রান্তিকে চীনের প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৪ শতাংশ, সরকারিভাবে পূর্বাভাসকৃত ৬ শতাংশের অনেক কম।
তিনি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত উৎপাদন খাতে যে ক্ষতি হয়েছে তা হয়তো বছরের অবশিষ্ট সময়ে পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হবে। কিন্তু সেবা খাতে যে ক্ষতি হয়ে গেছে, তা আর পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে না। কারণ ভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ভোক্তারা যেসব সেবা গ্রহণ করেননি বা করতে পারেননি, তা তারা আগামীতে বাড়িয়ে গ্রহণ করবেন না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ