বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
শিল্পোৎপাদিত খাদ্যে অসম্পৃক্ত চর্বি বা ট্রান্স ফ্যাটের ফলে সৃষ্ট হৃদরোগের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষ মারা যায়। এ ধরনের পরিস্থিতিকে মানব সৃষ্ট মহামারি হিসেবে ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাই স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে ভোক্তাদের সতর্ক করার সঙ্গে সঙ্গে এ ধরনের পণ্য উৎপাদনকারী শিল্প কল-কারখানার মালিকদের সচেতনতা বাড়ানো জরুরি। পাশাপাশি হৃদরোগে মৃত্যু ঝুঁকি মোকাবেলায় ট্রান্স ফ্যাট জাতীয় খাদ্য ডালডা ও বনস্পতির উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ এবং ব্যবহার জনস্বার্থে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাট, হৃদরোগ ঝুঁকি এবং করণীয় : ভোক্তা পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ কথা বলেন।
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এবং প্রজ্ঞা-প্রগতির জন্য জ্ঞান যৌথভাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ট্রান্স ফ্যাটের প্রভাব, এর বৈশ্বিক পরিস্থিতি এবং ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় করণীয় সম্পর্কে তিনটি পৃথক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যথাক্রমে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, প্রজ্ঞার পরিচালক ও কর্মসূচি প্রধান হাসান শাহরিয়ার এবং ক্যাবের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর আহম্মদ একরামুল্লাহ।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক, বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মুয়াজ্জেম হোসাইন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মাহাবুব কবির, পাবলিক হেল্থ স্পেশালিস্ট মুহাম্মদ রূহুল কুদ্দুস।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর ৩০ শতাংশই হৃদরোগের কারণে হচ্ছে। এর জন্য ট্রান্স ফ্যাট দায়ি বলে তারা মন্তব্য করেন।
সভায় বক্তারা জানান, ট্রান্স ফ্যাটের ফলে শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্বেই অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর হার বাড়ছে। পৃথিবীতে প্রতিবছর ১ কোটি ৭৯ লাখ মানুষ হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করে। যার মধ্যে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষ শিল্পোৎপাদিত ট্রান্স ফ্যাট গ্রহণের ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ ধরণের পরিস্থিতিকে ইতোমধ্যে মানব সৃষ্ট মহামারি হিসেবে ঘোষণা করেছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ডবি্লউএইচও সকল খাদ্যপণ্যে ট্রান্স ফ্যাটের পরিমাণ মোট ফ্যাটের সর্বোচ্চ দুই শতাংশ নির্ধারণ করেছে। থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, আমেরিকা ও কানাডা ট্রান্স ফ্যাটের প্রধান উৎস ডালডা ও বনস্পতির উৎপাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে বলে তারা জানান।
বক্তারা বাংলাদেশে ট্রান্স ফ্যাটজনিত মৃত্যু মোকাবেলায় সকল খাদ্যপণ্যে সর্বোচ্চ দুই শতাংশ ট্রান্স ফ্যাটের উপস্থিতি নিশ্চিত করার তাগিদ দেন। এসময় শিল্পমন্ত্রী বলেন, খাদ্যে অসম্পৃক্ত চর্বি বা ট্রান্স ফ্যাটের ফলে সৃষ্ট হৃদরোগ মোকাবেলায় বর্তমান সরকার পুরোনো আইন পর্যালোচনা করে যুগোপযোগী করবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্দেশিত গাইডলাইন অনুসরণ না করে যেসব খাদ্যপণ্য উৎপাদন হচ্ছে, প্রয়োজনে জনস্বার্থে সেগুলো নিষিদ্ধ করা হবে।
নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, ট্রান্স ফ্যাটের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআই ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। খাদ্যপণ্যের লেবেলে ট্রান্স ফ্যাটের পরিমাণ উল্লেখ করার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হবে। যেসব খাদ্যপণ্য জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকির কারণ হতে পারে, সেগুলো সম্পর্কে শিল্প মন্ত্রণালয় সজাগ রয়েছে। অনিরাপদ ও নিম্নমানের খাদ্যপণ্যের বিরুদ্ধে বিএসটিআইয়ের তদারকি জোরদার করা হবে বলে জানান শিল্পমন্ত্রী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।