Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, চীনে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসছে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৬:৩৭ পিএম

জানুয়ারির শেষের দিক থেকে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমে আসতে শুরু করায় চীনে তেলের দাম বেড়েছে, বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন যে, মহামারী থেকে ফিরে আসতে শুরু করায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল গ্রাহক দেশটির জ্বালানী চাহিদা স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

ব্রেন্ট ক্রুড এলসিওসি’র মূল্য প্রতি ব্যারেলে ৯৮ সেন্ট বৃদ্ধি পেয়ে ৫৪.৯৯ ডলার হয়েছে। অর্থাৎ, ১.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডাব্লিউটিআই) সিএলসি ১ এর মূল্য ব্যারেল প্রতি ৮১ সেন্ট বা ১.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৫০.৬৫ ডলারে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবারের তথ্য অনুসারে, চলতি বছর জানুয়ারির ৩০ তারিখের পর থেকে পর থেকে চীনে করোনাভাইরাস আক্রান্তের ঘটনা সর্বনিম্নে নেমে গেছে।

চীনে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং অবরুদ্ধ অবস্থার কারণে জ্বালানী তেলের ব্যবহার কমে গিয়েছে। দেশটির দুই বৃহত্তম তেল পরিশোধন সংস্থা বলেছে যে, চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে তারা প্রতিদিন প্রায় ৯ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল তেল কম উৎপাদন করবে। যা ২০১৯ সালের তুলনায় তাদের উৎপাদন ৭ শতাংশ কম হচ্ছে।

এ বিষয়ে সিউলের স্যামসাং ফিউচারের পণ্য বিশ্লেষক কিম কাওয়ং-রায় বলেছেন, ‘নতুন আক্রান্তের হার হ্রাস পাওয়ায়, বাজারের গতিশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে।’

মার্কিন জ্বালানী তথ্য প্রশাসন (ইআইএ) মঙ্গলবার চীনে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে তেলের ব্যবহারকে কমে যাওয়ার তাদের বৈশ্বিক তেল চাহিদা বৃদ্ধির পূর্বাভাস থেকে ৩ লাখ ১০ হাজার বিপিডি (ব্যারেল পার ডে) কমিয়ে দিয়েছে।

তেল রফতানিকারী দেশসমূহের সংস্থা (ওপেক) এবং রাশিয়াসহ তাদের মিত্র যারা ওপেক প্লাস নামে পরিচিত তারা গত সপ্তাহে তেলের চাহিদা কমে যাওয়ায় উৎপাদন আরও ৬ লাখ বিপিডি কমিয়ে দেয়ার সুপারিশ করেছিল।

আমেরিকান পেট্রোলিয়াম ইনস্টিটিউট থেকে প্রাপ্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানের তথ্যে দেখা গেছে, বিশ্লেষকদের ধারণা ভুল প্রমাণ করে মার্কিন তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ৬০ লাখ ব্যারেল বেশি উৎপাদন করেছে।

নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কমে আসায় আগামী এপ্রিলের মধ্যে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শেষ হতে পারে বলে আশা করছেন চীনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। জানুয়ারির পর থেকে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে সবচেয়ে কমসংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন মঙ্গলবার; যে কারণে তাদের এই আশায় স্বস্তি খুঁজছেন অনেকে।

মঙ্গলবার চীনের প্রাদুর্ভাব বিষয়ক শীর্ষ মেডিকেল উপদেষ্টা চিকিৎসক ঝং নাশান বলেছেন, কয়েকটি প্রদেশে নতুন করে আক্রান্ত কমে এসেছে এবং চলতি মাসে এই মহামারিটি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে বলে প‚র্বাভাষ দিয়েছেন তিনি। তবে আশার বাণীও শুনিয়েছেন চীনা এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। তিনি বলেছেন, আমি আশা করছি এই প্রাদুর্ভাব অথবা এই ঘটনা আগামী এপ্রিলের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।

চীনা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের তথ্য বলছে, চীনে এখন পর্যন্ত নতুন এই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৪৪ হাজার ৬৫৩ জন। এর মধ্যে মঙ্গলবার আক্রান্ত হওয়া ২ হাজার ১৫ জনও রয়েছেন; যা ৩০ জানুয়ারির পর একদিনে সর্বনিম্ন আক্রান্ত। মঙ্গলবার চীনের মূল ভূখন্ডে করোনায় মারা গেছেন ৯৭ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট প্রাণহানির সংখ্যা ১ হাজার ১১৩ জনে পৌঁছেছে।

উল্লেখ্য, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সুইজারল্যান্ডে এক বৈঠকে চীনের উহানে উৎপত্তি হওয়া এই ভাইরাসের নামকরণ করেছে। আনুষ্ঠানিকভাবে এই ভাইরাসের নামকরণ করা হয়েছে কোভিড-১৯ নামে। করোনার প্রথম দুটি অক্ষর সিও, ভাইরাসের প্রথম দুই অক্ষর ভিআই, ডিজিজের প্রথম অক্ষর ডি এবং ২০১৯ সালে এই ভাইরাসের উৎপত্তি হওয়ায় ১৯ যোগ করে কোভিড-১৯ নামকরণ করা হয়েছে। সূত্র: রয়টার্স, সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ