পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ফালুজা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ভিন্ন মত
ইনকিলাব ডেস্ক : ইরাকের ফালুজা আইএসমুক্ত করার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা থেকে শুরু করে দেশটির প্রশাসন ইরাকি বাহিনীকে যখন অভিনন্দন জানাচ্ছে, সেই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা বলছেন সম্পূর্ণ ভিন্ন কথা। তাদের মতে, ইরাক থেকে আইএস সমূলে উচ্ছেদ হয়নি। এরা সেখানে ঘাপটি মেরে আছে। তাই যে কোনো সময় এরা আবার ইরাক দখল করতে পারে। এর আগে ভাবা হতো, ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসকে পরাজিত করা যাবে না। সেই ইমেজ এখন আর নেই তাদের। আইএসের কথিত রাজধানী সিরিয়ার রাকা ও ইরাকের ফালুজা বিজয়ের মধ্যদিয়ে তা ধ্বংস হয়ে গেছে। কিন্তু মাত্র ক’দিন আগেই রাকার উত্তরাঞ্চলীয় একটি শহর দখল করে নিয়েছে জিহাদি সংগঠনটি। এই এলাকায় আছে তেলক্ষেত্র, বিমান ঘাঁটি এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ পানির বাঁধ। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সূত্রের মতে, ফালুজা হারানোর পর এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। সুন্নি মুসলিমরা আইএসমুক্ত অঞ্চলে নিজেদের বৈধতা চাইছে। এর কারণ হচ্ছে, আইএসমুক্ত করার পেছনে কুর্দি এবং শিয়ারাও ছিল, সে কারণে আইএসমুক্ত অঞ্চলে শিয়া এবং কুর্দিদের দাপট সহ্য করতে পারবে না সুন্নিরা। তাই অসন্তুষ্ট সুন্নিরা চাইছে ক্ষমতা ও তার বৈধতা। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একটি পক্ষ বলছে, যদিও ইরাকের ফালুজা ও অন্য জায়গায় ভূমি হারিয়েছে আইএস। কিন্তু এরা এলাকাটি ফিরে পেতে ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত হয়ে যে আসবে না, তেমনটা নয়। ফিরতে পারে, পাশাপাশি এরা ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে সফট টার্গেটগুলোর ওপর হামলার কৌশল নিয়ে নিজেদের অস্তিত্বও জানান দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রর গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, ফালুজায় পরাজয়ের পর আইএস এখন চোরাগোপ্তা হামলার কৌশল নিতে পারে। সেখানকার সরকারকে অস্থিতিশীল করা কিংবা জনগণের সেবা ব্যাহত করার লক্ষ্য নিয়ে তারা হামলা চালাবে। আইএস নাশকতা চালিয়ে ইরাক সরকারকে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে ঠেলে দেবে। এর আগে তারা এমনটা অনেক জায়গায় করেছিল। গত ১০ জুন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছিলেন, আইএস হারছে, তাদের অর্থ শেষ হচ্ছে। অথচ তার দুই দিন পরই আইএস ভাবাদর্শে বিশ্বাসী ঘাতকের গুলিতে অরল্যান্ডো রক্তাক্ত হয়। অরল্যান্ডোতে ঘাতক হত্যা করে ৪৯ জনকে। ওবামার বিশেষ দূত ব্রেট ম্যাকগ্রুকের কথার ওপর ভিত্তি করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট সেদিন এসব কথা বলেছিলেন। ১০ জুন ব্রেট ম্যাকগ্রুক হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, ইরাকে আইএসের দখল করা অর্ধেক ভূমি উদ্ধার করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। এসব স্থানের তেল বিক্রির রাজস্ব থেকে আইএস অর্থ সংগ্রহ করত। সেটা এখন তারা হারাতে বসেছে। যুদ্ধ বিশ্লেষক সেথ জনস বলেন, ইরাকে ও সিরিয়ায় আইএস যে গেরিলা যুদ্ধের দিকে যাচ্ছে, সেই আলামত দিনদিন স্পষ্ট হচ্ছে। তিনি বলেন, আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, তারা হেরে যাচ্ছে ও ভূমি হারাচ্ছে। কিন্তু তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে যুদ্ধের। ব্রিটেনের রয়্যাল ইন্সটিটিউটের সন্ত্রাস বিশেষজ্ঞ হাসান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বলেছিল, আইএস ভূখ- হারাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু বিদেশে সন্ত্রাস ছড়ানোর কর্মকা- এদের বন্ধ হয়নি। আন্তর্জাতিক পরিম-লে সন্ত্রাসী হামলার আবেদনের প্রচার আইএস ঠিক মতোই চালিয়ে যাচ্ছে। যেমন, গত ১২ জুন অরল্যান্ডোয় হামলার ঘটনা। ইরাকে নুরি আল-মালিকি যখন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখন ইরাকের মানুষ আইএসকে মনে করতÑ তাদের স্বাধীনতা দানকারী। এখন সেটি আর তারা মনে করে না। রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।