বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
রাষ্ট্রীয় সড়ক পরিবহন সংস্থা-বিআরটিসি’র বরিশাল বাস ডিপোটি পুনরায় লাভের মুখ দেখতে শুরু করলেও সচল ও যাত্রী বান্ধব বাসের অভাবে কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছে না। অথচ দীর্ঘদিনের পুরনো ও যাত্রী সুবিধাহীন বাস দিয়েও এ ডিপোটি মাসে গড়ে দেড় কোটি টাকা আয় করছে। মাথা ভারী প্রশাসনের ফলে অতিরিক্ত প্রশাসনিক ব্যয় ও নদীবহুল দক্ষিণাঞ্চলে বিপুল সংখ্যক ফেরি আর সেতুর টোল প্রদান করেও বাস ডিপোটি এখন মাসে প্রায় ২০ লাখ টাকা মুনাফা করছে বলে জানা গেছে। অথচ প্রয়োজনীয় বাসের অভাবে বরিশালের সাথে পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক কাওড়াকান্দি ছাড়াও যাত্রী পরিবেহন করেত পারছে না সংস্থাটির বরিশাল বাস ডিপো। এখনো প্রায় দেড় দশকের পুরনো বাস জোড়াতালি দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে যাত্রী সেবা (?) অব্যাহত রেখেছে রাষ্ট্রীয় এ সড়ক পরিবহন সংস্থাটি।
অথচ সংস্থাটির যে কয়টি লাভজনক বাস ডিপো রয়েছে, তার অন্যতম দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র এ ডিপোটি। কিন্তু এখানে এখন মোট বাসের প্রায় অর্ধেকই অচল। এমনকি বর্ষার সময় দক্ষিণাঞ্চলে সরকারী এ প্রতিষ্ঠানটির অনেক বাসে ছাতা মাথায় দিয়ে ভ্রমনের অভিযোগও রয়েছে যাত্রীদের। তবে সম্প্রতি পুরনো কিছু বাস মেরামত করে কিছুটা যাত্রী বান্ধব করা হলেও তা ভ্রমনকারীদের সন্তুষ্ট করতে পারছে না।
বিআরটিসি’র বরিশাল বাস ডিপোতে বর্তমানে প্রায় ৮০টি বাসের মধ্যে যাত্রী পরিবহেন রয়েছে মাত্র ৪৩টি। অন্তত ২৫ টি গাড়ী আয়ুস্কাল হারিয়েছে। কিছু বাস নিলামে বিক্রিও হয়েছে। ভারী মেরামতে রয়েছে অন্তত ১০টি । এছাড়াও হালকা মেরামতেও কয়েকটি বাস রয়েছে বলে জানা গেছে। এসব বাদ দিয়ে ডিপোটির ৪৩টির মত বাস গড়ে প্রতিদিন রাস্তায় নামে। কিন্তু বরিশাল থেকে রাজধানীর সংক্ষিপ্ত সড়ক পথে পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক কাওড়াকান্দি রুটে গড়ে ১০টি এসি বাস প্রয়োজন হলেও আছে মাত্র ৭টি। সম্প্রতি সংস্থাটি ভারতীয় ‘লাইন অব ক্রেডিট’এর আওতায় প্রায় সাড়ে ৪শ এসি বাস আমদানী করলেও বরিশাল বাস ডিপোটির ভাগ্যে জুটেছে মাত্র ৭টি। আরো বিপুল সংখ্যক নন এসি বাস আমদানী হলেও সেখান থেকেও বরিশাল বাস ডিপোটির ভাগ্যে ১০টি বাসও জোটেনি। বছর পাঁচেক আগে ভারত থেকে আমদানী করা এসি বাস থেকে বরিশাল ডিপোতে ১০টি গাড়ী দেয়া হলেও তার কোনটির এসি এখন আর কাজ করছে না। নিম্নমানের ঐসব বাসের ইঞ্জিন থেকে শুরু করে মূল বডি পর্যন্ত এতটাই নি¤œনমানের যে পাঁচ বছরের মধ্যেই তা রাস্তায় চলার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এরপরেও জোড়াতালী দিয়েই নন এসি হিসেবে কিছু রুটে ঐসব বাস চলছে।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির এ বাস ডিপো সাগরপাড়ের কুয়াকাটা থেকে উত্তরের রংপুর আর উত্তর-পশ্চিমের চাপাইনবাবগঞ্জ পর্যন্ত যাত্রী সেবা প্রদান করছে। কিন্তু সংস্থাটির চলমান বাসগুলোর বেশীরভাগেই সাচ্ছন্দে ভ্রমনের সুযোগ নেই। ভালমানের বাসের অভাবে ইতিমধ্যে বরিশালÑখুলনা-যশোর-বেনাপোল,চরফ্যাশনÑভোলা-বরিশালÑযশোর এবং কুয়াকাটা-সাতক্ষীরা-মুন্সিগঞ্জ রুটে যাত্রী পরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে। এমনকি বরিশাল থেকে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা রুটে যে কয়েকটি বাস চলছে তার অবস্থাও অত্যন্ত খারাপ। এছাড়াও বরিশাল-খুলনা সহ দুর পাল্লার বিভিন্ন রুটে চলমান বাসগুলোর বেশীলভাগের অবস্থাই সব বর্ণনার বাইরে। অনেক বাস যান্ত্রিক গোলযোগে রাস্তায় দাড়িয়ে যাচ্ছে। ভালমানের বাসের অভাবে বরিশাল-পয়সারহাট-কোটালীপাড়া- গোপালগঞ্জ-খুলনা রুটে যাত্রী পরিবহন সম্প্রসারন সম্ভব হচ্ছেনা।
অভিযোগ রয়েছে, অনেক বাস ডিপোতে অপ্রয়োজনীয়ভাবে ভাল মানের এসি ও নন এসি বাস প্রদান করা হয়েছে। এ সুযোগে সংস্থাটির খুলনা, বগুড়া ও পাবনা ডিপো থেকে বেশ কিছু বাস ইতিমধ্যেই দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে চলাচল করছে। কিন্তু রহস্যজনকভাবে বরিশাল ডিপোতে প্রয়োজনের অর্ধেক বাসও দেয়া হয়নি।
অথচ বিআরটিসি’র বরিশাল বাস ডিপোতে বর্তমানে দৈনিক মজুরী ভিত্তিক কর্মচারী সহ এখনো দেড় শতাধিক কর্মকর্তাÑকর্মচারী রয়েছে। মাথাভারি এ প্রশাসনের পেছনে মাসে ব্যয় প্রায় ৩০ লাখ টাকা। উৎসবের মাসে এ ব্যয় বেড়ে দেড় গুন হয়ে যায়। ফলে ‘লাভের গুড় পিপড়ায় খায়’ অবস্থা বিআরটিসি’র বরিশাল বাস ডিপোর। এ ব্যপারে ডিপোটির ম্যানেজার-অপারেশন’র এর সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, ‘সংস্থার সব ডিপোর বিষয় সদর দপ্তর জানে। প্রতিমাসে রিভিউ মিটিং-এ সব বিষয় আলোচিত হয়। কতৃপক্ষ যখন যা ভাল মনে করেবেন তাই করবেন’ জানিয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।