Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ভুলে ভরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বই বিভ্রান্তিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০৩ এএম

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক প্রকাশিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০২০ সালের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বইগুলো ভুলে ভরা। বইয়ের কোথাও অধ্যায়ের অর্ধেক নেই আবার কোথাও এক পৃষ্ঠার সঙ্গে অপর পৃষ্ঠার মিল নেই। ভুলে ভরা এসব বই কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের পড়াতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছেন শিক্ষকগণ। অভিযোগ উঠেছে, সংশ্লিষ্টদের অবহেলার কারনে সরকারের মহৎ উদ্যোগ পন্ড হয়ে যেতে বসেছে।

জানা গেছে, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক প্রকাশিত এবং প্রমা প্রেস এন্ড পাবলিকেশন্স লি. এর মুদ্রণে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিশু শিক্ষার্থীদের বছরের শুরুতেই সারা দেশে বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হয়। সরকারের দেয়া এসব বই ভুলে ভরা থাকায় শিক্ষক শিক্ষার্থীগণ পড়েছেন বিপাকে। চতুর্থ শ্রেণির ‘আমার বাংলা’ বইয়ে ৭০ পৃষ্ঠার পর এক লাফে চলে গেছে ১০৩ পৃষ্ঠায়। সূচীপত্র অনুযায়ী ৭১ পৃষ্ঠায় ‘পাঠান মুলুকে’ অধ্যায় থেকে এক লাফে ১০১ পৃষ্ঠায় থাকা ‘শব্দের অর্থ জেনে নিই’ অধ্যায়ে চলে গেছে। সেখানে দেখা গেছে, ১০৩ পৃষ্ঠায় ‘অ, আ, ক,খ’ বাদ দিয়ে এক লাফে ‘ট’ থেকে শুরু করা হয়েছে। মাঝে থাকা ৩০ পৃষ্ঠায় ৮টি অধ্যায় নেই, অধ্যায়গুলো হচ্ছে, পাঠান মুলুকে, মা, ঘুরে আসি সোনারগাঁও, বীরপুরুষ, পাহাড়পুর, লিপির গল্প, খলিফা হযরত উমর (রা.) ও শব্দের অর্থ জেনে নেই এর আংশিক।

একইভাবে পঞ্চম শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বইয়ে ১০ পৃষ্ঠার পর এক লাফে ২৭ পৃষ্ঠায় চলে গেছে। মাঝে না থাকা ১৬ পৃষ্ঠায় সূচীপত্র অনুযায়ী সেখানে ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধ’ অধ্যায়ের আংশিক, ব্রিটিশ শাসন, বাংলাদেশের ঐতিহাসিক স্থান ও নিদর্শনের আংশিক অধ্যায় নেই। এছাড়া পঞ্চম শ্রেণির ‘প্রাথমিক গণিত’ বইয়ে দেখা গেছে, ৯২ পৃষ্ঠার পর এক লাফে ১০৯ পৃষ্ঠায় চলে গেছে। সূচীপত্র অনুযায়ী মাঝে থাকা ১৬ পৃষ্ঠায় শতকরা’র পুরা অধ্যায় এবং জ্যামিতি’র অধ্যায়ের কিছু অংশ নেই। এ অবস্থায় কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ২শ ৬৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীর মধ্যে ভুলে ভরা এসব বই বিতরণ হওয়ার পর শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিভ্রান্তি। শিক্ষার্থী অভিভাবক রহমত আলী, ফারুক হোসেন, মান্নান মিয়া, মোস্তফা কামালসহ অনেকে জানান, বছরের শুরুতেই কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা সরকারের দেয়া বিনামূল্যের বই পেয়ে আনন্দিত হওয়ার কথা কিন্তু সেখানে বইয়ে ভুল থাকা এবং এক পৃষ্ঠার সঙ্গে অপর পৃষ্ঠার মিল না থাকায় তাদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। তারা আরও বলেন, সরকারের এ মহৎ উদ্যোগ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের অবহেলার কারনে পন্ড হয়ে যেতে বসেছে।

উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বইয়ে অসঙ্গতির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ২০২০ সালের নতুন বইয়ে এ সমস্যা উপজেলার অনেক বিদ্যালয়ে হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে শিক্ষা অফিসকে অবগত করেছি।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোজম্মেল হক শাহ্ জানান, এ বিষয়ে শিক্ষকরা আমাকে মৌখিক ভাবে অবগত করলে আমি ওনাদেরকে লিখিত জানাতে বলেছি। লিখিত পেলে, আমি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে তা প্রেরণ করবো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রাথমিক


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ