Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যাংক লুটেরাদের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন জরুরি

ব্র্যাক সেন্টার ইন-এ অর্থনীতিবিদ সম্মেলনে ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

ব্যাংকের টাকা লুট ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুধু আইন প্রয়োগই যথেষ্ট নয়, সামাজিক আন্দোলনও গড়ে তুলতে হবে। সেইসঙ্গে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতের মাধ্যমে দক্ষ ও জবাবদিহীতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে না পারলে উন্নয়ন টেকসই ও বেগবান করা যাবে না। এ ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকনোমিক মডেলিংয়ের (সানেম) দু’দিনব্যাপী অর্থনীতিবিদ সম্মেলনে বক্তারা এসব মন্তব্য করেন। বক্তারা আরো বলেন, দেশে পাজলের মতো উন্নয়ন হচ্ছে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন হলেও প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন হচ্ছে না। গতকাল রোববার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইন-এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ।

সানেমের চেয়ারম্যান ড. বজলুল হক খন্দকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান ও ব্র্যাকের চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান প্রমূখ। মূল প্রবন্ধে ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের বিস্ময়কর অবস্থায় থাকলেও বৈশ্বিক অনেক সূচকে পিছিয়ে। এদেশের উন্নয়নে এখনো ভ‚মিকা রাখছে স্বল্প মজুরির কৃষি উৎপাদনশীল খাত। সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হলে শিক্ষা খাতের গুণগত পরিবর্তন আনতে হবে, উৎপাদন ও সেবা খাতে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার বাড়াতে হবে একই সঙ্গে সবচেয়ে বড় যে চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের সামনে তা হলো প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সুশাসনের ঘাটতি।

গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতের মাধ্যমে দক্ষ ও জবাবদিহীতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারলে এ উন্নয়ন আরো টেকসই ও বেগবান হবে। এ উত্তরণে সুশাসন ও উন্নয়নের মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে হবে, সুশাসন ও প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যোগসাজশ ঘটাতে হবে। প্রখ্যাত এই আর্থনীতিবিদ আরো বলেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে বড় বিনিয়োগ ছাড়া আর্থ-সামাজিক খাতে আর উন্নয়ন সম্ভব নয়। একক দল নির্ভর সরকার ব্যবস্থায় রাজস্ব আদায়ে ধীর গতি, প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন না থাকা উন্নয়নের পথে বড় অন্তরায়।

তিনি বলেন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা জনগণসহ দেশের মধ্যে শক্ত প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে। যা থেকে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে। সন্তোষজনক অর্থনৈতিক নীতি-কাঠামো গড়ে উঠছে না। বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়ন হচ্ছে না। বিশ্বব্যাংকের ডুয়িং বিজনেস রিপোর্ট, ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের রিপোর্টের দিকে তাকালে দেখা যায়, সুশাসন নেই, আর্থিক খাতের দুর্নীতি, খাদ্যদূষণ রোধ এগুলো নৈতিকতার বিষয়। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি বিভিন্ন স্বার্থগোষ্ঠীর নৈতিকতা বৃদ্ধি জরুরি। বর্তমানে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে গেলে উচ্চ প্রযুক্তি ও দক্ষতা উন্নয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তা না হলে দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়া সম্ভব হবে না।

ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের অনেক ক্ষেত্রেই উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু কিছু প্রশ্নও থেকে যাচ্ছে। সুশাসন না থাকলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে কিভাবে? আগে সুশাসন নিশ্চিত করা প্রয়োজন। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া তথা জনগণের সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার নিশ্চিত করা উচিত।

ড. সেলিম রায়হান বলেন, দেশে পাজলের মতো উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্ত প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন না হলেও অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু এই উন্নয়ন বেশি দিন টেকসই হবে না। আর্থিক খাতে সংস্কার, কর কাঠামো উন্নয়ন, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি জরুরি। দুর্নীতি প্রতিরোধেও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। দু’দিনে অন্তত ২০টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্যাংক

৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ