পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আপাতদৃষ্টিতে ভাল কিছু অবদান থাকলেও, সাম্রাজ্যবাদের শিকার রাষ্ট্রগুলোর পরিচালনা ও পরিষেবার ইতিহাস খুবই হতাশাজনক ছিল। যদিও সাম্রাজ্যবাদী উন্নত দেশগুলোর আবিস্কৃত প্রযুক্তি ও শিল্প দিয়ে সবাই কমবেশি উপকৃত হচ্ছেন, এদিক থেকে তারা প্রশংসার দাবিদার হলেও অধিকৃত এলাকাগুলোতে তাদের অত্যাচার ও লুটপাটের রেকর্ড অবশ্যই নিন্দনীয় এবং ক্ষমার অযোগ্য।
সাম্রাজ্যবাদের জঘন্যতা এবং কুখ্যাতির আদর্শ উদাহরণ খুঁজতে বেশি দূর যাওয়ার প্রয়োজন নেই, নাইজেরিয়ার ইতিহাসই তার জন্য যথেষ্ট। সাম্রাজ্যবাদের মতো উপনিবেশবাদেরও কোনও নির্দিষ্ট কোন সংজ্ঞা নেই। এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলো, যারা বেদনাদায়ক উপনিবেশবাদের শিকার হয়েছিল এবং পরে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল তাদের কাছে, কালোদের উপরে সাদাদের কর্তৃত্ব করাই হল উপনিবেশবাদ। ঘানার প্রথম প্রেসিডেন্ট কোয়েমে ক্রুমাহ তার লেখা ‘নিও-কলোনিয়ালিজম: দ্য লাস্ট স্টেজ অব ইমপেরিয়ালিজম’ বইতে ‘নব্য-উপনিবেশবাদ’কে সাম্রাজ্যবাদের এক নতুন এবং আরও কুখ্যাত রূপ হিসাবে চিত্রিত করেছিলেন। তিনি এটিকে আরও ব্যাপক, ক্ষতিকারক এবং বিপজ্জনক হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন।
উপনিবেশবাদীদের আগ্রাসনের মাত্রা ভালভাবে অনুধাবন করা যায় ১৯৬০ সালে, যখন জাতিসংঘ ১৭ টি নতুন দেশকে তাদের সদস্য হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছিল এবং সাধারণ পরিষদের সভায় ঔপনিবেশিক দেশগুলোকে স্বাধীনতা দেয়ার ঐতিহাসিক প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল। একই সাথে ‘দমন, পীড়ন, শোষনের মাধ্যমে মানুষের অধিকার হরণ’কে অপরাধ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। প্রস্তাবে উপনিবেশবাদী দেশগুলোর প্রতি কোনও শর্ত বা সুবিধা সংরক্ষণ ছাড়াই তাৎক্ষণিকভাবে সমস্ত ক্ষমতা ঔপনিবেশিক অঞ্চলগুলোর মানুষের হাতে ছেড়ে দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। এটি ছিল একটি শক্তিশালী সিদ্ধান্ত, এর মাধ্যমে শ্বেত আধিপত্যবাদীরা বুঝতে পেরেছিল, কালোদের উপরে তাদের শোষন চালানোর দিন শেষ হয়ে আসছে।
পরিশেষে, উপনিবেশবাদ কতটা ভয়ঙ্কর ছিল তা আফ্রিকানদের কঠিন অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা দেখলেই বোঝা যায়। এর অন্যতম উদাহারণ নাইজেরিয়ার অচলাবস্থা। যদি নাইজেরিয়া কখনই উপনিবেশে পরিণত না হতো, তা হলে বর্তমানে তাদেরকে এই পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না। মতে হতে পারে, উপনিবেশে পরিণত হবার আগে যে উপাদানগুলো দিয়ে নাইজেরিয়া রাষ্ট্র হিসাবে গড়ে উঠেছিল, তা অনুন্নত ছিল। কিন্তু এটি ভুল ধারণা। তৎকালীন মানদন্ড অনুসারে তারা যথেষ্ট উন্নত ও আর্থিকভাবে সচ্ছল ছিল বলেই সাম্রাজ্যবাদী দানব ব্রিটিশরা প্রলুব্ধ হয়ে তাদেরকে আক্রমণ করেছিল।
ইতিহাস থেকে জানা যায় নাইজেরিয়াসহ এশিয়া ও আফ্রিকার প্রায় সব দেশগুলোই উপনিবেশে পরিণত হওয়ার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছিল। যার ফলে সাম্রাজ্যবাদীরা তাদের উন্নয়নের ফল ভোগ করতে সেখানে উপনিবেশিকরণের সূচনা করেছিল। তাদের শোষনে উপনিবেশগুলোতে দুর্নীতি ও দারিদ্র্যের সূচনা হয়। তবে তারচেয়েও দুঃখের বিষয় হচ্ছে, সাম্রাজ্যবাদীদেরকে প্রতিহত করার যথেষ্ট ক্ষমতা উপনিবেশগুলোর ভেতরে থাকলেও শুধুমাত্র সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে তাদেরকে সেই অসহায় পরিণতি ভোগ করতে হয়েছিল। স্বাধীনতা অর্জনের পরেও এখনও নেতাদের কারণেই দেশগুলো অগ্রসর হতে পারছে না। যদি কখনও এই হঠকারীতা প্রতিহত করা যায়, তাহলে আফ্রিকার পরিস্থিতিতে যুগান্তকারী পরিবর্তন দেখা যাবে। (সমাপ্ত)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।